হযরত মূসা (আঃ) কে হত্যার গোপন পরিকল্পনা

আল্লাহ পাক মূসাকে জ্ঞান বিজ্ঞানে পারদর্শিতা দান করেছেন। আর প্রত্যেক নবীই নবুয়ত লাভের পূর্বে উচ্চ মার্গের ওলী হয়ে থাকেন। তাই মহান স্রষ্টা সম্পর্কীয় জ্ঞান তার ছিল। তিনি জানতেন যে মহান স্রষ্ঠা সমগ্র জগতের রব। অথচ ফেরাউন নিজেকে রব বলে দাবী করছে। হযরত মূসা (আঃ) এটা সহ্য করতে পারলেন না। তাই তিনি আসল রব সম্পর্কে মানুষের সাথে ধীরে ধীরে আলাপ আলোচনা করতে লাগলেন।

সত্য দ্বীন সম্পর্কে তাদেরকে অবগত করা শুরু করলেন। ধীরে ধীরে কিছু সংখ্যক লোক তাঁর অনুসারী হয়ে পড়ল। ইবনে ইসহাকের বর্ণনা হতে জানা যায় যে, হযরত মূসা (আঃ) দ্বীন প্রচার শুরু করার পর কিছু লোক তাঁর অনুসারী হওয়ার পর ফেরাউনের নিকট এ খবর পৌঁছাল যে, হযরত মূসা (আঃ) ভিন্ন দ্বীন প্রচার করছেন।

আর তাকে প্রতিপালক স্বীকার না করে অন্য কাউকেও প্রতিপালক স্বীকার করার প্রতি লোকদের আহ্বান করছেন। এ সংবাদ জানতে পেরে ফেরাউন তার শত্রু হয়ে পড়ল এবং তাঁকে হত্যা করবার জন্য গোপন কৌশল অবলম্বন করল।

মূসা আছিয়ার অত্যন্ত আদরের পাত্র। আছিয়া যদি এ পরিকল্পনার কথা জানতে পারে তবে যে কোন মূল্যে মূসাকে রক্ষা করবে। কিন্তু ফেরাউনের এত সতর্কতার পরও তার গোপন পরিকল্পনা প্রকাশ হয়ে পড়ল। আর আছিয়া ফেরাউনের অসৎ পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে ফেরাউনকে বলেন, আপনি এ কি করতে চাচ্ছেন? এত আদর সোহাগ দ্বারা যে সন্তান বড় করলাম অন্যের পরামর্শে আজ তাঁকে হত্যা করে ফেলার জন্য? তা কিছুতেই হতে পারে না? কতগুলো লোক তাঁর শিশুকাল থেকেই তাঁর পিছনে লেগে আছে।

তারা চায়না আপনার উত্তরাধিকারী হোক। তাই তারা সুপরিকল্পিতভাবে চাচ্ছে কিভাবে আমাদের কোল খালি করা যায়। ইতোপূর্বেও তাঁরা তাকে অনর্থক অপবাদ দিয়েছিল। পরীক্ষা নিরীক্ষা ও যাচাই বাছাইয়ের পর তাদের অপবাদের অসারতা প্রামাণিত হয়েছে। আবার তারা আরেক নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ফেরাউন আছিয়ার বক্তব্য শুনে অনেকটা নমনীয় হয়ে আসল এবং বলল যে, আছিয়া! বিষয়টি সম্পূর্ণ অসত্য বলে উড়িয়ে দেয়া যায় না।

কিছুদিন ধরে তাঁর আচার আচরণে তাদের দাবীর সত্যতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। আছিয়া বলেন, এটা কোন ব্যাপারই নয়! কেননা যৌবনকালে মানুষ কিছু এ দিক ওদিক করেই থাকে। বয়স বৃদ্ধির সাথে তা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। তবে যদি মনে করেন যে, সে শহরে থেকে জনগণের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তা হলে শহর থেকে দূরে কোন গ্রাম্য পরিবেশে তাকে থাকতে দিন যাতে শহরের মানুষ তাঁর প্রভাব মুক্ত থাকে।

ফেরাউন দেখল যে, আছিয়ার বক্তব্য যুক্তিপূর্ণ। অধিকন্তু আছিয়া তার সুখ দুঃখের সাথী। তাই আছিয়ার প্রস্তাবকে মেনে নেয়া উত্তম। কারণ একদিক দিয়ে স্ত্রীর মন রক্ষা হল আবার মূসার কর্মকান্ড হতে শহরবাসীও নিরাপদ রইল। তাই ফেরাউন মূসা (আঃ) কে শহরের বাইরে থাকার সুবন্দবস্ত করে দিল।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।