হযরত যুলকিফল (আঃ)
পবিত্র কোরআনের সূরা আম্বিয়া ও সূরা সোয়াদ শুধু তাঁর নামই উক্ত হয়েছে। এছাড়া তাঁর সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে কোথাও তার সম্পর্কে আর কোন আলোচনাই হয়নি। সূরা আম্বিয়া আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-
وَإِسْمَاعِيلَ وَإِدْرِيسَ وَذَا الْكِفْلِ ۖ كُلٌّ مِّنَ الصَّابِرِينَ
وَأَدْخَلْنَاهُمْ فِي رَحْمَتِنَا ۖ إِنَّهُم مِّنَ الصَّالِحِينَ
অর্থঃ আর ইসমাইল ইদরীস ও যুলকিফলের কথা স্মরণ কর তাঁরা সবাই আল্লাহর পথে ধৈর্যশীল ছিলেন। এবং আমি তাদেরকে নিজের রহমতে প্রবিষ্ট করিয়েছি; আর নিশ্চিত তাঁরা সকলে নেক্কার ছিলেন। (সূরা আম্বিয়াঃ আয়াত- ৮৫-৮৬)
সূরা সোয়াদ হযরত যুলকিফল (আঃ) সম্পর্কে ইরশাদ করা হয়েছে-
وَاذْكُرْ إِسْمَاعِيلَ وَالْيَسَعَ وَذَا الْكِفْلِ ۖ وَكُلٌّ مِّنَ الْأَخْيَارِ
অর্থঃ আর স্মরণ করুন ইসমাইল, আলইয়াসা ও যুলকিফলের ঘটনাবলী; এবং তাঁরা সবাই ছিলেন নেক বান্দাদের দলভুক্ত। (সূরা- সোয়াদঃ আয়াত-৪৮)
আম্বিয়ায় (আঃ) সম্পর্কে অবহিত হওয়ার আরেক উৎস হচ্ছে সহীহ হাদিস গ্রন্থ। কোন হাদিসেও যুলকিফল (আঃ) সম্পর্কে কোন আলোচনাই পাওয়া যায়নি। কাজেই হযরত যুলকিফল (আঃ) সম্পর্কে কেবল এতটুকু বুঝা যায় যে তিনি আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক মনোনীত সম্মানিত নবী ছিলেন- কোরআনের এ সংক্ষিপ্ত বর্ণনা থেকে বলা যায়, হযরত যুলকিফল (আঃ) একজন বনী ইসরাইলী নবী ছিলেন। আর বনী ইসরাইলী নবীদের সম্পর্কে অবগতি লাভের জন্য তাওরাত এক প্রধানতম উৎস। যদিও পরবর্তীকালে ইহুদী পণ্ডিতদের তাওরাতে অত্যন্ত আপত্তিকর পরিবর্তন পরিবর্ধন সাধিত হয়েছে।
তাফসীরবিদ হযরত মুজাহিদ (রঃ) এর বর্ণনায় যে তথ্য পাওয়া যায় তাতে তার পূর্ববর্তী নবী আলাইয়াসা (আঃ)-এর নির্বাচিত খলীফা বা প্রতিনিধি ছিলেন। ওলামায়ে কেরাম যুলকিফল (আঃ) -এর নবুয়ত প্রসঙ্গে কোন স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে পারেননি। এর কারণ কোরআন মাজিদের দুটি সূরা সোয়াদ ও সূরা আম্বিয়ায় তার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে, সেখানে তাকে সুস্পষ্টভাবে নবী বলা হয়নি; বরং ইসমাইল, ইদরীস ও আলাইয়াসা (আঃ)-এর সাথে পুণ্যশীল লোকেরাই আম্বিয়ায়ে কিরামের অনুসারী অনুগত হতেন। কোরআনের বর্ণনাভঙ্গী উপস্থাপন রীতি দৃষ্টে এতটুকু অনুমতি হয় যে, তিনি আল্লাহর প্রেরিত নবী ছিলেন এবং কোন জনগোষ্ঠীর হেদায়েতের জন্য তাঁকে মনোনীত করা হয়েছিল।
তিনি বনী ইসরাইল বংশদ্ভুত ছিলেন। তাঁর সময়কালে এমন বিশেষ কোন ঘটনা সংঘটিত হয়নি যা সাধারণ তাবলীগ ও হিদায়েতের চাইতে নিজের মাঝে বিশেষ কোন উপদেশ বা শিক্ষাণীয় বিষয় ধারণ করতে পারে। তাই কোরআন মাজীদ স্বীয় মোজেজাপূর্ণ উপস্থাপনা ভঙ্গীতে শুধু তাঁর নাম উল্লেখ করেছে। তাঁর অবস্থার বিস্তারিত আলোচনা প্রবৃত্ত হয়নি। (কাসাসুল কোরআন প্রণেতা হযরত মাওলানা হেফজুর রহমান সেওহারবী)
হযরত মাওলানা হেফজুর রহমান সেওহারবী সাহেবের উক্ত অভিমতের ভিত্তিতে বলা যায়- হযরত যুলকিফল (আঃ) একজন নবী ছিলেন।