হযরত ফাতিমার (রাঃ) জীবনের গল্প-প্রতিবেশির হক

২ জমাদিউস সানি ছিল, বেহেশতের নারীদের নেত্রী, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদরের দুলালী হযরত ফাতিমা (রাঃ)-এর শাহাদাত বার্ষিকী। ফাতিমা নামটির অর্থ হলো, সকল প্রকার পাপ ও অপবিত্রতা থেকে মুক্ত। ইমাম জাফর সাদেক (রাঃ) বলেছেন, হযরত ফাতিমা (রাঃ) যেহেতু যাবতীয় নৈতিক ও চারিত্রিক অপবিত্রতা থেকে দুরে ছিলেন তাই তাকে ফাতিমা বলা হয়েছে। হযরত ফাতিমা ছিলেন সকলের অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ। আমরা হযরত ফাতিমার জীবন থেকে নেয়া একটি ঘটনা প্রচার করেছি।

বন্ধুরা, তোমরা নিশ্চয়ই জানো যে, একজন মুসলমানের প্রতি অন্য মুসলমানের অনেক অধিকার রয়েছে। সেসব অধিকার কিন্তু আমরা প্রথমেই প্রতিবেশীর ব্যাপারে আদায় করতে পারি। তাহলে ইসলামের নির্দেশ যেমন মানা হবে তেমনি প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্কও বৃদ্ধি পাবে। এসব অধিকার বা কর্তব্যের কয়েকটি হলো, প্রতিবেশীকে সালাম দেওয়া, তার সালামের উত্তর দেয়া, কেউ অসুস্থ হলে তার সেবা-সুশ্রুষা করা, বিভিন্ন উপলক্ষে তাকে দাওয়াত দেয়া এবং তার দাওয়াতে অংশ গ্রহণ করা ইত্যাদি।

প্রতিবেশীর দুঃখ-কষ্টে যেমন সহমর্মিতা দেখাতে হবে তেমনি তার ভাল কোন সংবাদ যেমন-সন্তান জন্ম নিলে, তার সন্তান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে, কারো বিয়ে হলে এবং এ জাতীয় উপলক্ষে তাকে মোবারকবাদ জানানো এবং বরকতের দোয়া করতে হবে। আমরা যদি নবী পরিবারের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো তাঁরা নিজের পরিবারের চেয়ে প্রতিবেশীদের প্রতি বেশী লক্ষ্য রাখতেন, তাদের মঙ্গলের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করতেন।

এ সম্পর্কে এবারে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা শোনাচ্ছি।

“প্রতিদিন শেষ রাতে ছেলেটির ঘুম ভেঙ্গে যায়। অবাক হয়ে লক্ষ্য করে মা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ছেন।”

ছেলেটিও অভ্যাসবশত বিছানা থেকে উঠে ওজু করে মায়ের পাশে নামাজে দাঁড়ায়। মায়ের সাথে নামাজ পড়ার সময় সে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করে। মা নামাজ শেষে মোনাজাত করছেন, কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে দোয়া করছেন প্রতিবেশীদের মঙ্গলের জন্য, তাদের গোনাহ মাফের জন্য। কিন্তু নিজেদের জন্য কিছুই প্রার্থনা করছেন না!

এভাবে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর ছেলেটি তার কৌতূহল দমিয়ে রাখতে পারলো না। সে মাকে জিজ্ঞেস করলো, “মা, মোনাজাতের সময় তুমি কেবল পাড়া-প্রতিবেশীর মঙ্গল কামনা করো। তোমার নিজের জন্য বা আমাদের কারও জন্য তো দোয়া করো না! এর কারণ কি?”

স্নেহময়ী মা এবার ছেলেকে আদর করে বুকে টেনে নিয়ে বললেন, বাছা আমার! আমি কেন ওরকম করি? তুমি জেনে রেখো, প্রতিবেশীর হক আগে। প্রতিবেশীর মঙ্গল কামনা করলে, তাদের খোঁজখবর নিলে আল্লাহ তায়ালা খুব খুশী হন। তাই আমি তাদের জন্য দোয়া করি। তবে তোমাদের জন্যও দোয়া করি। তবে প্রতিবেশীর অধিকার আগে, এটা মনে রাখবে-কেমন?

বন্ধুরা! তোমরা নিশ্চয়ই এই মহিয়সী মা ও তাঁর ছেলেটির পরিচয় জানতে চাচ্ছেন! হ্যাঁ বলছি, এই মহিয়সী মা ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কন্যা হযরত ফাতিমা (রাঃ) এবং যে ছেলেটির কথা বলা হলো তিনি হলেন ইমাম হাসান। হযরত ফাতিমারই আদরের সন্তান।

অতি বাড়াবাড়ির পরিণতি

মেট্রোরেল সুড়ঙ্গে ভূত ধরা পড়েছে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *