নব দম্পতির সংযম
হযরত সূফী আব্দুল্লাহ বিন সুজা’ বলেন, বিশ্বভ্রমনের সময় একবার আমি মিশরে যাত্রা বিরতি করেছিলাম। সেখানে আমার বিয়ের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে আমি আমার স্থানীয় বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করলাম। তাঁরা বললেন, এখানে এক বুজুর্গ মহিলার একটি কিশোরী কন্যা আছে। মেয়েটি রুপে গুনে এবং বিবেচনায় একজন আদর্শ পাত্রী।
যাই হোক আমি কন্যার মাতার নিকট বিয়ের প্রস্তাব দিলে যথা সময়ে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হল। বাসর ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পেলাম মেয়েটি দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে নামায পড়ছে। কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকার পর এ ভেবে আমার লজ্জাবোধ হল যে, এতটুকু মেয়ে কত গভীর মনোযোগের সাথে নামাজ আদায় করছে। আর আমি নিশ্চুপ বসে আছি। পরে আমিও নামায পড়তে আরম্ভ করলাম কিন্তু দীর্ঘ সময় নামায আদায়ের পর দেখলাম, মেয়েটির নামাযে কোন বিরতি নেই। আমি ক্লান্ত হয়ে পড়লাম এবং জায়নামাযেই ঘুমিয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ পর মেয়েটি ও জায়নামাযের উপর ঘুমিয়ে পড়ল।
পরদিন রাতেও একই অবস্থার পূণরাবৃত্তি ঘটল এবং ক্রমাগত ঐ অবস্থায় আমাদের দিন কাটতে লাগল। দীর্ঘ দিন পর আমি তাকে বললাম প্রিয়। আমাদের দাম্পত্য সম্পর্কের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে কি? সে জবাব দিল, আমি আমার সৃষ্টিকর্তার সেবায় লিপ্ত। তবে আমার উপর তোমার যে হক আছে তা আমি অস্বীকার করছি না।
বর্ণনাকারী বলেন, মেয়েটি উপরোক্ত বক্তব্য শুনে আমার লজ্জাবোধ হল। আমি আর তাকে কিছুই বললাম না। এভাবে আমাদের আরো একমাস কেটে গেল। অতঃপর আমরা ভ্রমনের জন্য রওয়ানা হচ্ছি। জবাবে সে বলল, আল্লাহ পাক আপনাকে যাবতীয় বালা-মুসীবতের ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখুন।
আমি ঘর থেকে বের হওয়ার মুহুর্তে সে আমার নিকট এসে বলল, স্বামী! আপনার ও আমার মধ্যে পরষ্পর একটি হক ছিল যা এ দুনিয়াতে পূরণ হল না। ইনশাআল্লাহ তা জান্নাতে পূরণ হবে।
সর্বশেষে বলল, আমি আপনাকে আল্লাহর হাতে সোপর্দ করছি এবং তিনি-ই সর্বোত্তম আমানতদার। অতঃপর আমি তার থেকে বিদায় নিয়ে সফরে পা বাড়ালাম।
অপর এক বুজুর্গ বর্ণনা করেন, আমার স্বামী বড় আল্লাহ ওয়ালী বুজুর্গ ছিল। যখন তার মধ্যে অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করত তখন তামি তাকে স্পর্শ করতে পারতাম না এবং আমার জরুরত অপূর্ণই থেকে যেত। পরে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলে আমি তার সাথে মিলিত হতাম।