হযরত যুনযুন মিসরী (রঃ)- পর্ব ১১

হযরত যুনযুন মিসরী (রঃ) – পর্ব ১০ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

হযরত যুনযুন (রঃ)-এর অমূল্য উপদেশঃ

১। চোখের পর্দাই সেরা পর্দা। শরীয়ত-বিরোধী কাজের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপে মানুষকে তা বাধা দেয়।

২। খাদ্য-পূর্ণ উদরে কখনও জ্ঞান ও বুদ্ধির ঠাঁই হয় না।

৩। যে তওবার পর মানুষ পুনরায় পাপ কাজে লিপ্ত হয়, সে তওবা মিথ্যা।

৪। পরহেজগারী রুপ-ধনে যাঁর অন্তর পূর্ণ, তিনিই বড় ধনবান।

৫। অল্প আহারে স্বাস্থ্যের উন্নতি আর অল্প পাপে আত্নার ক্ষতি সাধিত হয়।

৬। বিপদে ধৈর্যধারণ করা খুব বড় কথা নয়। বরং বিপন্ন অবস্থায় সন্তুষ্ট থাকাই হল বাহাদুরী।

৭। যার মনে আল্লাহ-ভীতি বিদ্যমান, সে সৎ পথ লাভ করে। তার বিপরীত ব্যক্তি পথ-ভ্রষ্ট। আর সাধকের সাধনাকে যারা ভীতির চোখে দেখে, তাদের ওপর আল্লাহর গজব পতিত হয়।

৮। ছয়টি কাজ মানুষের সর্বনাশের কারণঃ

ক। সৎ কাজ না করা,

খ। শয়তানের অনুগত হওয়া,

গ। মৃত্যুকে নিকটবর্তী না করা,

ঘ। আল্লাহর খুশীর দিকে লক্ষ্য না রেখে মানুষকে খুশী করার চেষ্টা করা,

ঙ। প্রবৃত্তির তাড়নায় নবীজীর নীতি বর্জন করা

চ। জ্ঞানী সাধকগণের দোষ-ত্রুটিকে বড় করে দেখা।

৯। মারেফত হাসিল করার জন্য আল্লাহর সঙ্গে সেই বন্ধুত্ব স্থাপন করতে হবে, যে বন্ধুত্ব স্থাপন করেছিলেন হযরত সিদ্দীকে আকবর (রঃ) মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সঙ্গে।

১০। প্রেমের অমিয় সুধা পান করার শর্ত হল, প্রেমিকের মন থেকে ভয়-ভীতি দূর করে, তা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে প্রেমের পথে অগ্রসর হওয়া।

১১। বিরহীর কাছে ভয়ের আগুন হল সমুদ্রের কাছে এক ফোঁটা পানির মতো।

১২। বন্ধু বিচ্ছেদের চেয়ে হৃদয়-বিদারক এ জগতে আর কিছু নেই।

১৩। তিনিই প্রকৃত সাধক যিনি পরিস্থিতি অনুযায়ী কথা বলেন। তাঁর মধ্যে যা নেই, তেমন কথা তিনি বলেন না। তিনি যখন গরীব থাকেন তখন তাঁর কাজগুলোই প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ করে। প্রার্থিত বিষয়বস্তুর প্রতি তাঁর বৈরাগ্যই প্রকৃত অবস্থা।

১৪। তত্ত্ব-জ্ঞানী আল্লাহর ভয়ে সদা-সর্বদা ভীত। কারণ, তিনি প্রতি মহূর্তে আল্লাহর কাছে উপস্থিত থাকেন।

১৫। প্রকৃত তত্ত্ব-জ্ঞানী হতে হলে আল্লাহ-ভীতি থাকতে হবে। অহঙ্কারী বা আত্নাভিমানীকে আরেফ বা তত্ত্ব-জ্ঞানী বলা চলে না। আল্লাহ বলেন, তাঁর দাসদের মধ্যে আলেমগনই তাঁকে সর্বাধিক ভয় পায়।

১৬। আরেফগণের অবস্থা সব সময় একরূপ থাকে না। অদৃশ্য ইঙ্গিতে তা প্রতি মুহূর্তে পরিবর্তিত হয়। কাজেই তিনি একই অবস্থায় থাকতে পারেন না।

১৭। মারেফতের জ্ঞানে সমৃদ্ধ বলে আরেফগণের জ্ঞান সবচেয়ে বেশী। মারেফত তিন প্রকার। যেমন-

ক। আল্লাহর তৌহীদ – তত্ত্ব

খ। যুক্তি-তত্ত্ব ও তৌহীদ সমর্কিত গুণাবলীর তত্ত্ব।

১৮। যিনি অন্তদৃষ্টি দিয়ে আল্লাহকে দেখেন। আল্লাহ তাঁর অন্তরে এমন মারেফত-তত্ত্ব প্রকাশ করেন, যা দুনিয়ার আর কারো কাছে প্রকাশিত হয় না।

১৯। মারেফতের আসল বস্তু হল, আল্লাহর গুপ্ত তত্ত্বের সন্ধান লাভ। যার ফলে নূরে এলাহীর সূক্ষ্ণ – তত্ত্ব প্রকাশিত হয়। সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত যুনযুন মিসরী (রঃ) – পর্ব ১২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।