হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নবুয়াতী পরীক্ষা-পর্ব ৪
হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নবুয়াতী পরীক্ষা-পর্ব ৩
তৃতীয়ত তিনি তাঁর হাতের আংটি কারো নিকট রেখে হাম্মাম খানায় যান না। আংটি নিজ তত্বাবাধানে গোপন স্থানে রেখে তিনি হাম্মামখানায় যান। চতুর্থ দুদিন যাবত তিনি তৌরাত কিতাব পাঠ করছেন না এবং সরীয়ত সম্বদ্ধে কোন তালিম দেন না। পঞ্চম তিনি নামজের ওয়াক্তে কোথায় যেন উধাও হয়ে যায়। মসজিদে তাকে দেখা যায় না। ষষ্ঠ তিনি বিচারের ক্ষেত্রে গতদিন জবরকারীর বিরুদ্ধে রায় প্রদান করেন। সপ্তম শাহেন শাহ কোন কাজ করার পূর্বে পরিষদের নিকট পরামর্শ তলব করেতেন।
কিন্তু গত দিন কা্রো পরামর্শ ছাড়া কাজের নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। নবম যে সমস্ত বে- আমল জীনেরা কোন দিন সিংহাসনের কাছে আসতে সাহস পায়নি তারা এখন বাদশার চারপাশে বেষ্টন করে আছে। দশম শাহান শাহ কোন দিন সিংহাসনে বসে হাসেন নি। কিন্তু কাল থেকে তিনি সিংহাসনে বসে অট্টহাসি দিতে ইতস্তত করেছেন না। বৃদ্ধ প্রহরীদ্বয়ের কথা শুনে কতক প্রহরী বলল, আমরা সিংহাসনের হুকুম বরদার।
ওখান থেকে যে হুকুম আসবে আমরা তা তালিম করব। যাচাই বাছাই করা আমাদের কাজ নয়। কতকে বলল, ঘটনাটি রহস্যময়। অতএব আমরা যাকে এখানে নিয়ে এসেছি তাকে সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের উচিৎ। কয়েকজনে হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নিকট কিছু তথ্য জানতে চাইল। উত্তরে হযরত ছোলায়মান (আঃ) বলল, সময় হলে তোমরা সব কিছু জানতে পারবে। এখন তোমরা আমাকে ছেড়ে নিজের কর্তব্যস্থলে চলে যাও। প্রহরীরা তখন যথেষ্ঠ চিন্তান্বিত হয়ে ফিরে গেল। বৃদ্ধ প্রহরীদ্বয় হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করল।
হযরত ছোলায়মান (আঃ) তখন একাকী বাইতুল মোকাদ্দাসের দিকে রওয়ানা করলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি তিন দিন তিন রাত অনাহারী ও অনিদ্রা অবস্থায় আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে কাঁদলেন। এত কাঁদা কাঁদলেন তার চার পাশে চোখের পানিতে সিক্ত গিয়েছিল। চুর্তুর্থ দিন তিনি সেজদা থেকে উঠে এক গ্রামে গিয়ে জনৈক বনি ইসরাইলের নিকট কিছু খাদ্য প্রার্থনা করলেন। বনি ইসরাইল বলল, ভাই! আমাদের যা খাবার ছিল তা একটু পূর্বে আমরা তা একজন ভিক্ষুক কে দিয়ে দিয়েছি। অতএব আপনি অন্যত্র যান। তিনি তখন আরেক দরজায় গিয়ে খাদ্যের জন্য আবেদন করলেন।
ঘোরওয়ালা বলল, আজকে আমরা অভুক্ত রয়েছি। আপনি অন্যত্র চেষ্টা করুন। তৃতীয় বারে তিনি আর এক মহল্লায় গিয়ে খাদ্য চাইলেন। তারা বলল, আমরা রাহাজানি করে অনেক খাদ্য খাদক ধন-দৌলত লাভ করেছি। তুমি একটু অপেক্ষা কর আমরা এখনই তোমাকে কিছু খাদ্য দিচ্ছি। পরে কিছু টাকা পয়সা দিব। যাতে আল্লাহ আমাদের উপর সন্তুষ্ট থাকেন এবং আমাদের উপর বিপদাপদ না আসে।