►রহস্যময়◄

ছোটবেলা থেকেই আমার ফুলের বাগান করার প্রতি প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল। অনেক সাধনা করে একটা ফুলের বাগানের গর্বিত মালিক হতে পেরেছিলাম।

মূল ঘটনাঃ আমার পড়ার টেবিলটা ছিল জানালার কাছে। একদিন রাতে পড়াশোনা করছি। রাত ১২:৩০টার মতো বাজে। জানালার পাশে ফুলের বাগানে কেমন একটা শব্দ শুনে জানালা দিয়ে আবছা অন্ধকারে তাকিয়ে দেখি, একটা গরু বাগানের মধ্যে ঢুকে ফুলগাছ খাচ্ছে। গরুটার বাড়ির মধ্যে কীভাবে ঢুকল ভেবে পাচ্ছিলাম না, কারণ গেটটা আটকানোই থাকে। যাহোক, টর্চ নিয়ে বের হলাম গরুটাকে তাড়াতে।

বাগানে ঢুকে আলো ফেলে দেখি, বাগানে গরু তো দূরের কথা, একটা ইঁদুর পর্যন্ত নেই! খুব ভয় পেয়ে দ্রুত বাসায় ঢুকে বড় ভাইয়াকে ঘটনাটা বলি। ও তখন আমাকে সঙ্গে নিয়ে সারা বাড়িটা ভালো করে খুঁজে দেখে। কিন্তু কোথাও কিছু নেই। বড় ভাইয়া আমার কথা একেবারে হেসেই উড়িয়ে দেয়।

পরদিন বাগানে ঢুকে খুঁজতে থাকি গরুর পায়ের কোনো চিহ্ন দেখতে পাই কি না। কিন্তু কোনো চিহ্ন নেই। এর কিছুদিন পরে, প্রায় রাত ২টার দিকে বড় ভাইয়া আমার রুমে এসে আমার ঘুম ভাঙায় এবং বলে কিছুক্ষণ আগে ও গরুটাকে দেখেছে। এরপর আরও যা বলে, তা ওর ভাষায় উল্লেখ করছি—

“ঘুম আসছিল না, তাই একটা সিগারেট খেয়ে মুখে পানি নিয়ে কুলি করে জানালা দিয়ে ফেলি। তখন দেখি, একটা কালো গরু ওয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে গরুটার চোখ দিয়ে আগুন ঠিকরে বেরোচ্ছে! তারপর সোজা তোর কাছে চলে আসলাম। রাতটা তোর এখানেই কাটাব। আবার ভাবিস না আমি ভয় পেয়েছি!”

এর পরে আমি ওকে বললাম, “তোর রুমে চল, দেখে আসি গরুটা এখনো আছে কিনা।” ও রাজি হয় না। কাজেই দুজনে শুয়ে পড়ি।

পরদিন খুব সকালে সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোথাও গরুর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া গেল না। বাড়ির গেটও আটকানো ছিল। তাহলে কি রাতের বেলা গরুটা ওয়াল টপকে ঢুকত আর বেরোত!

আমাদের বাসার অনেকেই এরপর গরুটাকে দেখেছে। কিন্তু গরুটা কখনো কারও কোনো ক্ষতি করেনি। আমি আজ প্রায় তিন বছর বাড়ির বাইরে। এর মধ্যে কেউ আর গরুটাকে দেখেনি। বাসার সবাই, বিশেষ করে বড় ভাইয়া দুষ্টুমি করে বলে,

“তুই বাড়ি ছাড়লি, আর গরুটাকেও দেখা যাচ্ছে না! গরুটা তোর মায়ায়ই ওয়াল টপকে বাড়ির মধ্যে ঢুকত। তুইও নাই, আর গরুটাও আসছে না!”

►পান খাওয়া সাদা বুড়ি◄

►ভৌতিক এবং সত্য◄

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *