হযরত ওয়ায়েস কারনী (রঃ)-পর্ব ৯
হযরত ওয়ায়েস কারনী (রঃ)-পর্ব ৮ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
খবর শুনে হযরত ওয়ায়েস (রঃ) বললেন, তোমরা আমাকে তার কাছে নিয়ে চল। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল। সত্যিই, দীর্ঘদিন কেঁদে কেঁদে বেচারা কঙ্কালসার। আহার, নিদ্রা, বিশ্রাম-সব ছিকেয় উঠেছে। হযরত তাকে বললেন, হে ভ্রান্ত! কবর ও কাফনের কাপড় তোমাকে আল্লাহর নিকট থেকে অনেক দূর নিয়ে গেছে। তোমাকে বিপথগামী করেছে। তাড়াতাড়ি উঠে পড় আর আল্লাহর পথ ধর।
হযরতের কথায় লোকটির হুঁশ হল। তওবা করে সে নামায-রোযা শুরু করে দিল।
শোনা যায়, একবার তিনি পর পর তিনদিন ধরে উপবাস রইলেন। চতুর্থ দিনে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন। হঠাৎ তাঁর চোখ পড়ল রাস্তার ওপর পড়ে থাকা একটি দীনারের ওপর। তাঁর মনে হল, হয়তো এটি অন্য লোকের। পড়ে গেছে পথের ওপর। কাজেই দীনারটি তুলে নিলেন না।
এগিয়ে গেলেন সামনের দিকে। প্রচন্ড ক্ষুধার তাড়না। স্থির করলেন, কচি ঘাস চিবিয়ে ক্ষুধার জ্বালা মেটাবেন। ঠিক এ সময় কে যেন একখানি গরম রুটি তাঁর সামনে রেখে দিল। কিন্তু রুটির মালিক অন্য কেউ হবে ভেবে, তাও তিনি এড়িয়ে গেলেন। তখন একটি ছাগল বলল, এ রুটি আপনারই। দেখুন, আপনি যাঁর দাস, আমিও তাঁর দাস। ওয়ায়েস এ ইঙ্গিত বুঝতে পারলেন। আর রুটিখানা তুলি নিলেন। ওদিকে চোখের পলকে ছাগলটি মিলিয়ে গেল।
এমন পবিত্রত্না সচরাচর বিরল। হযরত ওয়ায়েস কারনী (রঃ) প্রকৃতই আল্লাহর এক মহান সৃষ্টি। মানুষ কত উন্নত হতে পারে, তিনি তার একটি উজ্জ্বলতম উদাহরণ। দীর্ঘ জীবন শেষে তিনি জান্নাতবাসী হন। কেউ কেউ বলেন, সিফফীনের যুদ্ধে হযরত আলী (রঃ) এর পক্ষে যোগদান করে শাহাদাত বরণ করেন।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া