মূসা (আঃ)-এর জন্ম – প্রথম পর্ব
একদিন রাতে ফেরাউন গভীর ঘুমে অচেতন অবস্থায় একটি স্বপ্ন দেখল যে, শামদেশের দিক হতে একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা এসে মিসর দেশে প্রবেশ করল। এবং মিসরের কিবতী সম্প্রদায়ের সমস্ত ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভষ্ম করে দিয়ে গেল।
আবার অনেক বর্ণনায় আছে যে, ফেরাউন স্বপ্ন দেখল যে, দুটি বৃক্ষ উর্ধ্ব দিকে বাড়তে বাড়তে এত বেশি বেড়েছে যার তুলনায় দুনিয়ার উঁচু উঁচু সব বস্তু নীচু দেখা যাচ্ছে। ফেরাউন এ বিস্ময়কর স্বপ্নটি দেখে খুবই চিন্তানিত হয়ে পড়ল। এর তাবীর কি হতে পারে? দেশের বড় বড় নজ্জুম এবং স্বপ্ন বিশারদদের তলব করা হল।
তারা চিন্তা ভাবনা ও গবেষণা করে বলল যে, এ স্বপ্নের তাবীর হল, অচিরেই বনি ইসরাঈল বংশে এমন একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করবে যে, তার দ্বারা ফেরাউন সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়ে যাবে।
সমগ্র মিসরবাসী তার অনুগত হয়ে যাবে। ফলে রাজ্যের সমস্ত ধন সম্পদ এবং নিয়ামতাদি তার হস্তগত হবে। এর চেয়ে ফেরাউনের জন্য বিপজ্জনক অবস্থা আর কি হতে পারে? তাই ফেরাউন অত্যন্ত বিচলিত হয়ে স্বপ্ন বিশারদদের নিকট জানতে চাইল যে, ছেলেটি কতদিনের মধ্যে জন্ম লাভ করবে।
তারা বলল, তা সম্পূর্ণ সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে যতদূর মনে হয় আজ হতে তিনদিনের মধ্যে এ সন্তান মাতৃগর্ভে স্থান লাভ করবে। একথা শুনে ফেরাউন তৎক্ষণাৎ রাজ্যময় প্রচার করে দিল যে, আজ হতে তিনদিন কোন বনি ইসরাঈল স্বামী-স্ত্রী যেন একত্রে বসবাস না করে।
যে এ আদেশ অমান্য করবে তাকে হত্যা করা হবে। ফেরাউন এ ঘোষণা প্রচারের নির্দেশ দিয়েই ক্ষান্ত রইল না; বরং সে তার সৈন্যবাহিনীর লোকদের প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি পাহারার জন্য বসিয়ে দিল যাতে কোথাও এ আদেশ পালনে গাফলতি হতে না পারে।
কিন্তু আল্লাহ্ পাক যা লিখে রেখেছেন, তার বিপরীত হবে কি করে। তার লিখন যে অবধারিত ও অখণ্ডনীয়।