হযরত ওমর (রাঃ) এর কষ্ট সহ্য করা – শেষ পর্ব
এমন সময় ইয়ামানী চাদর গায়ে ডোরাদার কোর্তা পরিহিত একজন কোরাইশী বয়স্ক লোক তাহাদের নিকট আসিয়া দাঁড়াইল এবং জিজ্ঞাসা করিল তোমাদের কি হইয়াছে? তাহারা বলিল, ওমর বেদ্বীন হইয়া গিয়াছে। বয়স্ক লোকটি বলিল, ছাড় তাহাকে একজন সে নিজেকে জন্য একটা বিষয় পছন্দ করিয়াছে তাহাতে তোমাদের করিবার কি আছে? তোমরা কি মনে করিয়াছে, বনু আদির লোকেরা তাহাদের লোককে তোমাদের হাতে এমনিই ছাড়িয়া দিবে? ছাড়িয়া দাও লোকটিকে।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, বয়স্ক লোকটির কথায় তাহারা হযরত ওমর (রাঃ)কে ছাড়িয়া এমনভাবে সরিয়া গেল যেন একটি চাদর তাহার উপর হইতে সরাইয়া দেওয়া হইল।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, আমার পিতা হিজরত করিয়া মদীনা পৌঁছিবার পর একদিন আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, আব্বাজান, আপনার ইসলাম গ্রহণের পর মক্কায় যখন লোকেরা আপনার সহিত লড়াই করিতেছিল তখন যে ব্যক্তি তাহাদিগকে ধমকাইয়া সরাইয়া দিয়াছিল সে লোকটি কে ছিল? তিনি বলিলেন, বেটা, সে ছিল আস ইবনে ওয়ায়েল সাহমী (বিদায়াহ)
অপর এক রেওয়াতে আছে, হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, হযরত ওমর (রাঃ) ঘরের ভিতর ভীত সন্ত্রস্থ অবস্থায় বসিয়াছিলেন। এমন সময় আমরের পিতা আস ইবনে ওয়ায়েল সাহমী তাহার নিকট আসিল। তাহার পরনে একটি কোর্তা ছিল যাহার ধারগুলি রেশম দ্বারা সেলাই করা ছিল এবং গায়ে ইয়ামানী চাদর ছিল। আস ইবনে ওয়ায়েলের গোত্র হইল বনু সাহম। আর এই গোত্র জাহিলিয়াতের যুগে আমাদের মিত্র ছিল। সে হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, আমি ইসলাম গ্রহণ করিয়াছি বলিয়া তোমার কওমের লোকেরা বলিতেছে, আমাকে কতল করিবে।
আস ইবনে ওয়ায়েল বলিল, (আমি তোমাকে নিরাপত্তা দিয়াছি) তোমার সহিত কেহ কোন দুর্ব্যবহার করিতে পারিবে না। আসের এই কথার পর হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, আমি নিশ্চিন্ত হইলাম। আস ইবনে ওয়ায়েল সেখান হইতে বাহির হইয়া দেখিল মাঠভরা লোকের ঢল নামিয়াছে। আস ইবনে ওয়ায়েল জিজ্ঞাসা করিল তোমরা কোথায় যাইতেছ? লোকেরা বলিল, আমরা এই খাত্তাবের বেটা ওমর কে ধরিতে যাইতেছি, যে কিনা বেদ্বীন হইয়া গিয়াছে। আস ইবনে ওয়ায়েল বলিল, তাহাকে কেহ কিছু বলিতে পারিবে না। ইহা শুনিয়া লোকজন ফিরিয়া গেল। (বুখারী)
সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা
হযরত ওমর (রাঃ) এর কষ্ট সহ্য করা – প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন