
তখন ঘড়িটা হাতে নিয়ে দেখলাম।। ঠিক রাত ২.২০ মিনিট।। ঘরের লাইট অফ কিন্তু টেবিল ল্যাম্পটা জ্বলছে।। সামনে পরীক্ষা, তাই ইচ্ছে না থাকলেও এই গভীর রাতে আমাকে পড়তে হচ্ছে।। কেমন যেনও তন্দ্রা আসছিলো।। এইভাবে পড়তে পড়তে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম নিজেও জানি না।। হটাৎ করে কিসের শব্দে যেনও ঘুম ভেঙ্গে যায়।। আমি কিছুটা অবাক হয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম।।
ঘড়ির কাঁটা তখন তিনটা ছুঁই ছুঁই করছে।। আমাদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটা তাল গাছ আছে।। সেই তাল গাছটার পাশের বাসায় কিছুদিন আগে এক ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে।। সেই বাড়ির এক মেয়ে টার রুমে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।। এরপর থেকেই সবাই বলাবলি করছে যে, সেই তাল গাছটার ঐদিকে নাকি কিসব কান্নার আওয়াজ পাওয়া যায়।। আর কেউ যদি গভীর রাতে ঐ গাছের নিচ দিয়ে আসে তাহলে নাকি প্রায়ই একটা মেয়েকে গাছে পা দুলিয়ে বসে থাকতে দেখে।। অনেকে তো ভয়ে ঐ রাস্তা দিয়ে বেশি রাতে আসা যাওয়া করা বন্ধ করে দিয়েছে।। আমার অবশ্য এইসব ব্যাপারে বিশ্বাস ছিল নাহ।। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এইসব ভাবছিলাম, এমন সময় আমার চোখ তাল গাছের দিকে গেলো।। কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভুতি হল।। সাড়া শরীর যেন ঠাণ্ডা হয়ে গেলো।। নিজের চোখ দুটোকে বিশ্বাস করতে পারলাম নাহ।।
দেখলাম, একটি মেয়ে তাল গাছ বেয়ে বেয়ে নিচে নামছে।। তার নামার ভঙ্গিটা অদ্ভুত।। মাথা নিচে দিয়ে পা উপরে দিয়ে নামছে।। এইটুকু দেখে আমি চিৎকার করতে গেলাম।। কিন্তু ভয়ে আমার গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বের হল নাহ।। এর মাঝে অনুভব করলাম কে যেনও আমার কাঁধে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা হাত রাখল।। আমি সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে গেলাম।। সকালে জ্ঞান ফেরার পর মা বললেন,
“কি হয়েছে তোর?? আমি তোর রুমে ঢুকে তোকে না দেখে বারান্দায় গেলাম ডাকার জন্য।। কিন্তু, কাঁধে হাত দিতেই তুই অজ্ঞান হয়ে গেলি যে??” আমি মাকে সব খুলে বলতেই মা বললেন, এতো রাত করে আর বারান্দায় যাবি নাহ।। আমি এখনও অনেক রাত করে পড়ি, কিন্তু রাতে বারান্দায় যাওয়া তো দুরের কথা, আমি জানালা দিয়েও বাইরের দিকে তাকাই নাহ।।