কারুনের ঘটনা
কারূন শব্দটি ইবরানী শব্দ। কারূন যে হযরত মূসা (আঃ)-এর বংশের লোক তাতে সকলেই একমত। তবে হযরত মূসা (আঃ)-এর সাথে তার সম্পর্ক কি সে সম্পর্কে ওলামাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। অধিকাংশের মত হল সে হযরত মূসা (আঃ)-এর চাচত ভাই। হযরত মূসা (আঃ)-এর দাদা আর তার দাদা এক ব্যক্তি। তাদের দাদার নাম কাহাতা। কাহাতের দু পুত্র। এক পুত্র ইয়াসহুর। দ্বিতীয় পুত্র ইমরান। ইয়াসহুরের পুত্রের নাম কারূন। আর ইমরানের পুত্রের নাম মূসা। মুহাম্মাদ বিন ইসহাকের বর্ণনায় রয়েছে যে, সে তৌরাতের হাফেজ ছিল। অন্যান্য বনী ইসরাইলের চেয়ে তার তৌরাত অধিক মুখস্থ ছিল। তার কণ্ঠ ছিল সুমধুর। তৌরাত পাঠে তার আওয়াজ ছিল শ্রুতিমধুর তাই তাকে মুনাওয়ার বলা হত। কিন্তু সে ছিল সামেরীর ন্যায় মুনাফিক।
মিশরে অবস্থানকালীন সময় কারূন ফেরাউনের রাজ দরবারে পদস্থ কর্মচারী ছিল। তখন সে বিরাট ধন সম্পদের মালিক হয়েছিল। হযরত খাইসামা হতে বর্ণিত আছে, তার এত ধন সম্পদ ছিল যে, তার ধনসম্পদ যে সব গৃহে এবং গুদামে রাখা হত। সব গৃহে ও গুদামে যে সব তালা লাগান হত এ সব তালার চাবি এক্ত্র করলে এত ভারী হত যে, তা ষাটটি খচ্চরের বোঝা হত। চাবিগুলো চামড়ার তৈরি ছিল। প্রতিটি চাবি ছিল এক আঙ্গুল পরিমাণ লম্বা।
হযরত মূসা (আঃ) ছিলেন সকল বনী ইসরাইলীর নেতা। আর তাঁর ভ্রাতা হযরত হারূন (আঃ) ছিলেন তাঁর ওযীর সমতুল্য। এতদ্দর্শনে কারূন প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে উঠল। তাঁর দাবী হল হযরত হারূন (আঃ) যেরূপ হযরত মূসা (আঃ)-এর বংশের লোক এবং ভাই সেও তো তাহাঁর বংশের লোক এবং ভাই সুতরাং তাদের ন্যায় ইসরাইলীর একাংশের উপর তারও নেতৃত্বের অধিকার রয়েছে। কারূন তার এহেন লোভাতুর অভিমত সম্পর্কে হযরত মূসা (আঃ)-কে অবহিত করার পর তিনি জবাব দিলেন, এ ব্যাপারে তো আমার কোনই হাত নেই। এটা সম্পূর্ণ আল্লাহ পাকের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। তাঁর পক্ষ হতে যা কিছু হচ্ছে আমরা তা মেনে নিয়েছি। এ সব বিষয়ে তিনিই সর্বসের্বা। তিনি যাকে ইচ্ছা নেতৃত্ব দান করেন আবার যাকে ইচ্ছা নেতৃত্ব হতে দূরে রাখেন। যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করে যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন। হযরত মূসা (আঃ)-এর জবাবে কারূন সন্তুষ্ট হতে পারেনি। বরং হযরত মূসা (আঃ)-এর প্রতি আরো ঈর্ষা ও হিংসার মনোভাব পোষণ করতে থাকে। কারূন অত্যাচারী ছিল। ফেরাউনের কর্মচারী থাকা অবস্থায় সে বনী ইসরাইলের উপর অত্যাচার করে আসছিল। হযরত সাঈদ বিন মুসাইয়াব (রঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, কারূন ছিল খুবই বিত্তশালী। ফেরাউন তাকে বনী ইসরাইলদের উপর জুলুম করত।
