হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ১

বেগম বিলকিস যে সমস্ত রাষ্ট্রদ্রোহী জিনদের জীবন ভিক্ষা নিয়েছলেন তাদের সর্দার এর নাম শমুধন।  সমুধন ছিল বিরাট শক্তিশালী দৈত্য। পৃথিবীর বহু যায়গায় সে গমনাগমন করেছে।  বহু অজ্ঞাত দৃশ্য সে অবলোকন করেছে। বহু যুদ্ধগ্রহে সে অংশ নিয়েছে।  তাঁর যেমন ছিল শারীরিক শক্তি তেমন ছিল বিচক্ষণতা। সে যখন মুসলমান হয়ে গেল তখন তাঁর দ্বারা ইসলামের বড় বড় কল্যান সাধিত হতে লাগল। এটা দেখে বেগম বিলকিস শাহী দরবারে একটি মর্যাদাপূর্ণ পদে তাকে বহাল রাখার হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নিকট আবেদিন জানালেন।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) বেগমের আবদার রক্ষা করে শামুধনুকে এক মর্যাদাপূর্ণ পদে বহাল করলেন।

শামুনধন শাহী দরবারে মর্যাদা পূর্ণ পদ পেয় যেমন খুশি হল তেমন আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনে ব্রতী হল। একদিন হযরত ছোলায়মান (আঃ) শামুনধন কে ডেকে বলল, শামুধন! তুমি পৃথিবীর সর্বত্র ঘুরে বেড়িয়েছ। আচ্ছা বল তোমার চোখে সাবচাইতে অধিক আশ্চার্যজনক কি দেখছ?

শামুনধন বলল, শাহানশাহ, পৃথিবীতে অনেক আজব দৃশ্য আমি অবলোকন করেছি।  তাঁর মধ্যে একটি দৃশ্য আমাকে চিন্তামগ্ন করে রাখছে। সেটা হল পশ্চিশ সাগরের মাঝে একটি দ্বীপ দেখেছি।  দ্বীপের মাঝে একটি বিরাট নগরী রয়েছে। এ নগরীর চারপাশে একশত গজ উঁচু প্রাচীর রয়েছে।  এ প্রাচীরের পাশে কিছুদূর পর পর অসংখ্য সেনা ছাউনি রয়েছে। তাতে স্বশস্ত্র সৈন্যরা সদাসতর্ক পাহারা  রত আছে। একদা আমি অত্যন্ত সর্তকতার সাথে সেখানে যাই ।  

অতপর কয়েকদিন যাবৎ চেষ্টা করে অতি গোপনে প্রাচীর পার হয়ে শহরে ঢুঁকে পড়ি।  মনোরম শহরটি দেখে আমার খুব ভাল লাগল।  আমি ধীরে ধীরে শহরের অভ্যন্তেরে প্রবেশ করি।  শহরের মাঝখানে গিয়ে দেখি অসংখ্য সৈন্য বেষ্টিত এক সুরম্য রাজপূরী।  সেখানেও আমাকে অনেক কৌশল করে রাজপুরীতে ঢোকার সুযোগ করে নিত হল।  রাজপুরীর সৌন্দর্য দেখে আমি অবাক হয়ে যাই এবং কত গুলো আযব বস্তু দেখতে পাই।     

প্রথমে রাজপুরীতে ঢোকার প্রধান ফটকের উপরে রয়েছে দুটি মিনার, দুটি মিনারের উপর মর্ম্মর পাথরের দুটি বাঘের মাঝখানে রয়েছে প্রকাণ্ড একটি মানব মূর্তি।  সেটি সম্পূর্ণ স্থির রয়েছে।  এছাড়া আরও অনেক মূর্তি আশে পাশে তৈরি করে রাখা হয়েছে।  রাজপুরীর অভ্যন্তরে পৌঁছে দেখলাম চক্রাকার বিশাল মহল।  মহলে কয়েক হাজার বিশাল কক্ষ।  প্রতি কক্ষে কয়েক হাজার সুন্দরী মহিলা।  মহলের মাঝখানে রয়েছে এক সৌন্দর্য মণ্ডিত সিংহাসন।  সে সিংহাসনে উপবিষ্টা রয়েছে একজন অপরূপ সুন্দরী মহিলা।  তাঁর পাশে বসা রয়েছে চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল মুখের এক যুবতী।

আমি দীর্ঘ সময় ধরে কিছুক্ষন দর্শন করলাম। পরে বাইরে বেরিয়ে এক পরীর সাথে আলাপ জমিয়ে দিলাম।  দীর্ঘ আলাপের পরে তাঁর সাথে আমার ভাব হয়ে গেল। কয়েকদিন তাঁর সাথে সময় কাটিয়ে পরম আনন্দ লাভ করলাম। তাঁর পরে আমি পরীর নিকট কিছু তথ্য অবগত হতে চাইলাম।   

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ১

বেগম বিলকিস যে সমস্ত রাষ্ট্রদ্রোহী জিনদের জীবন ভিক্ষা নিয়েছলেন তাদের সর্দার এর নাম শমুধন।  সমুধন ছিল বিরাট শক্তিশালী দৈত্য। পৃথিবীর বহু যায়গায় সে গমনাগমন করেছে।  বহু অজ্ঞাত দৃশ্য সে অবলোকন করেছে। বহু যুদ্ধগ্রহে সে অংশ নিয়েছে।  তাঁর যেমন ছিল শারীরিক শক্তি তেমন ছিল বিচক্ষণতা। সে যখন মুসলমান হয়ে গেল তখন তাঁর দ্বারা ইসলামের বড় বড় কল্যান সাধিত হতে লাগল। এটা দেখে বেগম বিলকিস শাহী দরবারে একটি মর্যাদাপূর্ণ পদে তাকে বহাল রাখার হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নিকট আবেদিন জানালেন।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) বেগমের আবদার রক্ষা করে শামুধনুকে এক মর্যাদাপূর্ণ পদে বহাল করলেন।

শামুনধন শাহী দরবারে মর্যাদা পূর্ণ পদ পেয় যেমন খুশি হল তেমন আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনে ব্রতী হল। একদিন হযরত ছোলায়মান (আঃ) শামুনধন কে ডেকে বলল, শামুধন! তুমি পৃথিবীর সর্বত্র ঘুরে বেড়িয়েছ। আচ্ছা বল তোমার চোখে সাবচাইতে অধিক আশ্চার্যজনক কি দেখছ?

শামুনধন বলল, শাহানশাহ, পৃথিবীতে অনেক আজব দৃশ্য আমি অবলোকন করেছি।  তাঁর মধ্যে একটি দৃশ্য আমাকে চিন্তামগ্ন করে রাখছে। সেটা হল পশ্চিশ সাগরের মাঝে একটি দ্বীপ দেখেছি।  দ্বীপের মাঝে একটি বিরাট নগরী রয়েছে। এ নগরীর চারপাশে একশত গজ উঁচু প্রাচীর রয়েছে।  এ প্রাচীরের পাশে কিছুদূর পর পর অসংখ্য সেনা ছাউনি রয়েছে। তাতে স্বশস্ত্র সৈন্যরা সদাসতর্ক পাহারা  রত আছে। একদা আমি অত্যন্ত সর্তকতার সাথে সেখানে যাই ।  

অতপর কয়েকদিন যাবৎ চেষ্টা করে অতি গোপনে প্রাচীর পার হয়ে শহরে ঢুঁকে পড়ি।  মনোরম শহরটি দেখে আমার খুব ভাল লাগল।  আমি ধীরে ধীরে শহরের অভ্যন্তেরে প্রবেশ করি।  শহরের মাঝখানে গিয়ে দেখি অসংখ্য সৈন্য বেষ্টিত এক সুরম্য রাজপূরী।  সেখানেও আমাকে অনেক কৌশল করে রাজপুরীতে ঢোকার সুযোগ করে নিত হল।  রাজপুরীর সৌন্দর্য দেখে আমি অবাক হয়ে যাই এবং কত গুলো আযব বস্তু দেখতে পাই।     

প্রথমে রাজপুরীতে ঢোকার প্রধান ফটকের উপরে রয়েছে দুটি মিনার, দুটি মিনারের উপর মর্ম্মর পাথরের দুটি বাঘের মাঝখানে রয়েছে প্রকাণ্ড একটি মানব মূর্তি।  সেটি সম্পূর্ণ স্থির রয়েছে।  এছাড়া আরও অনেক মূর্তি আশে পাশে তৈরি করে রাখা হয়েছে।  রাজপুরীর অভ্যন্তরে পৌঁছে দেখলাম চক্রাকার বিশাল মহল।  মহলে কয়েক হাজার বিশাল কক্ষ।  প্রতি কক্ষে কয়েক হাজার সুন্দরী মহিলা।  মহলের মাঝখানে রয়েছে এক সৌন্দর্য মণ্ডিত সিংহাসন।  সে সিংহাসনে উপবিষ্টা রয়েছে একজন অপরূপ সুন্দরী মহিলা।  তাঁর পাশে বসা রয়েছে চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল মুখের এক যুবতী।

আমি দীর্ঘ সময় ধরে কিছুক্ষন দর্শন করলাম। পরে বাইরে বেরিয়ে এক পরীর সাথে আলাপ জমিয়ে দিলাম।  দীর্ঘ আলাপের পরে তাঁর সাথে আমার ভাব হয়ে গেল। কয়েকদিন তাঁর সাথে সময় কাটিয়ে পরম আনন্দ লাভ করলাম। তাঁর পরে আমি পরীর নিকট কিছু তথ্য অবগত হতে চাইলাম।   

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author

You May Also Like

মুগীরা ইবন শু’বা (রা)

নাম আবু আবদিল্লাহ মুগীরা, পিতা শু’বা ইবন আবী আমের। আবু আবদিল্লাহ ছাড়াও আবু মুহাম্মাদ ও…

সাপের তওবা

একটি সাপের ঘটনা বর্ণনা করছি। আমার কাছে যারা তালীম গ্রহন করতে আসে প্রথমেই আমি কাউকে…

আবদুল্লাহ ইবন হুজাফাহ আস-সাহমী-(রা)

আবু হুজাফাহ আবদুল্লাহ নাম। পিতার নাম হুজাফাহ। কুরাইশ গোত্রের বনী সাহম শাখার সন্তান। ইসলামী দাওয়াতের…