হযরত ঈসা (আঃ) এর আসমানে গমন-পর্ব ৪
হযরত ঈসা (আঃ) এর আসমানে গমন-পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কোন পার্থিব কাজে মনোনিবেশ করা যাবে না। যে এ হুকুম অমান্য করবে তাদের প্রতি আল্লাহ অসুন্তুষ্ট হবেন। তাদের উপর বিপদ ও আজাব আসার অধিক সম্ভবনা রয়েছে। অতএব আমি বনি ইস্রাইল সম্প্রদায়ের সকলকে এ দাওয়াত কবুল করার জন্য বিশেষ অনুরোধ করছি।
তিনি আরো বললেন, হে ইস্রাইল সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা! আমি তোমাদেরকে আরো একটি সুখবর দিতে চাই। তোমরা জেনে রাখ, আল্লাহ তায়ালা আমার প্রতি যে কিতাব প্রেরণ করেছেন তার হুকুম আহকাম আমি তোমাদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাব। আমার পরে তোমাদের নিকট আর একজন শ্রেষ্ঠ নবী আসবেন। তাঁর নিকট প্রেরিত কিতাবের নাম হবে কোরআন বা ফোরকান। তিনি পৃথিবীর সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। তাঁর নাম হবে আহমদ। তোমরা যারা তাঁর সাক্ষাত লাভ করে তাঁর দ্বীনকে কবুল করবে তারা হবে দুনিয়া ও আখিরাতের উভয় ক্ষেত্রে সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানী ব্যক্তি।
আর যারা তাঁর নিকট প্রেরিত কোরআন পাঠ করবে তারা লাভ করবে অশেষ ছওয়াব ও মর্যাদা। এ প্রসঙ্গে হযরত ঈসা (আঃ) আরো বর্ণনা করলেন, হে কওম! তোমরা জেনে রাখ, শেষ নবীর প্রতি নাজিলকৃত কিতাব যা কোরআন নামে প্রসিদ্ধ লাভ করবে। অথচ ইতোপূর্বে কোন নবীর প্রতি নাযিলকৃত কিতাব সম্পূর্ণভাবে কোন মানুষ মুখস্ত রাখে নি। শেষ নবীর এ শরীয়ত পৃথিবীতে কিয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তীত ভাবে কায়েম থাকবে। তোমরা সে নবীর প্রতি দুরুদ ও সালাম পাঠ করবে। আল্লাহ তায়ালা সে নবীকে দোস্ত বলে সম্বোধন করেছেন।
তাকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ তায়ালা জমিন ও আসমান কিছুই সৃষ্টি করতেন না বলে নিজে ঘোষণা দিয়েছেন। অতএব তাঁর মান-মর্যাদা সম্বন্ধে তোমরা অনুমান করে নেও। আমি একজন নবী হওয়া সত্ত্বেও সে আখেরী নবীর একজন সাধারণ উম্মতের অন্তর্ভূক্ত হতে আগ্রহী। যদি আল্লাহ আমার প্রার্থনা মঞ্জুর করেন তবে আমি নিজেকে ধন্য মনে করবো।
ধর্মদ্রোহী বনি ইস্রাইলেরা হযরত ঈসা (আঃ) এর বক্তব্য শুনে বলল, ইহা হযরত মুছার শরীয়তকে ভেঙ্গে নিজে এক নতুন শরীয়ত প্রবর্তনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছে। অতএব দেশের বাদশাহর নিকট তাঁর এ ষড়যন্ত্রের কথা খুলে বলা উচিত। এ ছাড়া নতুন আর এক শ্রেষ্ঠ নবীর আগমনের কথা বলে আমাদিগকে তাঁর দিকে আকৃষ্ঠ করার চেষ্টা করছে। আমরা এ দুরভিসন্ধির জাল ভেদ করে তাঁর গোপন উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অবগত হতে সক্ষম হয়েছি। এমতাবস্থায় আমাদেরকে আর বিলম্ব করা উচিত নয়। অতি সত্তর তাঁকে সমুচিত শাস্তি প্রদান করা উচিত। তখনকার সময় বাইতুল মোকাদ্দাসসহ জেরুজালেম রাজ্যের বাদশাহ ছিল একজন কাফের। সে ইসলামের ঘোর শত্রু ছিল। বনি ইস্রাইলদের মধ্যে যখন এরূপ এক দ্বন্ধমূখর অবস্থার সৃষ্টি হল তখন সে ইসলামকে চিরতরে মুছে দেবার উদ্দেশ্যে একজন ধর্মদ্রোহীদের এক গোপন মিটীং বসাল। বাদশাহ সবাইকে বলল, হ্যাঁ তোমাদের পূর্ব পুরুষদের ধর্মকে এভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত রয়েছে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করা তোমাদের একান্ত কর্তব্য।