মূসা (আঃ)-এর জন্ম –শেষ পর্ব

মূসা (আঃ) এর জন্ম প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

মূসা (আঃ) ও ভূমিষ্ঠ হয়েছেন, ইত্যবসরে ফেরাউনের নিয়োজিত অনুসন্ধানী গুপ্তচর দলও এমরানের স্ত্রীর গৃহে হাজির হয়। এ পাষান্ডদের দেখে মূসা (আঃ) এর মা দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।

শিশু পুত্রের অকল্যাণ আশংকায় তিনি এতটাই বিচলিত হয়ে পড়েন যে, কি করবেন তা স্থির করতে পারছিলেন না। কোথায় রাখবেন কি করবেন এ ভাবছিলেন আর বলছিলেন, হে আমাদের রব! তোমার আশ্রয় চাই। তুমি অনুগ্রহপূর্বক এ নিষ্পাপ শিশুকে হিফাজত কর।

এরুপ বলতে বলতে এক রকম অজ্ঞান অবস্থায় তিনি শিশু পুত্রকে কাপড়ে পেঁচিয়ে জ্বলন্ত চুলায় রেখে একটি খালি ডেকচি তাতে চড়িয়ে দেন। ফেরাউনের গুপ্তচরেরা এসে গর্ভের কোন লক্ষণ বা নবজাত শিশুকে দেখতে না পেয়ে ফিরে যায়।

তাদের গাত্রোথানের পর মূসা (আ)-এর জননীর সম্বিত ফিরে আসে। তিনি আপসোস আর অনুশোচনায় সাথে বলেন, হে আল্লাহ্‌! এ আমি কি সর্বনাশ করলাম! কেনই বা স্বহস্তে প্রাণপ্রিয় সন্তানকে জ্বলন্ত চুলায় নিক্ষেপ করলাম। নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলাম। হায় এতক্ষণে আমার ছেলে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

ফেরাউন বাহিনী যদি হত্যা করত তবে তো অন্তত মৃত দেহটা পেতাম। নিজ হাতে সমাহিত করে সান্ত্বনা লাভ করতে পারতাম। এ বলে তিনি চুলার দিকে তাকিয়ে দেখেন, শিশু মূসা (আঃ) একটি সেব ফল হাতে নিয়ে মনের আনন্দে খেলা করছেন। এ অবস্থা দর্শনে মূসা জননী বিষ্মিত হন। আল্লাহ এ অবস্থায়ও তাঁর প্রাণপ্রিয় সন্তানকে রক্ষা করেছেন। তিনি প্রাণভরে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে শিশু সন্তানকে চুলা হতে বের করে আনেন। এবার আবার সেই চিন্তা।

ফেরআউনের গুপ্তচরদের দৃষ্টি পড়লেই তো নিয়ে হত্যা করে ফেলবে। এখন কোথায় লুকাব। মূসা জননী এসব দুর্ভাবনায় হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। তখন আল্লাহ তাআলা ওহী নাযিল করলেন-

অর্থঃ আর যখন আমি সে বিষয়টা আপনার মাকে অদৃশ্য নির্দেশ প্রদান করেছিলাম যা গায়েবী নির্দেশে জানাবার ছিল; তাহল তাকে (মূসা) একটি সিন্দুকে ভরে নদী বক্ষে নিক্ষেপ করুন, অতঃপর নদী তাকে কুলে নিক্ষেপ করলে (আর) এমন এক লোক তাঁকে ধরে ফেলবে যে আমারও শত্রু এবং তাঁরও শত্রু-

মূসা (আঃ) – এর মায়ের দুশ্চিন্তা লাঘবের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাঁকে বিভিন্ন প্রকারে সান্ত্বনা দেন, অভয় দেন। কোরআনের একাধিক আয়াতে এ বিষয় উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

অর্থঃ আর আমি মূসার মাতাকে অদৃশ্য হতে নির্দেশ দিলাম, তুমি তাকে দুধ পান করাতে থাক, অতঃপর তার সম্পর্কে যখন তোমার আশংকা হবে তখন তাকে (সিন্দুক ভরে) নদী গর্ভে নিক্ষেপ কর, অতঃপর ভয়ও করো না আর বিষন্ন হয়ো না, অবশ্যই তাকে আবার তোমার নিকট ফিরিয়ে আনব এবং পরে তাকে রাসূল বানাব।

মূসা (আঃ)-এর জন্ম – প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।