হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রঃ) – পর্ব ১৯
হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রঃ) – পর্ব ১৮ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
৮. আল্লাহ্ তার প্রিয়জনদের তিনটি স্বভাব দান করেন। যেমন-
(ক) সমুদ্রতুল্য বদান্যতা,
(খ) সূর্যসম উদারতা ও
(গ) ভূতলতুল্য নম্রতা।
৯. আল্লাহ্ যাকে যোগ্য ও উপযুক্ত মনে করেন, তার পেছনে এক ফেরাউন লাগিয়ে দেন।
১০. সৎ-সংসর্গ সৎ-কার্য থেকে উত্তম। আর কু-সংসর্গ –কুকার্য থেকে নিকৃষ্ট।
১১. গৌরব ও মর্যাদার লোভে যে বিদ্যালাভ করে তার থেকে দূরে থাক। কেননা, প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ্র রহমত তার পেছনে দূরে সরে যায়।
১২. মুসলমান হয়ে মুসলমানের ক্ষতি করা কঠিন পাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার চেয়েও মারাত্মক।
১৩. মানুষের মনোভাব এরূপ হতে হবে যে, আমার খারাপ আর কেউ নেই। আমার কোন মূল্যই নেই। এ ধরনের মনোভাব ত্যাগ-তিতিক্ষা, জ্ঞানার্জন ও পুণ্যচর্চা থেকেও উত্তম।
১৪. জ্ঞান অর্জন করতে হবে জ্ঞানী ব্যক্তির কাছ থেকে।
১৫. মানুষ যদি নিজেকে নিজে চিনতে পারত তাহলে কত যে ভালো হত! নিজেকে নিজে চিনতে পারলে পূর্ণ মারেফত অর্জিত হয়।
১৬. দুনিয়ার এমন কী মহিমা আছে যে, মানুষ তাকে ভুলতে পারে না? আল্লাহ্র প্রেমিক যারা, দুনিয়াকে ভুলে যাওয়া তাদের পক্ষে মোটেই কঠিন হয়।
১৭. যারা আল্লাহকে চেনে না, আগুন তাদের শাস্তি দেয়। কিন্তু যারা চেনে, আগুনের পক্ষে তারা অসহ্য।
১৮. যে আল্লাহকে চিনেছে, কারো কাছে তার কিছু চাইবার নেই। কিন্তু যে আল্লাহকে চেনেনি, সে অপরের মুখাপেক্ষী এবং মর্যাদাহীন।
১৯. পূর্ণ মাত্রায় প্রয়াস ও প্রযন্ত করে আল্লাহ্র রহমতের ওপর ভরসা রাখতে হবে।
২০. পার্থিব সম্পদের প্রতি (লোভ করলেও) আকৃষ্ট হতে নেই। দুঃখ-দুর্দশায় হতাশ হতে নেই। কেননা, আল্লাহ্র সামান্যতম নির্দেশে তা দূর হতে পারে।
২১. রিপুর বাসনা যে ত্যাগ করেছে, সে আল্লাহকে পেয়েছে। আর যে আল্লাহ্র নৈকট্য অর্জন করেছে, সব কিছু তার নাগালে এসে গেছে।
২২. নিজেকে যে উত্তম মনে করে, নিজের এবাদাতকে ত্রুটি-হীন ভাবে, নিজের অন্তরকে বিশুদ্ধ বলে মনে করে, সে হিসাবেই মধ্যেই গন্য নয়। আর পার্থিব আশা-আকাঙ্খা দ্বারা যে অন্তরে মৃত, মৃত্যুর পর তাকে লা’নতের কাফন পরিয়ে অপদস্থতায় মৃত্তিকাতলে দাফন করা উচিত। আর যে রিপুর কামনা-বাসনা অবদমিত করেছে, মৃত্যুর পর তাকে প্রশংসার কাফনে আবৃত করে শান্তির ভূমি-তলে দাফন করা চাই।
২৩. যে শিষ্য চীৎকার করে, হা-হুতাশ করে, সে একটি ক্ষুদ্র কুপ সদৃশ্য। আর যে মৌনতাবলম্বন করে সে রত্ন-গর্ভ সমুদ্রের ন্যায়।
২৪. দুনিয়ার আলোড়ন ও নীরবতা সবই আল্লাহ্র কাছ থেকে- এ কথা অন্তরে উপলব্ধি করার নামই হল মারেফত।
২৫. আগামীকালের কথা না ভেবে বর্তমাননিষ্ঠ হওয়াকেই বলে নির্ভরতা।
২৬. যে ধ্যান একাগ্র নয়, তা খুব বেশী হলেও ধ্যান নয়।
হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রঃ) – পর্ব ২০ পড়তে এখানে ক্লিক করুন