দুনিয়া আল্লাহ ওয়ালাদের সেবা করে
শায়েখ শাহ কিরমানী (রহঃ) একদা শিকারে বের হলেন। তৎকালে তিনি কিরমানের বাদশাহ ছিলেন। শিকারের সন্ধান করতে করতে তিনি গভীর জঙ্গলে এসে দেখতে পেলেন বাঘের পিঠে এক যুবক বসে আছে, আর তার আশেপাশে অসংখ্য হিংস্র জন্তু বিচরণ করছে। বাদশাহকে দেখামাত্র জন্তুগুলো তাকে আক্রমণ করতে ছুটে এল। যুবক সাথে সাথে বাধা দিলে তারা আক্রমণ হতে বিরত রইল। এবার সে এগিয়ে এসে বাদশাহকে সালাম করে বলল, হে বাদশাহ! দুনিয়ার মোহে আপনি আখেরাতের কথা ভুলে ভোগবিলাস ও মজাদার আহারের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আল্লাহ পাক আপনাকে দুনিয়ার রাজত্ব ও ধন দৌলত এ জন্য দিয়েছেন যেন আপনি তার সাহায্যে বেশী বেশী ইবাদত করতে পারেন। অথচ ঐ সুযোগ ও সম্পদকে দুনিয়ার ভোগ বিলাসের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করছেন। যুবক যখন বাদশাহকে এ নসীহত করছিল তখন হঠাৎ কোথা হতে এক বৃদ্ধা মহিলা হাতে পানির পেয়ালা নিয়ে তথায় উপস্থিত হল। অতঃপর পেয়ালাটি যুবকের হাতে তুলে দিলে প্রথমে সে নিজে পান করে বাদশাহকে দিল।
বাদশাহ অবশিষ্ট পানি পান করে বলল, জীবনে আমি কখনো এত ঠাণ্ডা ও সুস্বাদু পানীয় পান করিনি। ওদিকে ইতিমধ্যেই ঐ বৃদ্ধ অদৃশ্য হয়ে গেল যুবক এবার বাদশাহকে বলল, যে বৃদ্ধা আমাদেরকে পানি দিয়ে গেল সেই বৃদ্ধাই হল দুনিয়া। আল্লাহ পাক তাকে আমার সেবা ও খেদমতের জন্য নিয়োগ করেছেন। আপনার কি জানা নেই যে, আল্লাহ পাক দুনিয়াকে সৃষ্টি করার পর তাকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, হে দুনিয়া! যে ব্যক্তি আমার ইবাদত না করে সে তোমার সেবা করবে।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আমার ইবাদত না করে তোমার সেবা করবে তার দ্বারা আরো বেশী খেদমত নেবে? যুবকের এ সকল কথা শুনার পর বাদশাহ সাথে সাথে তওবা করলেন। পরবর্তীতে এ বাদশাহ একজন খাটি আল্লাহ ওয়ালা হয়েছিলেন।