কোন এক সেবিকার কথা
বর্ণিত আছে যে, এক শায়েখ এক মেয়ের নামে বিবাহের পয়গম পাঠালেন। মেয়ের অভিভাবক এ মর্মে উত্তর পাঠালেন যে, শায়েখ যদি কন্যার খেদমতের জন্য একজন সেবিকার ব্যবস্থা করতে পারেন, তবে এ বিয়েতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু শায়েখের নিকট দাসী কিনার সামর্থ ছিল না। পরে তিনি এ বিষয়ে তাঁর এক মুরিদের সাথে পরামর্শ করলেন। মুরীদ শায়েখকে পরামর্শ দিয়ে বললেন, আপনি তাদের শর্ত মেনে বিয়ে করুন। দাসীর পরিবর্তে আমিই তাঁর সেবা করব।
আপনি তাদেরকে বলে দেবেন যে, আমার নিকট একজন দাসী আছে বটে, কিন্তু সে বলেছে যে, আমি পর্দার আড়ালে থেকে তার সেবা করব। সে কখনো আমাকে দেখতে পাবে না। এবং আমিও তাকে দেখব না। শায়েখ পাত্রীর পক্ষকে এ কথা জানালে তারা বলল, আমরা চাই যেন আমাদের কন্যার সেবা হয় নিয়মিত, সেবিকা দেখা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। সুতরাং শায়েখের সাথে ঐ মেয়ের বিয়ে হল। কন্যা উঠিয়ে আনার পর শায়েখ সেই মুরীদকে একটি পৃথক কক্ষে স্থান করে দিলেন। তার প্রধান কাজ ছিল জাতা পেষণ করা। সে সব সময় বোরকা পরিধান করে থাকতে এবং বেগম সাহেবা তাকে দাসীই মনে করতেন। ঐ মুরীদ ছিল একজন হাবশী এবং তার দাঁড়ী গোফ কিছুই ছিল না।
শায়েখ নিয়মিত রাতের একটি নির্দিষ্ট সময়ে স্ত্রীকে ঘরে রেখে এবাদতের জন্য বের হয়ে যেতেন। ক্রমে স্ত্রীর সন্দেহের দানা বাঁধতে লাগল। পরে সে এ বিষয়ে অপরাপর মহিলাদের সাথে গোপন আলোচনা করল। মহিলারা বলল, এমনও হতে পারে যে তোমার স্বামী রাতে সেই দাসীর কক্ষে যান। কাজেই বিষয়টি তুমি ভালভাবে তদন্ত করে দেখ।
যাই হোক পরবর্তী রাতে শায়েখ যখন এবাদতের জন্য ঘর থেকে বের হলেন। কিছুক্ষণ পর তার স্ত্রী ধীর পায়ে প্রথমে দাসীর কক্ষের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। অতঃপর জানালার ফাঁকে চোখ রেখে দেখতে পেল দাসী বোরকা পরিহিতা অবস্থায় নামায পড়ছে। আর শস্যাদি পেষনের জাতা নিজে নিজেই ঘুরছে। এ বিস্ময়কর দৃশ্য দেখে সে একেবারে স্তব্দ হয়ে গেল।
এদিকে বেগম সাহেবা শায়েখকে বাড়ির কোথাও খুঁজে না পেয়ে নিজের শয়ন কক্ষে ফিরে এসে তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। পরে তিনি ফিরে এলে ঐ বিস্ময়কর ঘটনার বিবরণ দিয়ে তার রহস্য জানতে চাইলে শায়েখ বললেন, তুমি যাকে দাসী মনে করছ আসলে সে দাসী নয়, সে আমার অমুক ভাই। অতঃপর তিনি বিয়ের সময়কর ঘটনা খুলে বলার পর স্ত্রী লজ্জিত হয়ে বলল, এখন থেকে আমিই তোমাদের উভয়ের সেবিকার দায়িত্ব পালন করব।