
আমার এক বড় ভাই একদিন গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা দেখে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত তখন ২.৩০-এর মতো হবে। তাদের বাড়ি থেকে একটু পশ্চিম দিকে একটি সামাজিক কবরস্থান আছে। সেখানে গ্রামের অনেকেরই কবর রয়েছে। তিনি আসতে আসতে কবরস্থানের কাছে চলে আসলেন। তখন হঠাৎ কেন যেন খুব ভয় লাগলো।
তিনি একটা কবরের কাছে ভয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। এমন সময় তিনি কোরআন পড়ার আওয়াজ শুনতে পেলেন। খেয়াল করলেন, এটি মসজিদের হুজুরের গলা। তিনি সাহস করে উঁকি মেরে দেখলেন হুজুর কবরস্থানে আছেন। গিয়ে হুজুরের পাশে বসে পড়লেন।
হুজুর তাকে বললেন, “এতো রাতে এখানে কেন এসেছো?”
তিনি বললেন, “আমি বলি খেলা দেখে আসছি। কিন্তু কবরস্থানের কাছে আসার পর খুব ভয় লাগছিল। আপনাকে দেখে উঠে এলাম।”
হুজুর বললেন, “যাও, তুমি বাড়ি চলে যাও।”
তিনি বললেন, “আমার ভয় করছে! আপনি যদি একটু দিয়ে আসতেন?”
হুজুর রাজি হলেন তাকে এগিয়ে দিতে। দুজন মিলে রাতের অন্ধকারে চলতে লাগলেন। কিছু দূর যাওয়ার পর হুজুর বললেন, “যাও, এবার চলে যাও।”
ভাইয়া বললেন, “আর একটু যদি আসতেন?”
এইভাবে হুজুর তাকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিলেন। তিনি তার মাকে ডেকে বললেন, “তাড়াতাড়ি দরজা খুলেন, হুজুর এসেছেন!”
তার মা হুজুরকে ঘরে আসতে বললেন। তিনি পিছন ফিরে দেখলেন—হুজুর নেই!
পরের দিন তিনি মসজিদে গিয়ে হুজুরকে বললেন, “হুজুর, কাল রাতে আমাকে দিয়ে আসার জন্য আপনি আমাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন, কিন্তু ঘরে যাননি কেন? আম্মা খুব রাগ করেছে।”
শুনে হুজুর যেন আকাশ থেকে পড়লেন! বললেন, “কই? আমি তো কাল রাতে বাড়ি থেকেই বের হইনি!”
তখন তিনি হুজুরকে সব খুলে বললেন। এরপর কবরস্থানটির চারদিকে দেয়াল তুলে ঘিরে দেওয়া হলো, যাতে কেউ অজু ছাড়া সেখানে উঠতে না পারে।