একবার হযরত মূসা (আঃ) কারূনকে বলেন, হে কারূন আল্লাহ তোমাকে অগণিত ধনসম্পদের অধিকারী করেছেন। তোমাকে আল্লাহই যথেষ্ট ইজ্জত ও সম্মান দান করেছেন। সুতরাং তোমার এর হক আদায় করা কর্তব্য। তুমি এর হক আদায় কর। ফকীর মিসকিন ও দরিদ্রদেরকে তোমার সম্পদের যাকাত প্রদান কর এবং দান খয়রাত কর। আল্লাহকে ভুলে গিয়ে এবং নীতির পরিপন্থী কাজ করা চারিত্রিক এবং
আভিজাত্য উভয় দিক থেকে আল্লাহ তায়ালার নাশুকরিয়া করা। আল্লাহ তায়ালা তোমাকে যে ইজ্জত দিয়েছেন। তাঁর হক তখনই আদায় হবে যখন তুমি গরীব মিসকীন ও দরিদ্র নিঃ সম্বলদেরকে সম্মান করবে। তাদের অবজ্ঞা করবে না। অথচ তুমি তাদেরকে অবজ্ঞা করে চলেছ। তাদের অবস্থার প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে তাদেরকে অবজ্ঞা করে চলেছ। তা কখনও আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতের শুকরিয়া হতে পারে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে-
وَابْتَغِ فِيمَا آتَاكَ اللَّهُ الدَّارَ الْآخِرَةَ ۖ وَلَا تَنسَ نَصِيبَكَ مِنَ الدُّنْيَا ۖ وَأَحْسِن كَمَا أَحْسَنَ اللَّهُ إِلَيْكَ ۖ وَلَا تَبْغِ الْفَسَادَ فِي الْأَرْضِ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ
অর্থঃ যখন কারূনের গোত্রের লোকেরা উপদেশস্বরূপ তাকে বলল, তুমি বিত্তশালী বলে উল্লাসিত হয়ে পড়ো না। আর আল্লাহ তায়ালা উল্লাসিত ব্যক্তিদেরকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ তায়ালা তোমাকে যা দিয়েছেন তা দিয়ে পরকাল অন্বেষণ কর। দুনিয়ার এ অংশ যা পরকালে কাজে আসবে তা ভুলে যেও না। আল্লাহ তোমার প্রতি যেমন এহসান করেছেন তুমিও মানুষের প্রতি তদ্রূপ এহসান কর। আল্লাহর নাফরমানী করে দুনিয়াতে ফিতনা সৃষ্টির করো না। মনে রেখ নিশ্চয়ই আল্লাহ ফিতনা সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না। (সূরা- কাসাসঃ আয়াত-৭৬-৭৭)
তাদের নসীহত শুনে কারূনের তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা তো দূরের কথা বরং তাদেরকে এমন জবাব শুনিয়ে দিল যার মাধ্যমে তার অহংকার ও ঔদ্ধত্য আরও পরিষ্কারভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ল। সে বলল, আমি বলল, আমি সম্পদ উপজর্নের বিভিন্ন কৌশল জানি। এসব কৌশলের অবলম্বন দিয়েই আমি এ সমস্ত ধন-সম্পদ জমা করেছি। সুতরাং এসব ধন-সম্পদের বিষয়ে আমার গৌরব অনর্থক নয়। যা আমি আপন শ্রম ও কৌশল দ্বারা অর্জন করেছি সে সম্পর্কে এরূপ বলা যে, এর দ্বারা আমার প্রতি ইহসান করা হয়েছে এ ঠিক নয়। আমি স্বীয় পরিশ্রম দিয়ে অর্জন করেছি। এর সম্পূর্ণ স্বত্ব আমার কাজেই এতে অন্যের হক কেমন করে থাকতে পারে?
কিন্তু মূসা (আঃ) কারূনের পিছু ছাড়লেন না। কেননা, দ্বীনের দিকে মানুষকে আহবান করা হযরত মূসা (আঃ)-এর দায়িত্ব। অহংকার ও তাকাব্বীর ছেড়ে আল্লাহ পাকের অধীনে নিজেকে পরিচালিত করার জন্য পুনঃপুনঃ আহবান করতে থাকেন। কারূন যখন দেখল যে, হযরত মূসা (আঃ) তার পিছু ছাড়ছেন না। তখন সে হযরত মূসা (আঃ)-কে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য এক পরিকল্পনা করল। সে স্বীয় ধন-সম্পত্তির প্রভাব দেখানোর জন্য একদল লোককে হিরা মনি মানিক্য খচিত পোশাক পরিয়ে তার সেবক হিসেবে সাথে নিয়ে বের হয়ে আসল। এ সময় হযরত মূসা (আঃ)-বনী ইসরাইলীদের এক সমাবেশের নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। তার চলার ভঙ্গি দিয়ে হযরত মূসা (আঃ)-কে বুঝাতে চাচ্ছে যে, যদি আপনার আহবানের ধারা এভাবে চালু থাকে তবে আপনিও জেনে রাখুন যে, আপনার ন্যায় একদল মানুষ আমাকেও অনুসরণ করছে। তাই আমি তাদের নেতা অধিকন্তু আমি অগণিত হীরা মনি মানিক্যের অধিকারী সুতরাং আমি আপনার চেয়ে উত্তম। আপনি যা করেন তা করা আমার জন্য জরুরী নয়।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-
أَوَلَمْ يَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ قَدْ أَهْلَكَ مِن قَبْلِهِ مِنَ الْقُرُونِ مَنْ هُوَ أَشَدُّ مِنْهُ قُوَّةً وَأَكْثَرُ جَمْعًا
অর্থঃ তবে কি কারূন এ জানে না যে আল্লাহ পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ে হতে এমন এমন লোকদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন যারা সম্পদের শক্তির দিক দিয়ে তার চেয়ে অনেক অগ্রগামী ছিল এবং তাদের লোকজন ও অধিক ছিল। (কাসাস)
তাদের শাস্তি নিছক দুনিয়াতেই ধ্বংস করে শেষ হয়নি বরং কিয়ামতের দিনও তাদেরকে আযাব দেয়া হবে। কারূন যখন জাকজমকপূর্ণ পোশাকে মণিমুক্তা হীরা জহরত পরিবেষ্টিত হয়ে বের হয়েছিল তখন বনী ইসরাইলের কিছু লোক যারা দুনিয়ার চাকচিক্য ও জাকজমকপূর্ণ প্রধান্য দিত তারা কারূনের ধন-সম্পদের দেখে নিজেদের জন্য আফসোস করতে লাগল। তারা يَا لَيْتَ لَنَا مِثْلَ مَا أُوتِيَ قَارُونُ
হায় আফসোস! আমাদেরও যদি এত ধন-সম্পদ থাকত যত কারূনকে দেয়া হয়েছে। (কাসাস)
তারা বলতে লাগল কারূন বড়ই ভাগ্যবান। তাদের মধ্যে জ্ঞানী ছিল তারা তাদের আফসোস শুনে আশ্চর্য বোধ করে বলল যে-
وَيْلَكُمْ ثَوَابُ اللَّهِ خَيْرٌ لِّمَنْ آمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا وَلَا يُلَقَّاهَا إِلَّا الصَّابِرُونَ
অর্থঃ তোমাদের ধ্বংস হউক। আল্লাহর দরবারে সওয়াব পার্থিব সম্পদের চেয়ে হাজার গুনে উত্তম। যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তারাই এ সওয়াব পারে। অতঃপর তারাই পরিপূর্ণ সওয়াব পাবে যারা পার্থিব লোভ লালসার ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ করে। (সূরা- কাসাসঃ আয়াত-৮৫)
কারূন নিজেকে হযরত মূসা (আঃ)-এর প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবত তাই সে মূসা (আঃ) -কে লজ্জিত করার জন্য বিভিন্ন পথ খুঁজতে থাকল। একবার সে হযরত মূসা (আঃ) কে ব্যভিচারের অপবাদ দেয়ার পরিকল্পনা করল। তাই সে এক দুঃশ্চরিত্রা মহিলার সাথে এ মর্মে চুক্তি করল যে, হযরত মূসা (আঃ) যখন বনী ইসরাইলের ভরপুর মজলিশে ওয়াজ নসীহত করতে থাকবেন তখন সে বলবে যে, হযরত মূসা (আঃ) তার সাথে ব্যভিচার করেছে। কারূন এ চুক্তির উপর এ নারীকে অনেক অর্থ প্রদান করল। চুক্তি অনুযায়ী সে হযরত মূসা (আঃ)-এর মজলিশে হাজির হল। কারূন ও মজলিশে উপস্থিত ছিল।
হযরত মূসা (আঃ) তখন এ মজলিশে তৌরাত পড়ে শুনাচ্ছিলেন। মজলিশে লোকে পরিপূর্ণ। ঠিক তখনই এ নারী উঠে দাঁড়িয়ে মজলিশকে সম্বোধন করে বলল, হে লোক সকল! আপনারা শুনুন মূসা (আঃ) সম্পর্কে তিনি আমার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছিলেন। চরিত্রাহীনা এ নারীর কথা শুনে মূসা (আঃ) লাজবাব হয়ে পড়লেন। তিনি বুঝতে পারলেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি তৎক্ষণাৎ দু রাকাত নামাজ পড়লেন। আর এ নারীকে লক্ষ্য করে বলেন, হে রমনী আমি তোমাকে আল্লাহর কসম দিচ্ছি তুমি সত্য করে বল, কি কারণে তুমি আমার উপর এ অপবাদ চাপাচ্ছ। নারী বলল, হে আল্লাহর বনী যেহেতু আপনি আমাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলেছেন তাই মিথ্যাকথা বলতে পারব না। প্রকৃত কথা হল, কারূন আমাকে মোটা অংকের অর্থ দিয়েছে, যেন আমি আপনার সম্পর্কে এসব কথা বলি। আমি এখন আল্লাহর নিকট আমার অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাওবা করছি। মূসা (আঃ) তৎক্ষণাৎ সিজদায় পড়ে আল্লাহর সমীপে কারূনের বিচারের আরজি পেশ করলেন, আল্লাহ তায়ালা ওহীর মাধ্যমে জানালেন তিনি যমীনকে নির্দেশ দিয়েছেন, যমীন যেন কারূনের ধন-সম্পদ ও ঘরবাড়ীসহ কারূনকে গ্রাস করে ফেলে।
অন্য বর্ণনায় আছে যে, একবার হযরত মূসা (আঃ) বনী ইসরাইলীদের মজলিসে পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের আলোচনা করছিল। কারূন হযরত মূসা (আঃ)-এর এ মজলিশে পণ্ড করে দিতে পরিকল্পনা করল। কেননা, সে নিজেকে মূসা (আঃ) প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করত। তাই সে মহামূল্যবান পোশাকে সজ্জিত হয়ে অতিসুন্দর সুসজ্জিত একটি খচ্চর সওয়ার হয়ে মজলিশে হাজির হল। তার অনুগামী ছিল মণিমুক্তা খচিত পোশাকে সজ্জিত তার সেবক দল। তাদের মজলিশে আগমনের সাথে সাথে উপস্থিত লোকেরা কারূনের দিকে মনোনিবেশ করল।
হযরত মূসা (আঃ) কারূনের মজলিশে আগমনের উদ্দেশ্যে বুঝতে পারলেন, তাই তিনি ডাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এখন যা করলে এর পিছনে কি উদ্দেশ্য রয়েছে? কারূন বলল, হে মূসা! আপনি নবুয়ত প্রাপ্ত হয়ে আমার চেয়ে অধিক মর্যাদার অধিকারী হয়েছেন। তবে স্মরণ রাখবেন আমিও প্রার্থিক সম্পদের দিক দিয়ে আপনার উপর প্রাধান্য লাভ করেছি। সুতরাং এ সম্প্রদায়ে আমার মর্যাদা আপনার চেয়ে কম নয়। আপনি যেমন সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমিও তদ্রূপ নেতৃত্বের অধিকারী। যদি পরীক্ষা করতে চান তবে চলুন আমরা পরস্পরের প্রতি বদদোয়া করি, দেখি কার দোয়া কবুল হয়। অতঃপর কারূনের প্রস্তাব অনুসারে হযরত মূসা (আঃ) ও কারূন উভয়ে দোয়া করার জন্য বের হয়ে আসেন। হযরত মূসা (আঃ) কারূনকে বলেন, কে প্রথমে দোয়া করবে কারূন বলল, আমি প্রথম দোয়া করব। কারূন দোয়া করল। কিন্তু তার দোয়া কবুল হল না।
অতঃপর হযরত মূসা (আঃ) আল্লাহর দরবারে হাত তুলে বলেন, হে আল্লাহ! জমিনকে হুকুম দিন যমীন যেন আজ আমার কথা শুনে আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে তাঁকে জানিয়ে দিলেন, তিনি যমীনকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন যমীন তাঁর হুকুম তামিল করে। তখন হযরত মূসা (আঃ) বলেন, হে যমীন! কারূন এবং তার অনুসারীদেরকে গ্রাস কর। যমীন তাদেরকে পা পর্যন্ত গ্রাস করে ফেলল
অতঃপর বলেন, তাদেরকে আরও মুজবতভাবে ধর। যমীন তাদেরকে হাটু পর্যন্ত গ্রাস করল। এভাবে ধীরে ধীরে সমুদয় অঙ্গ গ্রাস করল। এমনকি তার ধন-সম্পদসহ গ্রাস করল। কোরআনে পাকে ইরশাদ হয়েছে-
فَخَسَفْنَا بِهِ وَبِدَارِهِ الْأَرْضَ فَمَا كَانَ لَهُ مِن فِئَةٍ يَنصُرُونَهُ مِن دُونِ اللَّهِ وَمَا كَانَ مِنَ الْمُنتَصِرِينَ
وَأَصْبَحَ الَّذِينَ تَمَنَّوْا مَكَانَهُ بِالْأَمْسِ يَقُولُونَ وَيْكَأَنَّ اللَّهَ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَيَقْدِرُ ۖ لَوْلَا أَن مَّنَّ اللَّهُ عَلَيْنَا لَخَسَفَ بِنَا ۖ وَيْكَأَنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ
অর্থঃ আমি কারূন এবং তার বাড়ী ঘর যমীনের ভেতর ধসিয়ে দিলাম। তখন এমন কোন দল ছিল না যারা তাকে আল্লাহর আযাব হতে রক্ষা করতে পারে এবং সে নিজেও নিজকে রক্ষা করতে পারেনি। যারা গতকল্য তার মত আশা করছিল তারা বলতে লাগল হ্যাঁ, মনে হচ্ছে যে আল্লাহ স্বীয় বান্দাহদের মধ্য হতে যাকে ইচ্ছা প্রচুর রিযক দান করেন আর যাকে ইচ্ছা সংকীর্ণ করে দেন। যদি আমাদের প্রতি আল্লাহর মেহেরবাণী না হত, তা হলে আমাদেরকেও ধ্বংস করে ফেলা হত। সুতরাং জানা গেল যে কাফেরদের সফলতা লাভ হয় না। (সূরা কাসাসঃ আয়াত-৮১-৮২)