কাবুসের চরম অধঃপতন- পর্ব ২
কাবুসের চরম অধঃপতন- পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কাবুস বলল, তাতো পারেই বৈ কি, তাতে আমার সন্দেহ নেই।
হামান বলল, এজন্যই তো আমরা বলি যে, তোমার অনুরূপ ধন্য পুরুষ জগতে বিরল। কিন্তু তোমার জ্ঞানের প্রশংসা করতেই হয় যে, তুমি রমণী জাতির আসল রুপটির খবর রাখ; আর তজ্জন্যই বললাম যে, নারীরা ছলনাময়ী, এটা অত্যন্ত সত্য কথা।
এ কারণেই কি ভেবে থাকি জান? আমি মনে করি নারীরা যতই সাধ্বী ও পূণ্যবতী হোক, তাদের চরিত্রে বিশ্বাস করা জ্ঞানের পরিচয় নয়। যেহেতু তাদের হৃদয়ের অন্তস্থলে প্রবেশ করে আসল রূপটি অবহিত হওয়া পুরুষের কাজ নয়; কেননা পুরুষ চঞ্চলামনা, সরল হৃদয়ের অধিকারী। বাহ্যিকরূপে সে মুগ্ধ হয়ে পড়ে। ধৈর্য্য ধরে ভিতরে প্রবেশ করার অবসর তার নেই। এজন্যই দেখি অনেক পুরুষ নারীদের কাছে একান্ত করূণ ভাবে প্রতারিত হয়।
নারী চরিত্র বিশ্লেষণের এ কথাগুলো হামানের কাছে যুক্তিপূর্ণ মনে হলেও কাবুসের কাছে এটা বড় তিক্ত এবং রুক্ষ বোধ হচ্ছিল; যেহেতু তার অন্তরে শুধু একটি কথা উদয় হচ্ছিল, তা এই যে, তার পত্নী আছিয়াও যে রমণী জাতির একজন; সুতরাং সে হামানকে বলল, বন্ধু! তোমার এ কথা রেখে দাও। যে পুরুষ নারীর কাছে প্রতারিত হয় হোক, আমরা তো আর প্রতারিত নই।
ধূর্ত হামান কাবুসের ভাবটি বুঝে নিয়ে নীরব হয়ে গেল। সে আর কোন কথাই বলল না। কিন্তু মনে তার এ বিশ্বাস জন্মিল যে, যে ঔষধ আজ সে প্রয়োগ করল, ধীরে ধীরে এতেই কাজ করবে।
হামানের এ ধারণাটি নির্ভুল ছিল। ঐ দিনটির পর হতে কাবুসের মনে সদা সর্বদা একটি ভাবনা ভেসেই থাকে যে নারীরা ধার্মিকা হতে পারে, সাধ্বী হতে পারে আবার তারা ভ্রষ্টাও তো হয়।
কিছুদিন পর আবার একদা কাবুসের কাছে আসল হামান। এবং যথারীতি দু’বন্ধুর মাঝে কথোপকথান আরম্ভ হল। অনেক আলাপ আলোচনার পর হামান যখন উঠে রওয়ানা হলা, তখন কাবুস বলল, বন্ধু! একটু অপেক্ষা কর! তোমার সাথে আরও কথা আছে।
হামান বলল, এত কথার পরেও আবার কি কথা রইল বন্ধু!
কাবুস বলল, তোমার সে দিনকার কথা-যা তুমি বলে চলেছিল; অর্থাৎ নারী চরিত্রের বিষয় বস্তুটা। তোমার সে দিনকার কথাগুলো আমার অন্তরে একটি প্রশ্নের উদয় ঘটিয়েছে, তা এই যে, নারী যত সাধ্বীই হোক না কেন, সে ঘটনাক্রমে পুরুষের মত বিপথে যেতে পারে কি না?