হযরত দাউদ (আঃ) এর মো’জেযা-২য় পর্ব
হযরত দাউদ (আঃ) এর মো’জেযা-১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এক নবীর পক্ষে অন্য নবীর মান-মর্যদা সম্পর্কে অবগত হওয়া অসম্ভব কিছু নয়। সে হিসাবে হযরত দাউদ (আঃ) যখন হযরত ইব্রাহীম হযরত ইসমাইল ও হযরত আইউব (আঃ) এর উচ্চ মর্যাদার খবর অবগত হলেন। তিনি তখন আল্লাহত দরবারে নিজের মান মর্যদার উন্নতির জন্য আবেদন করলেন। আল্লাহর পক্ষে তাকে অবগত হল যে, মান মর্যদা উন্নতির জন্য কঠিন পরীক্ষা দিত হয়। তখন হযরত দাউদ (আঃ) আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে বললেন, হে দয়াময়! আমাকে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন করার ক্ষেত্রে আপনি যে কোন পরীক্ষার সম্মুখীন করুন। আমি তা স্বানন্দে কবুল করে নিব এবং আপানার রহমত যদি আমার সাথে থাকে তবে আমি সে পরিক্ষায় অবশই উত্তির্ন হব। আল্লাহত তায়ালা হযরত দাউদ (আঃ) এর ফরিয়াদ কবুল করলেন এবং তাকে পরীক্ষার সম্মুখীন করে দিলেন।
একদা হযরত দাউদ (আঃ) নিজ এবাদাতখানায় বসে ইবাদাত করছিলেন। এমন সময় একটি নতুন ধরনের পাখি এসে তাঁর ইবাদাত খানায় ঢুকক। পাখিটি দেখতে কবুতরের ন্যায় ছিল। তাঁর গায়ের রং ছিল সোনালী বর্ণের। তাঁর পাখা পা ঠোট ছিল সৌন্দর্যমণ্ডিত। হযরত দাউদ (আঃ) পাখিটি দেখে অবাক হয়ে তাঁর দিকে তাকিয়ে রইলেন। পাখিটি তাঁর নিকট আসল। তখন তিনি পাখিটি ধরার জন্য অগ্রসর হলেন। পাখিটি তখন একটু দূরে সরে গেল। তিনি আর একটু অগ্রসর হলেন। পাখিটি আর একটু দূরে সরে গেল।
এভাবে হযরত দাউদ (আঃ) অগ্রসর হচ্ছিলেন আর পাখিটিও খানিক দূরে সরে সরে তাকে ঘর থেকে বের করে নিল। অতপর হযরত দাউদ (আঃ) পাখিটি ধরার জন্য বে খায়াল হয়ে পাখির পিছনে ছুটতে আরম্ভ করলেন। এভাবে অগ্রসর হতে হত তিনি পাখির পিছনে বহুদুর চলে গেলেন। রাস্তা জঙ্গল ও পাহাড় অতিক্রম করে তিনি অন্য রাজ্যে ঢুকে পড়ল। হযরত দাউদ (আঃ) যে এত দূরে এসে গেছেন তা তিনি আদৌ অনুমান করতে পারেন নি। তিনি যখন সুন্দর ফুল বাগানের মাঝে এসে পৌঁছলেন তখন পাখিটি উধাও হয়ে গেল। তখন তাঁর চেতনা ফিরে এল। তিনি নিজেকে অসহায় ভাবতে লাগলেন।
কোথায় কিভাবে তিনি এসেছেন কিছুই তাঁর স্বরনে আসছে না। তিনি সেখানে অনেক ক্ষন দাড়িয়ে রইলেন। অতপর একজন মালির সাথে তাঁর দেখা হল তিনি যখন মালি কে জিজ্ঞাসা করলেন, এ বাগানের মালিক কে? মালি উত্তর দিল এ বাগানের মালিক একজন মহিলা। তাঁর নাম বতশা আফিয়া। তিনি বাগানের ওপারে সুরম্য অট্টলিকায় বসবাস করনে। হযরত দাউদ (আঃ) বাগানের মধ্যে হেটে অপর প্রান্তে গিয়ে দেখেন বাগান সংলগ্ন এক হাউজে এক সুন্দর মহিলা গোছল করছে। এ সুন্দরি মহিলার নাম ছিল বতশা আফিয়া।
হযরত দাউদ (আঃ) তাকে বিবাহ করার নিয়ত করলেন। সে মর্মে তিনি একজন পথচারীর নিকট জিজ্ঞাসা করলেন, এ বাগানের যে মহিলা তাঁর কি বিবাহ হয়েছে লোকটি উত্তর দুল হ্যাঁ কিছুদিন হল তাঁর বিবাহ হয়েছে বটে কিন্তু তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সাক্ষাৎ হয়নি। তাঁর স্বামির নাম আউরিয়া সে একজন দক্ষ সৈনিক ছিলেন। সাধারণ ক্রুটির জন্য সে চাকুরী চ্যুত হয়েছে বর্তমানে সে বেকার।