হাতীর ঘটনা
ইসলাম সম্পর্কে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো অন্ধ মানুষের মতন।
এক শহরে একবার এক হাতী এসেছিল। অন্ধরা হাতি দেখতে হাজির হলো।
কিন্তু চোখ নেই হাতী দেখবে কি দিয়ে?
অগ্যতা সবাই হাতদিয়ে হাতড়িয়ে হাতী দেখতে লাগলো। কারো হাতে লেজ, কারো হাতে কান, কারো হাত পায়ের উপর পড়লো। আবার কেউ হাতড়িয়ে শুধু শুড় পড়লো। এভাবে হাতি দেখা সমাপ্ত করে সবাই এক জায়গায় মিলিত হলো হাতী কেমন ছিল তা বলাবলি করতে লাগলো।
কেউ বললো, হাতী দেখতে একটা সাপের মত। এ লোকটি হাত শুড়ের উপর পড়েছিল। আর যার হাত কানের উপর পড়েছিল সে বললো, কখনও না, তুমি ভুল দেখছো। হাতী দেখতে কুলার মত।
যার হাত পায়ের উপর পড়েছিল সে বললো, তোমাদের একজনের কথাও ঠিক নয়। হাতী দেখতে ঠিক যেন মোটা থাম্বা।
যে হাতীর লেজ ধরতে পেরেছিল সে উত্তেজিত হয়ে বললো, তোমরা কেউ হাতী দেখনি। হাতি আমি দেখেছি। হাতী হলো ঠিক ঝাটার মত।
একথা শুনে সবাই রেগে গেল। তুমূল ঝগড়া শুরু হলো। এ বলে আমারটা ঠিক, ওবলে আমারটা ঠিক।
কিন্তু কার কথা ঠিক? যদি চিন্তা করে দেখা যায় তবে সবাই সত্যবাদী।
কারণ হাতড়ানোর ফলে ওরা যা বুঝেছিল তাই বলেছিল। আবার আরেক দৃষ্টিতে সবাই মিথ্যাবাদী। কারণ হাতীকে নিজের হাতড়িয়ে পাওয়া আকৃতিতে কেন মেনে নিল? হাতীর একটি অংশকে পূর্ণ হাতী হিসাবে কেন গ্রহণ করলো? হাতী তো কোন একটা অংশের নাম নয়। যদি সবাই বলত আমরা হাতীর একটি অংশ দেখেছি তবে সব ঝগড়া মিটে যেতো।
ইসলাম সম্পর্কে আমরাও এ পন্থাই অবলম্বন করছি। ইসলামের এক একটি অংশ মাত্র গ্রহণ করে নিজেকে দীনদার ভেবে ভাবছি। শুধু তাই নয়, গ্রহণ করা একটি অংশের মধ্যেই ইসলামকে সীমাবদ্ধ মনে করছি। আমার গৃহীত অংশটি অন্যের মধ্যে যদি না থাকে তবে তাকে বে-দীন বলে গালি দেই।
কয়েকজন লোক জামার মালিক হতে চেয়ে যদি কেউ জামার হাতা পরে, কেউ গলা পরে, কেউ পীঠের কাপড় আর কেউ শুধু পেটের কাপড় পরে তবে এ খণ্ড-করে গাঁয়ে দিয়ে মালিক হওয়া যাবে না। কারণ জামা বলা হয় এসব কিছুর মিলিত সমষ্টিকে। যে ব্যক্তি এসবের সমষ্টি একত্রে গাঁয়ে দিয়েছে তাকেই বলা যাবে জামার মালিক।
এভাবে ইসলাম তাকেই বলা হবে যার মধ্যে ইসলামের সকল অংশই একত্রে প্রতিফলিত হয়েছে।
(ইলম ও আমল, পৃষ্ঠা-৭০৩)