হযরত ওয়ায়েস কারনী (রঃ)-পর্ব ৬
হযরত ওয়ায়েস কারনী (রঃ)-পর্ব ৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
লোক মুখে ওয়ায়েস কারনী (রঃ)-এর নাম শুনে তাঁকে এক নজর দেখার জন্য খুবই উতলা হয়ে উঠলেন ইবনে জামান। তাঁর শারীরিক বর্ণনা জানা ছিল। একদিন ফোরাত নদীতে তিনি তাঁকে ওযু করতে দেখলেন। আর চিহ্নগুলি মিলিয়ে নিলেন মনে মনে। বুঝলেন, যাঁকে তিনি খুঁজছেন, ইনিই তিনি। ইবনে জামান তাঁকে সালাম জানিয়ে করমর্দনের জন্য হাত বাড়ালেন।
তিনি সালামের জবাব দিলেন। কিন্তু করমর্দন করলেন না। ইবনে জামান দেখলেন, কী অপরিসীম দারিদ্র্য ও দৈন্যদশায় ক্লিষ্ট হয়েছেন ওয়ায়েস কারনী (রঃ)। দারিদ্র্য-জর্জর লোকটিকে দেখে ইবনে জামানের চোখে পানি এল। তিনি কাঁদলেন। কাঁদলেন ওয়ায়েস (রঃ) ও। ইবনে জামান বললেন, আল্লাহ আপনার প্রতি করুণা বর্ষণ করুন।
হযরত ওয়ায়েস (রঃ) বললেন, হে হারম ইবনে জামান! আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘজীবী করুন! আপনি কি জন্য এখানে এসেছেন? আর আমার সন্ধানই বা পেলেন কার কাছে? ইবনে জামান তাঁর কথা শুনে বিষ্মিত। বললেন, জনাব আপনি আমার ও আমার পিতার নাম জানলেন কি করে? এর আগে তো আপনি আমাকে কখনও দেখেননি। হয়তো আমার কথা কখনও কারও কাছে শুনতেও পাননি।
ওয়ায়েস (রঃ) বললেন, যার জ্ঞানের অগোচর কিছুই নেই, তিনিই আমাকে জ্ঞাপন করেছেন। আমার আত্না আপনার আত্নাকে চিনেছে।
তারপর ইবনে জামান মহান তাপসকে অনুরোধ করলেন, দয়া করে, রাসূলে কারীম সম্বন্ধে কিছু বলুন।
ওয়ায়েস বললেন, আমি তাঁকে নিজের চোখে দেখিনি। কিন্তু তাঁর পূত-পবিত্র বাণী অন্যের মুখে শুনেছি। আমি মুহাদ্দেস বা ভাষ্যকর হতে চাইনা। আমার অন্য কাজ আছে।
আপনি যদি পবিত্র কোরআনের কিছু আয়াত পাঠ করে শোনান তো আমি শুনি।
ইবনে জামানের অনুরোধে ওয়ায়েস কারনী (রঃ) পাঠ শুরু করলেন, আউজু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম। এটুকু উচ্চারণ করেই তিনি আকুলভাবে কাঁদতে কাঁদতেই পাঠ করে গেলেন, অমা খালাকতুন জ্বিন্না ওয়াল ইনসানা ইল্লা-লিইয়াবুদুন-আমি জ্বিন ও মানুষকে শুধু আমার উপাসনা করার উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোন কারণে সৃষ্টি করিনি।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত ওয়ায়েস কারনী (রঃ)-পর্ব ৭ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন