মুল্লা মাহমুদের জানাযা পড়া
অনেক মাওলানা আছে যারা একেবারে জাহেল প্রকৃতির হয়ে থাকে। বরং কথাটি এভাবে বলা যায় যে অনেক জাহেল যারা মাওলানা হিসাবে খ্যাতি অর্জন করে থাকে।
অথচ মাওলানা শুধু তাকেই বলা যায় যে আল্লাহ-ওয়ালা হবে এবং আল্লাহ ওয়ালা হতে হলে শরীয়তের জ্ঞান পূর্ণভাবে থাকতে হবে।
কিন্তু আজকাল যারা দু চারটি আরবী উর্দু কেতাবগুলো সাহিত্য অথবা দর্শনের বিষয় হয়।
যদি শুধু দর্শন পাঠ করেই মাওলানা হওয়া যেতো তবে এরিষ্টটল হতেন বড় মাওলান।
অথচ তার একত্ববাদী হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ আছে। আর যদি আরবী সাহিত্য পড়ে মাওলানা হওয়া যেতো তবে আবু জেহেল হতো সবচেয়ে বড় মাওলানা। কারণ তার আরবী ভাষা ও সাহিত্য অসাধারণ পাণ্ডিত্য ছিল। সুতরাং দর্শন বা আরবী সাহিত্য পড়ে মানুষ মাওলানা হতে পারে না।
মুল্লা মাহমুদ জৌনপুরী একজন বড় মাওলানা হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। অথচ তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক। শরীয়তের ইলম তার ছিল না। কিন্তু প্রসিদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম খুব। এমন কি দিল্লীর বাদশাহও নিজের দরবারে ডেকে নিয়ে তাকে খুব সম্মান দেখালেন। একজন, মৌলবি আগে থেকেই সে দরবারে খুব প্রিয় ছিল।
এ লোকটি ভাবলো মুল্লা মাহমুদ যদি বাদশাহের প্রিয় হয়ে যায় তবে বাদশাহর দরবারে আমার কোন মর্যাদা থাকবে না। তাই কিতাবে বাদশাহর কাছে প্রমাণ করা যায় যে মুল্লা মাহমুদ একজন জাহেল সে চেষ্টা করতে লাগলো, অল্প বিদ্যার মৌলবিদের যেমন হিংসা রোগ থাকে এ লোকটিরও তেমনি হিংসা রোগে পেয়ে গেল।
একদিন একটি জানাযা আসলো। সবাই আগ্রহ করে নবাগত মাওলানা মুন্না মাহমুদকে জানাযা পড়াতে দাড় করাল।
মৌলবি সাহেব হিংসা চেপে রেখে পিছন থেকে এগিয়ে এসে মুল্লা মাহমুদের কানে কানে বললো, জানাযার লোক অনেক বেশি হয়েছে পিছনের লোক যেন শুনতে পায়, কেরাত একটু জোরে পড়বেন।
মুল্লা মাহমুদ আল্লাহ আকবর বলে জানাযার নিয়ত বেঁধে জোরে সূরা কেরাত ইত্যাদি পড়তে শুরু করেছেন। পিছনের লোকজন জানাযার নামাজ ছেড়ে দিয়ে হৈ চৈ শুরু করে দিল, কে এটা, জানাযার নামাযও পড়তে জানে না? জানাযার নামাযে সূরা কেরাত পড়তে শুরু করেছে।
অবশেষে মুন্না মাহমুদকে ইমামতি থেকে পিছনে আনা হলো এবং তাঁর জাহালতির কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো,
মোট কথা অনেক জাহেল আছে তারা আলেম সিহাবে প্রসিদ্ধ হয় দেশের বাদশাহর কাছেও মর্যাদা পেতে পারে।
(ইলম ও আলেম, পৃষ্ঠা-২০২)