এক বুজুর্গের কসমের উছিলায়
হযরত আবূ আব্দুল্লাহ কাররাশী (রাঃ) বলেন, একবার মুশরিক সৈন্যরা স্পেন শহরে প্রবেশ করে বিনা যুদ্ধে তা দখল করে নিল। শহর দখলের পর তারা ব্যাপক হারে শহরের অধিবাসীদের গ্রেফতার করে তাদের উপর অমানবিক অত্যাচার করতে লাগল। এক পর্যায়ে সংবাদ পাওয়া গেল যে, বন্দীদেরকে দীর্ঘ অনাহারে রাখার পর অবশেষে তাদের হাত পিছমোড়া করে বেঁধে আস্তাবলে নিয়ে পশুর মত মুখ দিয়ে ঘাস খেতে বাধ্য করা হচ্ছে।
বর্ণনাকারী বলেন, যখন বন্দীদের উপর নির্যাতন চলছিল তখন আমি বিখ্যাত বুজুর্গ শায়েখ আবূ ইসহাক ইবনে তারীফের সাথে ছিলাম। খানার মজলিসে বসে তিনি বিসমিল্লাহর সাথে একটি দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে আমাকে বললেন, তুমি কি জান না যে, স্পনে আমাদের মুসলমান ভাইদেরকে বন্দি করে তাদের উপর অবর্ণীয় অত্যাচার চালানো হচ্ছে? আমি বললাম, হ্যাঁ আমি এই ঘটনা শুনেছি। হযরত শায়েখ কেঁদে কেঁদে বন্দী মুসলমানদের করুন চিত্রের বিবরণ দিতে লাগলেন। শেষ দিকে তিনি শব্দ করে কেঁদে উঠলেন।
হে আল্লাহ! যতক্ষণ না তুমি মুসলমানদের মুক্ত করবে। ততক্ষণ আমি আহার পানি কিছুই গ্রহণ করব না। এ কথা বলেই তিনি খানার মজলিশ থেকে উঠে গেলেন। কিন্তু কিছু সময় পরই আল হামদুলিল্লাহ পড়তে পড়তে ফিরে এসে বললেন, খেতে বস। আমি নিরবে তাঁর সাথে আহার করতে লাগলাম। আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম। ইতোপূর্বে তিনি আল্লহার নামে শপথ করে আহার পানি ত্যাগ করছিলেন, কিন্তু এখন আবার কেমন করে আহার করলেন?
পরবর্তীতে আমি জানতে পারলাম যে, হযরত শায়েখের যখন আহার গ্রহণ করেছেন তাঁর ঠিক পূর্ব মুহুর্তেই স্পেন দখলকারী অমুলিম সৈন্যরা একটি বিকট শব্দ পেয়ে ভীত হয়ে পড়লেন। তাঁর ঐ শব্দ পেয়ে মনে করল হয়তো মুসলিম সৈন্যরা স্পেন দখল করতে এসেছে। অতঃপর তারা যাবতীয় অস্ত্র, রসদ ও গনীমতের মাল ত্যাগ করে যে যেদিকে পারল পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করল। এভাবেই মুসলমানরা জয় ও মুক্তি লাভ করল।