হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতি (রঃ) – পর্ব ১২
হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতি (রঃ) – পর্ব ১১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
খাজা সাহেবের কতিপয় বিশেষ উপদেশবলীঃ বিভিন্ন সময়ে সূফী সাধক হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রঃ) নিজ শিষ্যবর্গকে যে সব মূল্যবান নসীহত প্রদান করেছেন তার তুলনা হয় না। নিম্নে তার কতিপয় নসীহত দেওয়া হল।
১. এলেম গভীর সাগর সাদৃশ্য মারেফাত উহার তরঙ্গ।
২. দান করলেই খোদায়ী নেয়ামত লাভ করা সম্ভব।
৩. আরেফের নিদর্শন এই যে, বান্দা আল্লাহ্ তায়ালার ইবাদত করবে এবং সাথে সাথে তার এ ভয়ও থাকবে যেন তার নৈকট্য হতে সে বঞ্চিত না হয়।
৪. মুহাব্বতের নিদর্শন এই যে, বান্দা আল্লাহ্ তায়ালার ইবাদত করবে এবং সাথে সাথে তার এ ভয়ও থাকবে যেন তার নৈকট্য হতে সে বঞ্চিত না হয়।
৫. পিতামাতার দিকে ভক্তিপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকানও এবাদত।
৬. হতভাগা সেই লোক, যে গুনাহর কাজে লিপ্ত থেকেও মনে করে প্রভু আমাকে কবুল করে লইবেন।
৭. পরিশ্রম ব্যথিত কোন কিছুই লাভ করা সম্ভব নয়।
৮. চার শ্রেণীর লোক খুবই ভালঃ ১ম যে দরবেশ সর্বদা নিজেকে ধনী মনে করে। অর্থাৎ সম্বলহীন হওয়া সত্ত্বেও যে নিজের দারিদ্র্য কখনও প্রকাশ করে না। ২য়ঃ যে ক্ষুধার্ত নিজেকে তৃপ্ত ভাবে, ৩য়ঃ যে চিন্তাক্লিষ্ট বিপন্ন সর্বদা হাসিমুখে থাকে, ৪র্থ যে লোক শত্রুর সহিত বন্ধু সুলভ আচরণ করে।
৯. সর্ব প্রথম যে বিষয়টি মানুষের উপর ফরয করা হয়েছে, তা হল আল্লাহ্র মারেফত।
১০. তাওবার স্তর কয়েকটি-জাহেলের সংসর্গ পরিত্যাপ করা, ভ্রান্তদের থেকে দূরে থাকা, অবিশ্বাসীদের সান্নিধ্য পরিহার করা, খোদার প্রিয় বান্দাদের সোহবত অবলম্বন করা ও নেক কাজে মনোনিবেশ করা।
১১. নেক করার চাইতে নেকবানের সোহবত যত উত্তম। পাপ করার চাইতে পাপীর সোহবত তত খারাপ।
১২. কোরআন শরীফ, কাবাগৃহ পিতামাতা, বোযর্গ আলেম ও ওস্তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করা এবাদতের শামিল।
১৩. আরেফ যখন নীরব থাকেন, মনে করবে তিনি প্রভুর সাথে কথা বলতেছেন।
১৪. ঐ ব্যক্তি প্রকৃত দরবেশ যার কাছে এসে কোন লোক মাহরূম হয় না।
১৫. ভালবাসার প্রকৃত দাবিদার ঐ সকল লোক, যারা সর্বদা বন্ধুর কথা শুনতে ভালবাসে।
১৬. সত্যিকার বন্ধু ঐ ব্যক্তি, যে বন্ধুর দেওয়া বিপদকে হৃষ্টচিত্তে গ্রহণ করে।
১৭. একজন মুসলিম ভাইকে বে ইজ্জতি বা অপদস্থ করলে যত ক্ষতি হয় সারাজীবন গুনার কাজে লিপ্ত থাকলেও তত ক্ষতি হয় না।
১৮. যে সকল কথা বা কাজ আল্লাহ্ পাক অপছন্দ করেন, বান্দাও যদি সেই সকল কাজও কথা ঘৃণা করতে শিখে, তবেই খোদার দোস্তী সে অনায়াসে লাভ করতে পারে।
১৯. ক্ষুধার্তকে অন্নদান, অভাবগ্রস্তের অভাবপূরণ ও শত্রুর সাথে সদাচরণ, চরিত্রের বিশেষ গুণ।
২০. ঐ ব্যক্তিই প্রকৃত প্রেমিক যার ইহলোক ও পরলোকের সকল আশা ত্যাগ করে একমাত্র মহান মাহবুব আল্লাহ্ তায়ালার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে।
২১. কোন লোক ততক্ষণ আরেফ হতে পারে না যাবৎ সে নিজ অস্তিত্ব একেবারে ভুলে না যায়।
২২. প্রেমের পথে যে অটল থাকে, প্রেমাগ্নি তার অস্তিত্বকে বিলোপ করে দেয়।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতি (রঃ) – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন