হযরত শায়খ আবুল হাসান আলী ইবনে ইব্রাহীম জাফরী (রঃ) – শেষ পর্ব
মুরীদ পরনে সুন্দর পোশাক খুলে ফেলে ছেঁড়া কাপড় পরে পীরের নির্দেশ পালনে চলে গেলেন। একবছর কষ্ট ক্লিষ্ট জীবন যাপন করে তিনি ফিরে এলেন। হযরত আবুল হাসান আলী (রঃ) তাঁকে বুকে ধরে আবেগে বলে উঠলেন, তুমি সত্যিই আমার সন্তান। মুর্শিদের মন খুশীতে ভরিয়ে দিয়ে আহমদ নসর গেলেন মক্কায় অন্যান্য পীরের প্রসন্নতা অর্জনে। তাঁরাও তাঁকে বিপুলভাবে সম্বর্ধনা জানালেন। তাঁরাও সন্দেহ তাঁকে আদর করে বললেন, আহমদ তুমি আমাদের খাঁটি সন্তান। অপ্রসন্নতা দূরীভূত হয়ে তাঁরা সবাই সানন্দে ঝলমল করে উঠলেন।
প্রতিদিন ফজল নামাজ আদায় করে তিনি প্রার্থনা করতেন, প্রভু, আমার হৃদয় আপনার জন্য সর্বক্ষণ সন্তুষ্টি, আপনিও আমার প্রতি সন্তুষ্ট হোন। হঠাৎ অদৃশ্য শব্দ নিনাদিত হয়, তুমি মিথ্যাবাদী। তুমি যদি আমার প্রতি সন্তুষ্ট থাকতে, তাহলে আমাকে ছেড়ে আমার সন্তুষ্টর খোঁজ করতে না।
তিনি বলতেন-
১. যদি বান্দাকে তার নিজের অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হত, তবে তার থেকে গুনাহ ও গোমরাহী ছাড়া অন্য কিছু বের হত না।
২. যখন আল্লাহর দয়া হয়, তখন তাঁর প্রেমও প্রকাশ পায়।
৩. যে তার প্রবৃত্তির চিনেছে, সে তা প্রতিপালককেও চিনেছে। আর এই ব্যক্তিই হল সুফী।
৪. আল্লাহর নাফরমানীর কলঙ্ক থেকে দেহ মনকে পবিত্র ও নির্বিঘ্ন রাখাই হল তাসাউফের অন্য নাম।
৫. অনেক অনেক সুফীকে যোহদের কথা জিজ্ঞেস করে এই উত্তর পেয়েছি যে, লোভনীয় বস্তুর প্রতি লোভ না করাই হল যোহদ।
৬. দুঃখ-কষ্ট ও বিচ্ছেদবেদনা তো শুধু তখনই, যখন অস্তিত্ব বজায় থাকেন। কিন্তু সূফীগণ যখন অস্তিত্বকে অনিস্তিত্বে পৌঁছে দেয়, অর্থাৎ ফানা ফিল্লাহ হয়ে যায়, তখন আর তাদের এসব বালাই থাকে না।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত শায়খ আবুল হাসান আলী ইবনে ইব্রাহীম জাফরী (রঃ) – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন