হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নবুয়াতী পরীক্ষা-পর্ব ৫

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নবুয়াতী পরীক্ষা-পর্ব ৪  

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এ কথা শুনে সেখানে আর বিলম্ব না করে চলে গেলেন।  বিশ্ব ভ্রাক্ষাণ্ডের রাজ অধিরাজ শাহান শাহ হযরত ছোলায়মান (আঃ) আজ অপমানিত , লাঞ্ছিত ও অবহেলিত অবস্থায় দ্বারে দ্বারে একমুঠো খাদ্যের কাঙ্গাল হয়ে ঘুরছেন।  একদিন যার হুকুম বরদারীর নিমিত্ত সম্মুখে করজোড়ে দাঁড়িয়ে থাকত।  যার দিগ্বীজয়ী সিংহাসন বাতাস বহন করে মুহুর্তকালে পৃথিবীর ভ্রমন করে আসত।  আজ তিনি আশ্রয়চ্যুত।  কোথাও থেকে সামান্য সহানুভূতি লাভের ভরসা আজ তাঁর নেই।

 দুনিয়ার কোথাও কেউ তাকে সামান্য সান্তনা দিতে এগিয়ে আসছে না।   এক জন বিশ্ববিজয়ীর জন্য এর চেয়ে অধিক গ্লানীকর শাস্তিকর আর কিছু হতে পারে বলে পৃথিবীর কোন ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় না।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) দিবা নিশি দু’ চক্ষের পানি ছেড়ে দিয়ে মহা প্রভুর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন।  আর অজানা  গন্তব্য পথে চলতে থাকেন।  এক সময় তিনি সমুদ্র তীরে এক জেলে পাড়ায় এসে উপস্থিত হন। 

সেখানে এসে দেখলেন একদল জেলে মাছ ধরছে।  তখন তিনি তাদের নিকট গিয়ে বললেন, ভাই আমাকে একটা কাজ দিবেন।  আমরা সারাদিন গায়ে খেটে আহার জোটাতে হিমসিম খাচ্ছি।  তাঁর উপর এসেছেন এক নবাব বাহাদুর চাকুরীর জন্য।  যাও মিয়া নিজের পথ ধর।  আর একজন জেলে বলল, তুমি আমাদের সাথে সারাদিন পরিশ্রম করে মাছ ধরতে পারবে? যদি পার তবে তোমাকে কি বেতন দিতে হবে? হযরত ছোলায়মান (আঃ) বললেন, আমি আপনাদের সাথে মাছ ধরতে পারব।  আর আমাকে কোন বেতন দিতে হবে না।  শুধু আমার খাবার ব্যবস্থাটা করে দিবেন।  তখন জেলে বলল, তোমার খাবার বাবদ দৈনিক দুইটি করে মাছ পাবে।  অন্য কিছু দিতে পারব না।

 হযরত ছোলায়মান (আঃ) চাকরির শর্ত মেনে মাছ ধরার কাজ আরম্ভ করে দিলন।  সন্ধ্যা বেলা জেলে তাকে দুটি মাছ দিয়ে দিল।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) মাছ দুইটি নিয়ে নিকটস্থ এক বাজারে বিক্রয় করে আটা কিনলেন।  অন্য মাছটি এক বাড়ীতে গিয়ে পাক করে নিয়ে আসলেন।  অতপর গাছতলায় বসে খেয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলেন।  সারা রাত  ছেজদায় পড়ে কান্নাকাটি করলেন।  মাত্র আধ ঘন্টা বিশ্রাম নিয়ে পুনরায় এবাদাত বন্দেগিতে মনোনিবেশ করেন।  এভাবে দৈনিক তিনি চাকরি স্থলে গিয়ে জীবিকা অর্জন করতেন। 

একদিন জেলেরা নিজেদের অজরে মাছ ধরতে আসল না।  সে দিন হযরত ছোলায়মান (আঃ) সমুদ্র তীরে শুয়ে ছিলেন।  তখন সমুদ্র থেকে এক বিশাল সাপ উঠে ফনা ধরে হযরত ছোলায়মান (আঃ) কে সূর্য তাপ থেকে ছায়া দান করছিল।  এবং মুখ দিয়ে বাতাস ছেড়ে তাঁর শরীর ঠান্ডা রাখছিল।  এক জেলে মহিলা এই দৃশ্য দেখে বাড়ীত গিয়ে সকলের নিকট ঘটনা বলল, তখন জেলেদের স্ত্রী-কন্যা-পুত্র সকলে এ দৃশ্য দেখার জন্য সমুদ্র তীরে জমায়েত হল।   তাঁরা দূরে বসে অনেক ক্ষন এ অবস্থা দেখে আস্তে  আস্তে নবীর কাছ গেল সর্পটি ধীরে ধীরে সমুদ্র নেমে গেল।  উপস্থিত সকলে তখন ভাবল এই লোকটি সাধারণ লোক নয়। 

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নবুয়াতী পরীক্ষা-পর্ব ৬

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।