রাজা রায়হানের স্বপ্নের তাবীর-১ম অংশ

মিশরের রাজা রায়হান একদিন স্বপ্নে দেখলেন, সাতটি মোটা তাজা গাভীকে সাতটি কৃশ ও দুর্বল গাভী খেয়ে ফেলছে। তিনি আরো দেখলেন সাতটি মোটা সতেজ গমের শীষকে সাতটি সুকনা ও চিকন শীষে খেয়ে ফেলছে। স্বপ্ন দেখে রাজা ঘুম থেকে জেগে গেলেন। তাঁর মনে একটা অশুভ আতঙ্ক দেখা দিল।  তিনি এ ধরনের ভীতিজনক স্বপ্নের কোন দিক নির্দেশনা খুঁজে পেলেন না। তাই বাকি রাতে তিনি আর ঘুমলেন না।

 ভোর বেলা তিনি আতঙ্কিত মন নিয়ে মন্ত্রি পরিষদের মিটিং ডাকলেন। মন্ত্রীগণ রাজার জরুরি নির্দেশ পেয়ে অল্প সময়ের মধ্যে সকলে রাজদরবারে এসে উপস্থিত হলেন। রাজা তখন সকলের নিকট নিজ স্বপ্নের কথা বললেন। মন্ত্রীগণ রাজার মুখে এ ভীতিজনক স্বপ্নের কথা শুনে বিচলিত হলেন। তখন তাঁর দেশের প্রখ্যাত জ্যোতিষী, পাদ্রি, মৌলভী ও ঋষিগণকে আহবান করলেন। পড়ে দিন নির্ধারিত সময়ে সকলে সমবেত হলেন। তখন রাজা তাদের নিকট নিজ স্বপ্নের কথা আলোচনা করলেন এবং বললেন আপনারা এ স্বপ্নের সঠিক তাবির বলে দিন। উপস্থিত সকলে রাজার এ আশ্চর্যজনক স্বপ্ন শুনে বললেন, হুজুর এ ধরনের স্বপ্নের তাবীর আমরা বলতে পারব না। কারণ এ ধরনের স্বপ্নের বর্ণনা আমাদের কোন পুঁথি বা ধর্মগ্রন্থে নেই। অতএব এ বিষয় আমাদের ক্ষমা করুন। রাজা অতিথিবৃন্দের কথা শুনে খুবই বিহ্বল হয়ে পড়লেন।

এ সময় রাজার শরাব পরিবেশন কারী ভৃত্যটি কাছে ছিল। সে রাজার প্রতি কুর্নিশ করে বলল, “হুজুর! আপনার জেলখানার ভিতর হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর একটি ছেলে আছে। সে অত্যন্ত সচ্চরিত্রবান, ধর্মপরায়ণ ও মিষ্টিভাষী। তিনি স্বপ্নের তাবীর সম্পর্কে অসাধারণ জ্ঞান রাখেন। আমি ও আপনার সাজাপ্রাপ্ত বাবুর্চি জেলখানায় অবস্থান কালে দু’জনে দু’টি স্বপ্ন দেখি। অতপর তাবীরের জন্য আমরা তাঁর নিকট গমন করি। তিনি একদিন পরে আমাদের যে তাবীর বলে দিলেন, সঙ্গে সঙ্গে সে তাবীর বাস্তবে প্রতিফলিত হল। রাজা ভৃত্যকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি স্বপ্ন দেখেছিলে এবং ছেলে টি উহার কি তাবীর করেছে? ভৃত্য বলল, আমি দেখেছিলাম, আঙুর ফল নিংড়িয়ে রস বের করে উহা পেয়ালা ভর্তি করছি এবং বাবুর্চি দেখেছিল সে তাঁর মাথার উপর এক ঝুড়ি রুটি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁর মাথার উপরে রুটি গুলো পাখি ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে। এ স্বপ্নের তাবীর তিনি বলেছিলেন, তোমরা রাজাকে বিষ প্রয়োগের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অপরাধে যে মামলায় সম্মুখীন হয়েছ তাতে শরাব পরিবেশনকারী বে-কসুর খালাস পাবে এবং তাঁর পদোন্নতি হবে। আর বাবুর্চির অপরাধ সেখানে প্রমাণিত হবে, তাকে শূলে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হবে এবং তাঁর মাথার মগজগুলো পাখিরা ঠোকরে খাবে।”

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

রাজা রায়হানের স্বপ্নের তাবীর-দ্বিতীয় অংশ   পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।