হযরত মুসা (আঃ) এর জন্ম বংশ ও পরিচয়-১ম পর্ব

হজরত ইব্রাহীম (আঃ) এর সন্তান-সন্তিতিগণ বনি ইস্রাইল নামে পরিচিত। হজরত মুসা (আঃ) বনি ইস্রাইল বংশের একজন পরাক্রমশালী নবী ছিলেন। হযরত মুসা কালিমুল্লা নামে খ্যাত। যেহেতু তিনি তুর পাহাড়ে আল্লাহা তালার দর্শন লাভ করে  তার সাতে সরাসরি কথা বলার সুযোগ লাভ করেছিলেন। একমাত্র হযরত  মুহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতীত এই পরম সৌভাগ্য লাভ করা কোন নবীর পক্ষে সম্ভব হয় নি। এ জন্য  তার নাম করন করা হয়েছে কালিমুল্লাহ।

হজরত মুসা (আঃ) প্রথম সারির একজন নবী। পবিত্র কোরআন শরিফে তিনি বহু আলোচিত ব্যক্তি হিসাবে সুনামের অধিকারি হয়েছেন। তার জীবনে যতগুলা ঘটনা পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন  স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে তা নজির বিহীন। হযরত মুসা (আঃ) এর পিতার নাম ছিল ইমরান। মাতার নাম নিয়ে মতবিরোধ আছে। তবে নির্ভরযোগ্য সুত্রে থেকে যত দূর জানা যায়  তাতে খাতুন নামে একজন বনি ইস্রাইল বংশিয়া সম্ভ্রান্ত মহিলা ছিলেন তার মাতা। হযরত মুসা (আঃ) এর জন্ম বৃত্তান্ত হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর জন্ম বৃত্তান্তের প্রায় হুবহু মিলে যায়।

 তখন মিশরসহ অর্ধ পৃথিবীর বাদশা ছিল ফেরাউন। সে অত্যন্ত প্রাতাপশালী স্বাস্থ্যবান সম্পদশালী বাদশাহ ছিল। তার সাড়ে চারশ বছরের জীবনে কোন দিন অসুখ হয়নি। সাধারণ সর্দি পর্যন্ত তার লাগে নি। ফেরাউনের আদ্যপান্ত সম্বন্ধে একজন বিশিষ্ট ঐতিহাসিক লিখেছেন যে তার জন্ম ব্যাবিলনে। সে একজন সাধারন পরিবারের লোক। অনেক দুঃখ দৈন্যের মধ্যে সে বড় হয়ে মিশরে যাত্রা করে।

পথে হাসান নামে এক ব্যক্তির সাথে পরিচয় হয়, এবং তার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। অতপর উভয়ে একত্র হয়ে মিশর পৌঁছায়। মিশর গিয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য কিছু ছোট-খাটো ব্যাবসা আরম্ভ করে। কিছু দিন ব্যবসা করা পর হঠাৎ একজন স্থাণীয় ব্যক্তির সাথে তার ঝগড়া সৃষ্টি হয়। ফলে ফেরাউন কে অভিযুক্ত হয়ে রাজদরবারে যেতে হয়। তখন রাজ রাজাগন দেশের বিচার আচার নিজের হাতে করতেন। অভিযুক্ত ফেরাউন রাজার নিকট এত বিনয় ও নম্রতার সাথে অভিযোগসমূহের জবাব দিলেন যাতে রাজা তাকে বেকুসুর খালাস প্রদান করেন। অপরুন্ত রাজার নিকট তার কোন দাবি বা প্রর্থনা আছে কি না তিনি তা জানতে চান। ফেরাউন তখন রাজদরবারে সাধারন একটি চাকুরির জন্য আবেদন করেন। রাজা তার বিচক্ষণতায় এত টায় আকৃষ্ট হলেন তাই তার চাকুরির আবেদন মঞ্জুর করলেন। তাকে কবর স্থানের পাহাদার নিয়োযুক্ত করলেন।

অনেক দিন যাবত ফেরাউন এ চাকুরি তে বলবত থেক অবৈধ উপায়ে মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি করে অনেক টাকা পয়সার মালিক হন। এর মধ্যে সে প্রায়ই রাজদরবারে গিয়ে রাজার বিভিন্ন কাজে সাহায্য করত। এতে তার পতি রাজার দৃষ্টি আকর্ষন হয়। কারন তার বিচক্ষনতা ছিল অত্যন্ত তীক্ষ্ণ এবং বুদ্ধিমত্তায় ছিল প্রখর।

এভাবে বিশ বছর অতিক্রম হলে রাজার প্রধানমন্ত্রী মারা যায়। তখন রাজা ফেরাউন কে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করেন। বৃদ্ধ রাজার প্রধানমন্ত্রী ফেরাউন রাজ্যের সর্বত্র নিজ প্রভাব বিস্তার করে নিজে সক্ষম হল। ফেরাউনের খোদাদ্রোহিতা ব্যতীত অন্যান্য বিষয় যে দক্ষতা ছিল তা অনেক প্রসংশার যোগ্য। ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে সে ছিল অত্যান্ত কঠোর। দরিদ্রের প্রতি সহানুভুতি, অভাব অভিযোগ নিরসের ক্ষেত্রে ছিল তার বলিষ্ঠ। দেশবাসী তার নেতৃত্বকে আন্তরিক ভাবে সমর্থন জানায়। রাজা ফেরাউনের এসব গুলাবলি দেখা তাকে সিংহাসনের যোগ্যপাত্র মনে করেন। রাজার কোন সন্তান ছিল না। তাই তিনি মৃত্যু শয্যায় থেকে ফেরাউনকে সিংহাসনের অধিকারি বলে ঘোষণা দেয়।

সূত্রঃ আল কোরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

হযরত মুসা(আঃ) এর জন্ম বংশ ও পরিচয়-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।