হযরত ইলইয়াস (আঃ) পর্ব ১

অধিকাংশ ঐতিহাসিকদের মতে, হযরত ইলইয়াস (আঃ) ছিলেন হযরত হারূন (আঃ)-এর অধস্ত বংশধর। তার বংশ তালিকা এরূপ- ইলইয়াস তার পিতা ইয়াসীন তাঁর পিতা ফাহহায তাঁর পিতা ইয়াযার তাঁর পিতা হারূন। কারো কারো মতে, ইলইয়াস তাঁর পিতা ইয়াসীন তাঁর পিতা ইঞ্জিল গ্রন্থে ইলইয়া উল্লেখ করা হয়েছে। সমকালীন বনী ইসরাইলের মাঝে তিনি ইলইয়া নামেই প্রসিদ্ধ ছিলেন।

তাফসীরবিশারদদের এক দলের অভিমত হল ইলইয়াস ও ইদ্রিস একই নবীর দু নাম। তাঁদের এ অভিমত দুটি কারণে সমর্থনযোগ্য নয়। (১) তারা যেসব বর্ণনার উপর ভিত্তি করে একই নবীর নাম ইলইয়াস ও ইদ্রিস বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাদিস বিশারদরা সেসব বর্ণনা অনির্ভরযোগ্য বলে মত ব্যক্ত করেছেন। অতএব ইলইয়াস ও ইদ্রিস যে পৃথক পৃথক নবীর নাম তা সুস্পষ্ট ভাবে প্রতিভাত হয়েছে।

এছাড়া ইতিহাস বিশারদদের বর্ণিত বংশসূত্রেও উভয়ের মাঝে কয়েকশ বছরের ব্যবধান দেখা যায়। ইতিহাসবেত্তাদের বর্ণিত বংশসূত্রের ভিত্তিতে এও দেখা যায় যে, হযরত ইদ্রিস (আঃ) নবুয়ত প্রাপ্ত হয়েছিলেন হযরত নূহ (আঃ) ও হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর মধ্যবর্তী সময়ে। আর হযরত ইলইয়াস (আঃ) নবী হিসেবে অবিহিত হন মূসা (আঃ)-এর ইন্তিকাল পরবর্তী দুজন নবীর পর। বনী ইসরাইলের মাঝে বনী ইসরাইলী নবী হযরত ইয়াসা (আঃ) ছিলেন তাঁর চাচাত ভাই।

বর্ণিত আছে হযরত হিযকীল (আঃ)-এর ইন্তিকালের সময় পর্যন্ত বনী ইসরাইলের মাঝে আর কোন নবীর আবির্ভাব ঘটেনি। বনী ইসরাইলের প্রতিটি গোত্র এ সময় পরস্পর থেকে আলাদা হয়ে সিরিয়া এবং মিশরসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বসবাস করতে থাকে।তাদের মাঝে যে সকল আলেম বর্তমান ছিলেন তাঁরা লোকদেরকে ওয়ায নসীহত শোনাতেন এবং মূসা (আঃ)-এর দ্বীনের প্রতি আহবান করতেন।

এতে খুব একটা ফল পাওয়া যায়নি। ক্রমে ক্রমে তারাও মূর্তি পূজায় জড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া যেনা ব্যভিচারসহ নানাবিধ অন্যায় অশ্লীল কাজ তাদের নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। স্বল্প সংখ্যক লোকই মাত্র হযরত মূসা (আঃ)-এর দ্বীনে স্থির ছিলেন।

ঐতিহাসিকদের বর্ণনার মতে হযরত ইলইয়াস (আঃ) বর্তমান জর্দানের জালআদ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। বাইবেলের বর্ণনায় জানা যায়, সেকালে জালআদ এলাকার শাসকের নাম ছিল আখিয়াব। আরবী ভাষায় রচিত ইতিহাস এবং তাফসীর গ্রন্থাদিত আজব বা আখর বলে অবিহিত করা হয়েছে। তার স্ত্রী নাম ইযাবেলা। আখিয়াবের স্ত্রী ইযাবেলা বা’ল নামক এক দেবমূর্তির উপাসনা করত। আখিয়াব দেবতার নামে একটি শহরের পত্তন করেছিল, এ শহরেই পরবর্তীকালে বা’লাবাক্বা নামে প্রসিদ্ধ লাভ করে। আখিয়াব বা’ল শহরে রক্ষিত দেবমূর্তির উপাসনা করতে শহরবাসীকে উৎসাহিত করেছিল। তাদের ধারণা মতে বা’ল দেবমূর্তিটি পুরুষ ছিল।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।