হযরত হাসান বসরী (রঃ) – পর্ব ৩
হযরত হাসান বসরী (রঃ) – ২য় পড়তে এখানে ক্লিক করুক
একবার রোমে পৌছেই হযরত হাসান (রঃ) দেখলেন, মন্ত্রী বর কোথায় যেন যাবার জন্য প্রস্তুত। বন্ধুকে দেখে তিনি খুব খুশী। বললেন, বড় ভাল সময়ে এসেছেন আপনি। চলুন, আমার সঙ্গে গিয়ে একটি অনুষ্ঠান দেখে আসবেন।
ঘোড়ার পিঠে চড়ে তাঁরা যাত্রা করলেন।
গন্তব্যস্থলে গিয়ে দেখা গেল, এক মাঠের প্রান্তে স্বর্ণ ও মণিমাণিক্য খচিত রেশমী বস্ত্রের একটি সুদৃশ্য অপূর্ব তাঁবু। তাঁবুর চারপাশে ঘুরে ঘুরে একদল সু-সজ্জিত সৈন্য নিজেদের ভাষায় কী যেন বলতে লাগল। তারপর চলে গেল। এরপর এলেন একদল অভিজ্ঞ পণ্ডিত মানুষ। তাঁবু প্রদক্ষিণ করে তাঁরাও যেন কি বললেন আর চলে গেলেন। তারপরে এক একদল রূপসী মহিলা।
মাথায় মণিমাণিক্য ভর্তি স্বর্ণের থালা, তাঁরাও ঘুরল তাঁবুর চারদিক। কী যেন বলল আর চলে গেল। সব শেষে এলেন স্বয়ং রোম সম্রাট ও সম্র্যাজ্ঞী। তাঁদের সঙ্গে এবার প্রধানমন্ত্রী গিয়ে যোগ দিলেন। আর সবাই ঢুকলেন তাঁবুর ভেতরে। কিছুক্ষণ অবস্থানের পর তাঁরা বেরিয়ে এলেন তাঁবুর বাহিরে। কিন্তু তাঁরা অশ্রু-সজল।
মন্ত্র মুগ্ধের মতো সবকিছু দেখে গেলেন হযরত হাসান বসরী (রঃ)। এসবের কী কারণ, কী ব্যাখ্যা, তা জানার জন্য তার কৌতুহল প্রবল হয়ে উঠল। মন্ত্রী যখন ফিরে এলেন তার কাছে, তখন তাকেই এ ঘটনার মর্ম জিজ্ঞেস করলেন।
মন্ত্রী বললেন, আমাদের সম্রাটের এক পুত্র ছিল। তিনি তাঁকে খুব ভালোবাসাতেন। হঠাৎ ছেলেটি এক কঠিন অসুখে পড়ল। দেশ-বিদেশ থেকে নামী-দামী চিকিৎসকরা এলেন তার চিকিৎসা করতে। কিন্তু কিছু হল না, সে মারা গেল। তাঁকে এখানে কবর দেওয়া হয়। তার কবরের ওপর রয়েছে ঐ সুদৃশ্য তাঁবুটি। রাজপুত্রের স্মরণে প্রতি বছর এখানে এ অনুষ্ঠান হয়।
হযরত হাসান (রঃ) বললেন, কিন্তু এখানে যাঁরা এলেন আর কী কী কথা বলে চলে গেলেন, তা তো বুঝলাম না।
মন্ত্রী বললেন, প্রথম যে সেনাদল দেখেছেন, তারা বলে গেল, হে রাজকুমার! আপনার যা ঘটেছে, আমাদের বাহুবল ও আস্তাবল দিয়ে যদি তা প্রতিহত করা যেত, তাহলে আমরা প্রানপণ চেষ্টা করে আপনার প্রাণ রক্ষা করতাম। কিছুতেই এ অবস্থায় শিকার হতে দিতাম না। কিন্তু যার ইশারা-ইঙ্গিতে এমনি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা চলে না। তিনি এমন অমিত শক্তির অধিপতি যে, তার শক্তির সামনে কোন বীরের বীরত্ব ব্যর্থ হতে বাধ্য।
হযরত হাসান বসরী (রঃ) – ৪র্থ পড়তে এখানে ক্লিক করুক
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া