হযরত ইলইয়াস (আঃ) পর্ব ৩
সুতরাং উভয় পক্ষের কুরবানির দিনক্ষণ ধার্য হয়। নিদির্ষ্ট দিনে বা’ল দেবতার উপাসকরা করমল পাহাড়ের পাদদেশে সমবেত হয়ে কুরবানী সম্পন্ন করে। সকাল বেলা কুরবানী সম্পন্ন করে দ্বিপ্রহর পর্যন্ত তারা কুরবানী কবুলের জন্য বা’ল দেবমূর্তি সমীপে অনুনয় বিনয় করতে থাকে, কিন্তু তাদের সব আবেদন নিবেদনই নিষ্ফল হয়।
কুরবানী কবুল হওয়ার কোন লক্ষণই দেখা গেল না। দুপুরের পর হযরত ইলইয়াস (আঃ) কুরবানি করেন। অনতিবিলম্বে আকাশ থেকে আগুন এসে তাঁর কুরাবানী জ্বালিয়ে দেয়।
হযরত ইলইয়াস (আঃ)-এর কুরবানী কবুল হয়েছে- এ দৃশ্য দেখে বহু লোক তৎক্ষণাৎ সিজদায় পড়ে যায়। এভাবে তাদের কাছে সত্য প্রকাশিত হয়, কিন্তু বা’লের উপাসকরা এ চাক্ষুস প্রমাণ দেখেও সত্যের প্রতি স্বীকৃত দিল না। চাক্ষুস প্রমাণের পরও তারা সত্য মেনে নিতে ব্যর্থ হয়। এমন সুস্পষ্ট প্রমাণের পরও যখন তাদের অনিহা পরিলক্ষিত হল তখন হযরত ইলইয়াস (আঃ) ভাবলেন, দিবাকরের মত সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়া সত্ত্বেও যাদের সত্য দ্বীন গ্রহণে এরূপ অনিহা তারা সত্য গ্রহণ করবে বলে আশা করা যায় না।
ফলে তিনি তাদের জন্য বদদোয়া করলেন তার বদ দোয়ায় কায়শু উপত্যকায় মূর্তিপূজারীদের সবাই নিহত হয়। এরপর মুষলধারে বৃষ্টি অবতীর্ণ হয়ে গোটা এলাকা ধুয়ে মুছে একেবারে পরিষ্কার হয়ে যায়। চাক্ষুস এ ঘটনা দেখেই আখিয়াব দম্পতি চক্ষুর উন্মেষ ঘটেনি। আখিয়াবের স্ত্রী ইযাবেলা পুনরায় হযরত ইলইয়াস (আঃ)-কে হত্যার গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
তিনি তার এ ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে পুনরায় নিরাপদ আশ্রয় আত্মগোপন করেন। কিছু দিন সেখানে অবস্থানের পর বনী ইসরাইলের অপর অংশ ইয়াহুদার আবাসভূমে চলে যান। সেখানে
তিনি আল্লাহর একত্ববাদ প্রচার শুরু করেন। বা’ল দেব প্রতিমার উপাসনার এ সংক্রামক ব্যধি বনী ইসরাইলের এ অংশের মাঝেও বিস্তার লাভ করেছিল। এমনকি ইয়াহুদার শাসকও বা’ল দেবতার উপাসনায় জড়িয়ে পড়ে। ইলইয়াস (আঃ)-তাঁকে বা’ল দেব প্রতিমার উপাসনা পরিত্যাগ করে এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপনের জন্য অনেক বুঝালেন, কিন্তু সবই নিষ্ফল। সে কিছুতেই বা’ল দেবতার উপাসনা ত্যাগ করতে সম্মত নয়।