হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ২

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

দ্বিতীয় আকাশে আরোহণ করে দু’খালাত ভ্রাতা হযরত ঈসা ও ইয়াহইয়া (আঃ) কে দেখতে পান। হযরত জিব্রাইল (আঃ) তাঁদের পরিচয় করিয়ে বললেন, তাদেরকে সালাম কর। রাসূলে পাক (সাঃ) তাঁদেরকে সালাম দিলেন। তাঁরা সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, নেক ভ্রাতা ও নেক নবীকে মারহাবা। অতঃপর তাঁর জন্য বরকতের দোয়া করলেন। এভাবে প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে একের পর এক সাত আসমানে অতিক্রম করলেন। তৃতীয় আকাশে হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। হযরত ইউসুফের রূপের বর্ণনা দিতে যেয়ে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন। আমি ইউসুফ (আঃ) কে এমন সুন্দর দেখেছি যে, তিনি কুল মাখলুকাতের মধ্যে অর্ধেক সৌন্দর্যের অধিকারী। চতুর্থ আকাশে হযরত ইদ্রীস (আঃ)-এর সঙ্গে পঞ্চম আকাশে হজরত হারুন (আঃ)-এর সঙ্গে এবং ষষ্ঠ আকাশে হযরত মূসা (আঃ)-এর সঙ্গে এবং সপ্তম আকাশে হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়।

ষষ্ঠ আকাশে তিনি ছিদরাতুল মুনতাহা বৃক্ষের জড় ও কাণ্ড দেখতে পান যা সপ্তম আকাশে ভেদ করে ডালা বিস্তার করেছে। যখন ষষ্ঠ আকাশ হতে তিনি উর্ধ্বগগনে যাত্রা শুরু করেন তখন মূসা (আঃ) ক্রদন করছিলেন। তাঁকে ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উত্তর করেন, আমি এ জন্য কাঁদতেছি যে, আমার পরে একজন নওজোয়ান পয়গম্বর প্রেরিত হয়েছেন, তাঁর উম্মতের জান্নাতী লোকের সংখ্যা আমার উম্মতের জান্নাতী সংখ্যা হতে অনেক গুণ বেশী। হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, হাশরের দিন জান্নাতীগণের সর্বমোট একশত বিশ কাতার হবে। তন্মধ্যে এক লাখ বা দুই লাখ চব্বিশ হাজার পয়গম্বরগণের উম্মত ৪০ চল্লিশ কাতার এবং মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর উম্মত হবে ৮০ (আশি) কাতার।

সপ্তম আকাশে হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। তিনি বায়তুল মামুরের দরজায় হেলান দিয়ে উপবিষ্ট ছিলেন। হযরত জিব্রাইল (আঃ) বললেন, তিনি হযরত ইব্রাহীম। তাঁকে সালাম করুন। রাসূল (সাঃ) তাঁকে সালাম দিলেন। হযরত ইব্রাহীম সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, নেক সন্তান ও নেক নবীকে মারহাবা। বায়তুল্লাহ শরীফের বরাবর প্রত্যেক আকাশে একটি করে আল্লাহর ঘর আছে। সপ্তম আকাশে অবস্থিত বায়তুল মামুর দুনিয়ার বায়তুল্লাহর বরাবর অবস্থিত। তা ফেরেশতাগণের এবাদতগাহ। প্রত্যেক দিন সকালে সত্তর হাজার ফেরেশতা ঐ ঘরের আগমন করে আল্লাহর এবাদত করে থাকে। সূর্যাস্তের পূর্বে তাঁরা চলে যান এবং নতুন সত্তর হাজার ফেরেশতার আগমন হয়। তাঁরা ফজরের সময় চলে যান। আবার নতুন সত্তর হাজার আগমন করেন। কেয়ামত পর্যন্ত এ নিয়ম চলতে থাকবে। কিন্তু কোন একজন ফেরেশতা দ্বিতীয়বার আসার সুযোগ পাবে না।

রাসূল (সাঃ) সেখানে স্বীয় উম্মতের লোকজনকে দু’দলে বিভক্ত দেখতে পান। একদলের চেহারা উজ্জ্বল এবং অপর দলের চেহারা মলীন। তিনি বায়তুল মামূরে প্রবেশ করলেন। উজ্জ্বল চেহারা বিশিষ্ট দলও তাঁর সঙ্গে মসজিদে প্রবেশ করল। তিনি তাদেরকে নিয়ে দু’রাকাত নামাজ পড়লেন।

কোন কোন বর্ণনায় আছে ষষ্ঠ আসমানে ছিদরাতুল মুনতাহার মূল কাণ্ড দেখতে পান এবং সে বৃক্ষের জড় হতে চারটি নহর প্রবাহিত হয়েছে। দুটি উপরের দিকে এবং দুটি নিচের দিকে। ঊর্ধ্বগামী নহর দুটি জান্নাতের দুটি নহর এবং নিম্নগামী নহর দুটি হচ্ছে নীল দরিয়া ও ফোরাত নদী। হাদিসে আরও বর্ণিত আছে, যাদের পেট প্রাসাদের ন্যায়। তাদের পেটসমূহের বহু অজগর সাপ রয়েছে। ঐ গুলো পেটের বের হতে দৃষ্টিগোচর হয়। রাসূল (সাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, তারা কারা? হযরত জিব্রাইল (আঃ) বললেন, তারা সুদখোর।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।