হযরত খিজির (আঃ) বংশ পরিচয় –পর্ব ১
হযরত খিজির (আঃ) এর নাম ‘খিজির’ নহে। এটা তাঁর উপাধি। তাঁর নাম সম্পর্কে ওলামাদের একাধিক অভিমত ব্যক্ত হয়েছে। যেমন বালইয়া বিন মালকান, ইলইয়া বিন মালকান, খজরুন, মোয়াম্মারু প্রভৃতি। অধিকাংশের মতানুসারে তাঁর নাম বালইয়া বিন মালকান। আবুল আব্বাস তাঁর পিতৃপদবী যুক্ত নাম। তিনি মাহী খান্দানের সন্তান। কিন্তু পরবর্তীকালে সংসারের মায়া মমতা ত্যাগ করে দরবেশী পথ অনুস্মরণ করেন। যদিও বাহ্যিকভাবে যুলকারনাইনের উজির ছিলেন কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তিনি ছিলেন একজন সংসার ত্যাগী দরবেশ।
খিজির শব্দের অর্থ সবুজ সতেজ তরুলতা। একদিন তিনি ঘাস বিহীন এক ধুসর মাঠে বসার সাথে সাথে উক্ত মাঠ সবুজ তরুলতা দ্বারা সতেজ হয়ে উঠছিল বলে তাঁকে খিজির বলা হত। হযরত মুজাহিত (রহঃ) বলেন যে, যখন তিনি নামায পড়তেন তখন তাঁর আশ পাশের জায়গা সবুজ সতেজ হয়ে উঠত বলে তাঁকে খিজির বলা হত।
অধিকাংশ আলেমদের মতে হযরত খিজির (আঃ) হযরত নূহ (আঃ)-এর উত্তর পুরুষ। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন যে, তিনি হযরত আদম (আঃ)-এর ঔরষজাত সন্তান। আল্লাহ্ পাক তাঁর যে সমস্ত যে সব কাজ কর্মের কথা উল্লেখ করেছেন তা অনেকটা ভাগ্য সম্পর্কে কাজ করার দায়িত্বে নিযুক্ত দায়িত্বের অনুরূপ। আল্লাহ্ পাক হযরত মূসা (আঃ) কে দেখিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ্ পাকের এমনও অনেক বান্দা রয়েছেন যারা তাঁর হুকুমগুলো ফেরেস্তার ন্যায় পালন করে থাকে। তারা যে সকল কার্য সম্পাদন করেছেন তাঁর পিছনে কি রহস্য নিহিত রয়েছে তা কারও বুঝার ক্ষমতা নেই।
হযরত খিজির (আঃ) আদম সন্তান হওয়া সত্বেও তাঁর মধ্যে ফিরিস্তাদের বৈশিষ্টগুলো প্রধান্য লাভ করা কোন অসম্ভব ব্যাপার নয়। এমন এমন কার্য হযরত খিজির (আঃ)-এর দায়িত্বে অর্পণ করা হয়েছে যা ফিরিস্তাদের দায়িত্বে অর্পণ করা হয়ে থাকে। অধিকন্তু ফিরিস্তাদের বৈশিষ্ট্যের দ্বারা গুণান্বিত হওয়ার কারণেই বোধ হয় তিনি সর্ব সাধারণের দৃষ্টির বাইরে থাকতেন। হযরত খিজির (আঃ) এর নবুয়ত সম্পর্কে ওলামাগণ একমত হতে পারেন নি। কেউ কেউ বলেন যে, তিনি নবী ছিলেন না। আবার কারো কারো মতে তিনি নবী ছিলেন। আবার কারো কারো মতে তিনি নবী ছিলেন।