মূসা (আঃ)-এর জন্ম – দ্বিতীয় পর্ব
মূসা (আঃ)-এর জন্ম – প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ফেরাউনের এত সতর্কতা সামধানতা ও কঠোর পাহারার ব্যবস্থা সত্ত্বেও বনী ইসরাইল সম্প্রদায়ের সন্তান হজরত মূসা (আঃ) যথাসময়ই তার মাতার গর্ভে স্থান লাভ করলেন।
বনী ইসরাঈল বংশে ইমরান নামক একব্যক্তি ফেরাঊনের অত্যন্ত বিশ্বস্ত খাদেম ছিল। তার স্ত্রীর নাম ছিল খাতুন। এ খাতুনের গর্ভে হারুন নামক একটি পুত্র এবং মরিয়াম নাম্মী একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ইমরান পত্নী খাতুনও ছিল এক বনী ইসরাইল মহিলা।
ইমরান ফেরাউনের দেহরক্ষী পদে চাকুরী করত। সে সারারাত ফেরাউনের শয়ন কক্ষের দরজায় জাগ্রত থেকে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করত। তার স্ত্রী বাড়িতে একাকিনী থাকত।
এজন্যই ফেরাউনের সৈনিক প্রহরিরা ইমরানের বাড়িতে পাহারা দিতে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করে নি। ইমরান ইতোপূর্বে বেশ কিছুদিন যাবত তার স্ত্রীর শয্যা সঙ্গী হয়নি। কাজেই ইমরানের স্ত্রীর মনে স্বামী সহবাসের ইচ্ছা প্রবল ছিল।
এদিন তা আরো প্রবল হল। সে একাকিনী শয্যায় শুয়ে কামোত্তজনায় ছটফট করছিল। এদিকে কিছুদিন পর্যন্ত ইমরানও স্ত্রী সহবাসে বিরত থাকায় সেদিন তার মনে স্ত্রীর সাথে মিলনের আকাঙ্ক্ষা তীব্রতর হল।
কিন্তু সে কি করবে? তার বাড়ি খুব নিকটবর্তী হলেও তার বাড়িতে যাওয়ার কোন উপায় ছিল না।
ওদিকে তার স্ত্রী কামোত্তজনায় টিকতে না পেরে গভীর রাতে শয্যা ত্যাগ করে সন্তর্পনে ফেরাউনের বাড়িতে গিয়ে তার শয্যাকক্ষের নিকট উপস্থিত হল। ইমরান এ সময় তার স্ত্রীকে নিকট পেয়ে খুবই আনন্দিত হল। ইমরান এ সময় তার স্ত্রীকে নিকট পেয়ে খুবই আনন্দিত হল।
ইমরান দেখল ফেরাউন গভীর ঘুমে অচেতন। এসুযোগে সে তার স্ত্রীকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি কক্ষে গমন করে সহবাস করল। অতঃপর ইমরানের স্ত্রী সাবধানে স্বগৃহে প্রত্যাবর্তন করল, আর ইমরান পুনরায় তার প্রহরা, কাজে নিয়োজিত হল।
তাদের স্বামী-স্ত্রীর এ মিলনেই আল্লাহর প্রিয়নবী হজরত মূসা (আঃ) তাঁর জননীর গর্ভে আশ্রয় লাভ করলেন।
তিনদিন অতিবাহিত হবার পর ফেরাউন আবার তার জ্যোতিসীদের ডেকে পুনরায় গননা করে দেখতে বলল। তারা গণনা করে দেখে বলল, জাহাপানা! আপনার সে মহাদুশমন শিশু তার মাতার গর্ভে স্থানলাভ করেছে।
এ কথা শুনে ফেরাঊনের অন্তর কেঁপে উঠল বলে কি এরা? এত কঠোর সাবধানতা সত্ত্বেও এ হল কি করে? সে ক্রোধে জ্বলতে লাগল এবং ভীষণ ক্রুদ্ধকন্ঠে বলল, এটা নিশ্চয়ই পাহারাদারদের উদাসীনতা ও কর্তব্যে অবহেলা ছাড়া আর কিছু নয়।