হযরত যুনযুন মিসরী (রঃ) – শেষ পর্ব
হযরত যুনযুন মিসরী (রঃ) – পর্ব ১৪ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এর অল্পদিন পরেই তিনি রোগ-যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁর শিয়রে উপস্থিত ছিলেন ইউসুফ ইবন হুসাইন নামে এক ব্যক্তি। তিনি কিছু জানতে চাইলে হযরত যুনযুন (রঃ) শেষ বারের মতো বললেন, এখন আমি আল্লাহর অনুগ্রহে আত্নবিষ্মৃত হয়ে আছি। তুমি আমাকে অন্য দিকে নেবার চেষ্টা করো না। এই তাঁর শেষ কথা। এটি বলার পরেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শোনা যায়, তাঁর ওফাতের রাতে সত্তরজন ওলী স্বপ্নযোগে দেখেন, রাসূলে কারীম (সাঃ) এসে বলছেন, আল্লাহর বন্ধু যুনযুন মিসরী মহাযাত্রার পথে, তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হয়েছি।
মৃত্যুর পর দেখা যায়, তাঁর পেশানীতে লেখা আছে-ইনি আল্লাহর বন্ধু। আল্লাহর প্রেমেই মৃত্যুবরণ করলেন। ইনি শাহাদত প্রাপ্ত। আল্লাহর তরবারিতে শাহাদাত লাভ করেছেন।
তাঁর পবিত্র লাশ যখন কবরস্থানের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন প্রচণ্ড রোদের তাপ। শোনা যায়, তখন নাকি অসংখ্য পাখী মাথার ওপর পাখা বিস্তার করে তাঁর মরদেহ ছায়াচ্ছন্ন করে রাখে।
মরদেহ বহনের পথে এক মুয়াযজিন আজান দিচ্ছিলেন। তিনি যখন বললেন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ তখন ঐ মৃত দেহ শাহাদত আঙ্গুল উঠিয়ে আল্লাহর একত্ব ও রাসূলে কারীম (সাঃ) এর রেসালতের সাক্ষ্য প্রদান করেন। তা দেখে সবাই কেঁদে উঠল। বলতে লাগল, তিনি মারা যাননি। জীবিত আছেন। তারপর লাশ রেখে দেওয়া হল মাটির ওপর। বহুক্ষণ অতিক্রান্ত হল। কিন্তু জীবনের কোন লক্ষণ দেখা গেল না। আর শাহাদত আঙ্গুলটিকে বহু চেষ্টা করেও নামানো গেল না।
অবশেষে এভাবেই তাঁকে দাফন করা হয়। যারা তাঁর প্রতি বিরূপ ধারণা পোষণ করত, তারা এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে খুব লজ্জা অনুভব করল। মিসরের এই মহান সন্তান মানুষের মর্যাদা চির-উন্নত করে চলে গেলেন।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া