হযরত শামাউন (আঃ)-এর শারীরিক গঠন ও নবুয়ত লাভ-৩য় পর্ব
হযরত শামাউন (আঃ)-এর শারীরিক গঠন ও নবুয়ত লাভ- ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কুটনী রমণী বলল, তোমার সে কথা সত্যই বোনঝী কিন্তু কি বলব, তুমি সৌভাগ্যের দ্বারে উপনীত হয়েও ভাগ্যের দোষে দুঃখিনী হয়েছ। হায়! হায়! কি বলব, লজ্জার কথা একজন নবী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর কি এরূপ কাজ করা খাঁটে।
এবার নবীপত্নী অধিকতর বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন, খালা আপনি কার কথা বলতেছেন। আমার তো কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না।
কুটনী রমণী বলল, বল কি বুনঝী, তুমি কি কোন খোঁজ খবরই রাখ না? তোমার কানে কি তোমার স্বামীর স্বভাব চরিত্রের বিষয় কোন কথাই আসে নি? চারদিকে যে, ছি! ছি! পড়ে গিয়েছে। তবে বাইর হতে কোন খবর নাই আসুক, তুমি নিজেও কোন কিছু অনুভব করতেছ না? সত্যি করে বল তোমার স্বামী কি এখন তোমাকে পূর্বের মত ভালবাসে? আমি তো নিশ্চিতরূপে বলতে পারি কিছুতেই সে তোমাকে পূর্বের মত ভালবাসতে পারে না। কেননা তোমার প্রতি তাঁর মন খারাপ না হলে কেন সে অমুক রমণীর সাথে গোপনে যোগাযোগ স্থাপন করবে? শুধু যোগাযোগই নয় কথাবার্তা একেবারে ঠিক। তিনি সে মহিলাকে বিবাহও করবেন। হায়! কি দুঃখের কথা এমন গুনবতী মহিলার গুনবতী কন্যার ভাগ্যে কি এ পরিণতি ছিল? মাগো! তোমার গুনের কথা কি আমার অজানা আছে? তবুও তোমার মত গুণবতী স্ত্রী ঘরে থাকা সত্ত্বেও যে পুরুষ অন্য নারীর প্রতি লালায়িত হয়। সেই পুরুষের ঘরে না থেকে মৃত্যুবরণ করা অনেক শ্রেয়।
উক্ত কুটনী রমণীর মুখে এসব কথা শুনে নবী পত্নী বললেন, খালা! আপনি এসব কথা কোথায় কার নিকট শুনেছেন? আমার স্বামী অত্যন্ত চরিত্রবান লোক তদুপরি তিনি আল্লাহ্র নবী! সুতরাং তাঁর সম্পর্কে এসব কথা যারা প্রচার করেছে তারা একেবারেই মিথ্যাবাদী। আমি এসব কথা মোটেও বিশ্বাস করি না।
তাঁর এসব কথা শুনে কুটনী রমণী অপূর্ব ভঙ্গিতে তাঁর প্রতি দরদের পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে বলল, হায়রে দুঃখিনী রমণী, যে স্বামীর প্রতি এরূপ অগাধ বিশ্বাস ও ভক্তি পোষন করতেছে আর সে স্বামীই তাঁকে করতেছে অবজ্ঞা ও অবহেলা।
নবী পত্নী ছিলেন একান্ত সরল। তাই তিনি কুটনী রমণীর গভীর ছলনা বিন্দুমাত্র ধরতে পারলেন না। নবী স্বামীর প্রতি যদিও তাঁর গভীর আস্থা ছিল, তবুও উক্ত কুটনী রমণীর কৃতিম আন্তরিকতা ও দরদ প্রদর্শনে ভুলে গেলেন। সুতরাং তিনি এবার কিছুটা ভিন্ন সুরে জিজ্ঞেস করলেন, সত্যি খালা যদি আমার স্বামী এরূপ কার্যেই লিপ্ত হন তবে আমার জীবনটা একেবারেই বৃথা। কি হবে আমার এমন জীবন ধারণ করে?
কুটনী রমণী বলল, তুমি অতি বোকা মেয়ে বলেই এমন কথা বলতেছ। জীবনের বহু মূল্য বোনঝী! তোমার তো কোন দোষ নেই বোনঝী! বিনা দোষে তোমার স্বামী যদি তোমার সাথে এরূপ ব্যবহার করতে পারে তজ্জন্য তুমি জীবন বিসর্জন দিবে কেন? এমন বিশ্বাসঘাতক পুরুষের সাথে তোমারও যাথোচিত আচরণ প্রদর্শন করা উচিত।
নবীপত্নী বললেন, খালা! তাহলে আমাকে কি করতে বলেন?
কুটনী রমণী বলল, হ্যাঁ তোমাকে আমি যথোপযুক্ত কাজই করতে বলব, তোমার জীবন দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ুক, তা আমি চাই না, বরং তোমার জীবন সুখময় হউক, জীবনে পরম শান্তি আসুক আমি তাই কামনা করি। আর এর ভাল ব্যবস্থাও আমার কাছে আছে। সে ব্যবস্থাও আমি এখনি তোমার কাছে বলতেছি। একটু ধৈর্য্য ধর।
নবীপত্নী বললেন, বলুন খালা, শীঘ্র করে বলুন। কি ব্যবস্থায় আমার জীবনে সুখ ও শান্তি আসবে তা আমাকে এখনি বলে দিন।
হযরত শামাউন (আঃ)-এর শারীরিক গঠন ও নবুয়ত লাভ- ৪র্থ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন