হযরত মুছা (আঃ) কে অলৌকিক ঘটনা প্রদর্শন-পর্ব ১
একদা এক জনসভায় হযরত মুছা (আঃ) ভাষণ দিচ্ছেলন। তিনি তার ভাষনে ইসলামের বিধি-বিধান ও তৌরাত কিতাবের মর্ম বর্ণনা করছিলেন। বিশেষ করে তার জীবনে অসংখ্য মো’জেযা দর্শন লাভ করা পরেও মানুষ আল্লাহর তায়ালার প্রতি ঈমান আনতে তৎপর হল না বলে তিনি খুবই দুঃখ প্রকাশ করলেন, ভবিষ্যতে এ জাতির অদৃষ্টে অনেক দুঃখ কষ্ট আছে বলে জাতিকে সতর্ক করে দিলেন, জনসভার মাঝে থেকে একজন লোক দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর নবী! আপনার জীবনে যতগুলো অলৌকিক ঘটনার সমাবেশ ঘটেছে এবং আপনার সাথে আল্লাহ তায়ালার সরাসরি কথোপকথন করছেন তার নজির আর কোন নবীর জিবনে দেখা যায় না। অতএব আমরা মনে করি বর্তমান জামানায় আপনার চেয়ে অধিক জ্ঞানি ও বুদ্ধিমান ব্যক্তি আর কেউ নেই।
হযরত মুছা (আঃ) লোকটির কথা শুনে নিরব থেকে বললেন, হ্যাঁ তা বটে। হযরত মুছা (আঃ) এর হ্যাঁ বাচক কথাটি আল্লাহর নিকট খুব পছন্দীয় হল না তাই তিনি নবীকে অহি মারফত জানালেন, হে নবি! তুমি নিজেকে সর্বাধিক জ্ঞানি মনে করে ভুল করেছ। আমি তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানি ব্যক্তি পৃথিবীতে জীবিত রেখেছি। তুমি কি জান আমি তাকে অধিক জ্ঞান দান করছি। তোমার যদি ইচ্ছে হয় তবে চলে যাও মজমাউল বাহরাইন, দুই সাগরের সঙ্গমে স্থলে গিয়ে দেখ। সেখানে আমার এক বান্দা আছে। সে এমন জ্ঞানের অধিকারি তুমি কল্পনা করতে পারবে না।
হযরত মুছা (আঃ) আল্লাহ তায়ালার ফরমান শুনে অতি কাতরভাবে বললেন হে প্রভু! তোমার সৃষ্টি অপার। তাই এই জ্ঞানি ব্যক্তির সাথে দেখা করার সৌভাগ্য আমাকে দান কর। আল্লাহ তায়ালার পক্ষে নবীকে জানান হল, হে নবী! দুই সাগরের সঙ্গমে চলে যাও। সেখানে একটি ময়দানে যে থাকে সে পথহারাকে পথ প্রদর্শন করে। মৃত্যুকে বাচায় এবং জিন্দা কে মারে এবং বহু অলৌকিক ঘটনার অবতারণা করতে সক্ষম।
হযরত মুছা (আঃ) ইউসাকে ডেকে বললেন, চল আল্লাহ তায়ালার কুদরত দেখার জন্য বাহরাইন যাব। যতদিন যতরাত আমাদের চলতে হয় আমরা পিছপা হব না। তবে পথিমধ্যে যাবার জন্য কিছু মাছ ভাজি করে নিয়ে নাও যেন ক্ষুধা পেলে তা খেয়ে ক্ষুধা নিবারন করে পারি। হযরত ইউসা (আঃ) নবীর আদেশে কিছু মাছ ভাজি করে থলে ভর্তি করে নিল। হযরত মুছা (আঃ) এবং হযরত ইউসা (আঃ) দু,জনে পথ চলতে লাগলেন। দুইদিন পথ চলার পর তারা মজমাউল বাহারাইনে উপস্থিত হলেন। মজমাউল বাহারাইন বলতে বিশেষজ্ঞদের মতে লোহিত সাগর ও ভুমধ্যসাগরের যে একটি সরু সংযোগ রয়েছে তাকেই বুঝান হয়েছে। নবীদ্বয় সেখানে পৌঁছে একটু বিশ্রাম নিলেন।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী
হযরত মুছা (আঃ) কে অলৌকিক ঘটনা প্রদর্শন-পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন