হযরত দাউদ (আঃ) এর কুদরতি শিকল-১ম পর্ব

হযরত দাউদ (আঃ)-এর জামানায় আল্লাহ্‌ পাক ফেরেশতাগণ দ্বারা একটি বেহেশতী শিকল হযরত দাউদ (আঃ) এর মসজিদের সম্মুখে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। ঐ শিকলের রং সূর্যের মত উজ্জ্বল ছিল। আর ওটার ভিতরে কতকগুলো অলৌকিক গুণ ছিল। কোন কারনবশতঃ দুনিয়াতে বালা মুসিবত নাযিল হওয়ার পূর্বক্ষণে ঐ শিকলে একটি অপূর্ব আওয়াজ হত। তা শুনে হযরত দাউদ (আঃ) বুঝতে পারতেন যে, এটা কোন বালা মুসিবতের পূর্ব লক্ষন। তা ছাড়া কোন কঠিন রোগাক্রান্ত ব্যক্তি আল্লাহ্‌র নাম নিয়ে ঐ শিকল স্পর্শ করা মাত্র তাঁর রোগ আরোগ্য হয়ে যেত।

কথিত আছে যে, হযরত দাউদ (আঃ)-এর ইন্তেকালের পরও বহুদিন উক্ত শিকলটি ঐ অবস্থায় ছিল। বনি ইসরাঈলগণ কোন জটিল বিচার মীমাংসা করতে অক্ষম হলে ঐ শিকলের মাধ্যমে মীমাংসা করত। এটার নিয়ম ছিল নিম্নরূপঃ

প্রথমে বাদীকে বলা হত উক্ত শিকল স্পর্শ করতে। বাদী সত্যবাদী হলে শিকল স্পর্শ করতে পারত। আর বাদী সত্যবাদী না হলে তা স্পর্শ করতে পারত না। এর পর বিবাদী কে তা স্পর্শ করতে বলা হত। যদি বিবাদী নির্দোষ প্রকাশ করার ব্যাপারে সত্যবাদী হত, তবে সে ঐ শিকল স্পর্শ করতে সক্ষম হত, আর বিবাদী মিথ্যাবাদী হলে সে ঐ শিকল স্পর্শ করতে সক্ষম হত না।

এভাবে উক্ত কুদরতী শিকলের মাধ্যমে অত্যন্ত ন্যায় বিচার পাওয়া যেত। দীর্ঘদিন পরে একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত শিকল আল্লাহ্‌ পাক আসমানে উঠিয়ে নিলেন।

ঘটনাটি হল একটি লোক এক সময় তাঁর মূল্যবান মনি-মানিক্য, হীরা-জহরত প্রভৃতি অন্য একটি লোকের নিকট আমানাত রাখল। কিছুদিন পর যখন আমানাতকারী ঐ লোকটির নিকট তাঁর গচ্ছিত মূল্যবান জিনিসগুলো ফেরত চাইল। লোকটি কছম করে বলল যে, ইতিপূর্বে মালগুলো সে ফেরত দিয়েছে। অথচ পুনরায় সেগুলো তাঁর নিকট ফেরত চাচ্ছেন কোন উদ্দেশ্য?

আমানাতকারী বলল, আপনি এরূপ মিথ্যা কথা বলতেছেন কেন? আমি তো আপনার নিকট হতে কখনও সে জিনিসগুলো ফেরত নেইনি। দু’জনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে খুবই কলহ শুরু হল। যার মাল সে বলল, আচ্ছা আপনি যদি আমার মালগুলো ফিরিয়ে দিয়ে থাকেন তাহলে চল আমরা আল্লাহ্‌র ঝুলন্ত শিকলটির কাছে গিয়ে মীমাংসা করি।

আমানাত গ্রহিতা রাজী হল না। সে বলল, আমি জীবনে কখনও মিথ্যা কথা বলিনি, বলতেও চাহি না। তাই প্রমাণ করতে কোন কিছুর আশ্রয় লওয়ার প্রয়োজন নেই। আমার কথাই যথেষ্ট। লোকটি এরূপ শক্ত হয়ে পড়লে আমানাতদাতা বাধ্য হয়ে বিষয়টি গন্যমান্য লোকদের নিকট পেশ করলেন। তারা আমানাত গ্রহীতাকে উক্ত শিকলের নিকট যেতে কড়া নির্দেশ দিলেন। তখন অনুন্যপায় হয়ে সে উক্ত শিকলের নিকট যেতে বাধ্য হল।

হযরত দাউদ (আঃ) এর কুদরতি শিকল-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।