হযরত ঈসা (আঃ) এর আসমানে গমন-পর্ব ২
হযরত ঈসা (আঃ) এর আসমানে গমন-পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এক এক করে তিনি তিনটি ডাক দিলেন। তৃতীয় ডাকে তাঁর মা সাড়া দিয়ে বললেন, আসসালামু আলাইকুম, হে প্রিয় সন্তান তুমি আমাকে দেন ডাকছ? হযরত ঈসা (আঃ) বললেন, মা! আপনি আমাকে এ ভাবে মাঠে একা ফেলে চলে যাবেন তা আমি কখনও ভাবতে পারি নি। যদি আমি একথা বুঝতে পারতাম তাহলে গাছের শিকড় আনার জন্য বাইরে যেতাম না।
আমার বুকে কত আশা ছিল আমি নবুয়তী লাভ করেছি। সিরিয়া গিয়ে মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিব সেখানে ইসলামী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করব। দলে দলে মানুষ এসে দ্বীনের দাওয়াত কবুল করবে। আপনি সে দৃশ্য দেখে আনন্দ পাবেন। এ ধরনের অনেক স্বপ্ন ছিল আমার অন্তরে। কিন্তু সব কিছু বিনাশা হয়ে গেল। আমার আর সিরিয়ার পথে অগ্রসর হতে পা এগুচ্ছে না।
সন্তানের আবেগের কথা শুনে হযরত মরিয়ম কবর থেকে বললেন, হে প্রিয় সন্তান! তুমি একজন আল্লাহর নবী। তুমি ভালভাবে জান যখন যার আয়ুকাল শেষ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে তার নিকট চলে যেতে হবে। তাই আমি সে রকম এক দাওয়াতে আল্লাহর দরবারে চলে এসেছি। তুমি আমার জন্য আর পরিতাপ কর না। তুমি আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যাও। তোমাকে আল্লাহ তায়ালা উচ্চ মর্যাদা দান করবেন।
হযরত ঈসা (আঃ) তাঁর মাতার কথা শুনে বললেন, মা! আমি আপনার কবরের নিকট দাঁড়িয়ে তিনটি ডাক দিয়েছি। প্রথম দু’ডাকে আপনি কোন সাড়া দেন নি কেন? বর্তমানে আপনি কেমন আছেন? হযরত মরিয়ম কবর থেকে জবাব দিলেন, প্রিয় সন্তান! আমি ইন্তেকালের সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর হুকুমে জান্নাতুল ফেরদাউসে চলে গিয়েছিলাম। তাই তোমার প্রথম ডাকে আমি সেখান থেকে প্রথম আসমানে চলে আসি এবং দ্বিতীয় ডাকে একবারে এসে পৌঁছি। তাই তোমার তৃতীয় ডাকে জবাব দিতে পেরেছি। তুমি আমার জন্য কোন চিন্তা কর না। আল্লাহ তায়ালা আমাকে জান্নাতুল ফেরদাঊসের অতি উঁচু মর্যাদাসম্পন্ন স্থানে থাকার অনুমতি দিয়েছেন। আমি এখানে মানমর্যাদা সহকারে অতি আরামে আছি। আমি তোমার জন্য সর্বদা দোয়া করব। তুমি মাঝে মাঝে আমার কবর জিয়ারত করবে।