হযরত হুদ (আঃ) এর বংশ পরিচয়-তৃতীয় পর্ব
হযরত হুদ (আঃ) এর বংশ পরিচয়-দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আল্লাহ তা’য়ালার তরফ থেকে নবীকে জানিয়ে দেয়া হল, হে নবী! আপনি আপনার সত্তর জন উম্মতকে নিয়ে শহর থেকে বেরিয়ে যান এবং পাহাড়ের এক গুহায় গিয়ে আশ্রয় নিন। আমি অতি শীঘ্র কওমে আদের উপর ঝড় ও বন্যার আজাব প্রেরণ করছি। নবী কওমের নিকট একবার জানিয়ে দিলেন, কওমের লোকেরা নবীর কথায় আস্থাবান হল না। তারা বলল, হে হুদ (আঃ) ! তোমার আল্লাহ ও ঝড় বন্যার আজাব পাঠিয়ে আমাদেরকে দুর্বল করতে পারবে না। আমরা সে কৌশল ঠিক করে রেখেছি। এখন তুমি যদি আমাদের আজাব থেকে রক্ষা পেতে চাও তাহলে নবুয়তীর দাবী ত্যাগ করে নির্বিঘ্নে আমাদের মাঝে বসবাস কর। না হয় অতি সত্তর শহর ত্যাগ করে অন্যত্রে চলে যাও। আগামী দিন যেন তোমাদেরকে আমরা এ শহরে আর না দেখি।
নবী আল্লাহ তা’য়ালার নির্দেশ অনুসারে তার উম্মতগণকে নিয়ে শহর ত্যাগ করলেন। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তিনি পার্বত্য এলাকায় গিয়ে পৌঁছেন। সেখানে তিনি চতুর্দিকে দেখাশুনা করে সর্বশেষে এক গুহায় ঢুকে আশ্রয় নিলেন। নবীর উপর অত্যাচার আল্লাহ কখনই সহ্য করেন না। তাই তিনি কওমে আদের কার্যকালাপের জন্য তাদের উপর গজব চাপিয়ে দিলেন। আল্লাহ তা’য়ালা ফেরেস্তাদিগকে হুকুম দিলেন, কিয়ামতের দিন সিঙ্গা ফুঁকে সৃষ্ট ঝড়ের সামান্য নমুনা কওমের উপর ছেড়ে দাও। ফেরেস্তাগন আল্লাহ তা’য়ালার এ হুকুম পেয়ে সেজদায় পড়ে কান্না কাটি আরম্ভ করলেন এবং বিনয়ের সঙ্গে বললেন, হে পরোয়ারদেগার! আপনি যতটুকু বাতাস প্রবাহের আদেশ দিয়েছেন তাতে পৃথিবীতে মুহূর্তের মধ্যে কয়েক লক্ষ বার প্রলয় ঘটে যাবে। কারন এখন পৃথিবী অত্যন্ত ছোট। কিয়ামতের দিন পৃথিবীকে অনেক বড় করা হবে। তখন সিঙ্গা সুরের প্রবল বাতাস সহ্য করার মত যোগ্যতা প্রদান করা হবে পৃথিবীকে। কিন্তু আজকের পৃথিবী উহার লক্ষ ভাগের এক ভাগ সহ্য করার ক্ষমতা রাখে না। অতএব আপনি দয়া করে এ সংকট আসান করে দিন। ফেরেস্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’য়ালা একটি গরুর নিশ্বাসের বরাবর বাতাস প্রবাহের আদেশ দিলেন। তখন সমস্ত আম্বিয়াদের রুহ একত্রিত হয়ে আল্লাহ তা’য়ালার দরবয়ারে আরজ করে বললেন, হে রহমান রহিম! আপনি যতটুকু বাতাস প্রবাহের আদেশ দিয়েছেন তাতে সমগ্র পৃথিবী একটি জড়পিণ্ডে পরিণত হয়ে যাবে। সেখানে কোন আলো-বাতাস, পাহাড়-পর্বত, নদ নদী কিছুই থাকবে না। সম্পূর্ণ পৃথিবীটা শক্ত একটি পাথরে রুপ নিবে। সেখানে আর কোন দিন কোন প্রাণী বেঁচে থাকতে পারবে না। অতএব আপনি এ আজাবের আদেশ শিথিল করে দিন। আম্বিয়াদের দোয়া কবুল করে আল্লাহ তা’য়ালা আদেশ দিলেন সুচাগ্র পরিমাণ বাতাস প্রবাহ করে দেয়া হোক।