হযরত ইব্রাহীম (আঃ) মু’যিযা -২
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) হযরত সারাহকে নিয়ে হিজরতের সময় পথে এক শহরে গিয়ে উঠলেন। ঐ শহরে তখন সে দেশের বাদশাহ অথবা কোন জালেম অবস্থান করছিল। তাকে জানানো হল যে, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এক অনিন্দ্য সুন্দরী মহিলা নিয়ে কোথাও যাচ্ছেন। ঐ মহিলার রূপ লাবণ্যের সাথে অন্য কোন সুন্দরী মহিলারই তুলনা চলে না। ঐ মহিলার পরিচয় জানার জন্য হযরত ইব্রাহীম (আঃ) নিকট লোক পাঠাল। লোকটি মহিলার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) বললেন, সে আমার বোন। লোকটি চলে গেলেন, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) মহিলাকে বললেন, তুমি যেন মানুষের নিকট আমাকে মিথ্যাবাদী বানিও না। আমি সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি যে, তুমি আমার বোন। আল্লাহর শপথ! দুনিয়াতে আমি এবং তুমি ব্যতীত অন্য কোন মূ’মিনের অস্তিত্ব নেই। সুতরাং তুমি আমার দ্বীনি বোন।
এদিকে ঐ জালেম হযরত সারাহকে তার কক্ষে নিয়ে তাঁর সম্ভ্রম হানির চেষ্টা করল। এ সময় হযরত সারাহ অযূ করে দু’রাকাত নামায আদায় পূর্বক আল্লাহ্ পাকের দরবারে আরজ করলেন। হে পরওয়ারদিগার! আমি তোমার উপর এবং তোমার নবীর ওপর ঈমান এনেছি আর এ পর্যন্ত আমি আমার সতীত্ব রক্ষা করে এসেছি। তুমি ঐ কাফেরের হাত থেকে আমাকে রক্ষা কর। হযরত সারার মুনাজাত শেষ হওয়ার সাথে সাথে লোকটি ভূপাতিত হয়ে তাড়পাতে লাগল।
হযরত সারাহ পূনরায় আল্লাহর দরবারে আরজ করলেন, হে আল্লাহ্ এখন যদি সে মৃত্যুবরন করে, তবে লোকেরা বলবে যে আমি তাকে হত্যা করেছি। হযরত সারার এ দোয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে লোকটি সুস্থ হয়ে উঠল। কিন্তু ঐ নরপিচাশ বিপদমুক্ত হওয়ার পর আবারো তার মনে অপরাধবৃত্তি জাগ্রত হল। এবার সারাহ অযু করে মোনাজাত করলেন, হে আল্লাহ! আমি আপানার উপর ঈমান এনেছি। আমি আজীবন আমার সতীত্ব কে হেফাজত করে এসেছি। আপনি এ জালেমের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করুন। লোকটি সাথে সাথে মাটিতে পড়ে তড়পাতে লাগল। হযরত সারাহ এবার ও পুর্বের মত দোয়া করলেন, আয় আল্লাহ্ লোকটি যদি মারা যায়, তবে লোকেরা বলবে যে আমিই তাকে হত্যা করেছি। হযরত সারার দোয়ায় এবার সে বিপদমুক্ত হয়ে লোকজনকে বলল, আল্লাহর কসম! তোমরা আমার নিকট একটা শয়তান নিয়ে এসেছ। তাকে হযরত ইব্রাইমের (আঃ) নিকট পাঠিয়ে দাও এবং হাজেরাকেও সাথে দিয়ে দাও।
হযরত সারাহ জালেমের কবল হতে মুক্ত হওয়ার পর হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর নিকটে এসে বললেন, আপনি কি জানেন, আল্লাহ্ পাক কেমন করে ঐ জালেমকে অপদস্থ করলেন? আল্লাহ্ পাক আমাকে মুক্ত করে খেদমতের জন্য একজন দাসীও দান করেছেন।