হযরত ইয়াহইয়া মাআয (রঃ) – পর্ব ৬
হযরত ইয়াহইয়া মাআয (রঃ) – পর্ব ৫ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আপনার রহমতের ভাণ্ডার অফুরন্ত। অথচ একটি কণারও পুন্য নিয়ে আমার কাছ আসে, প্রতিদানে আমি তাঁকে তাঁর চেয়েও উত্তম বস্তু পৃথিবিতে আর কি আছ? পরকালে তাঁর চেয়ে উত্তম বস্তু আপনার দীদার ছাড়া আর কি দান করবেন? প্রভু আমার, সত্তা যেমন তুলনাবিহীন, আপনার কাজও তাই। প্রভু, যে যাকে ভালোবাসে সে সর্বদা তাঁর সব রকমের আরাম কামনা করে। তবে আপনি যাকে ভালবাসেন, কী করে তাঁর ওপরে বিপদ বোঝা চাপিয়ে দেবেন?
দয়াময়! পৃথিবীতে আপনি আমাকে যা দিতে চান তা কাফেরদের দিয়ে দিন। আর পরকালে যা দিতে চান তা বিশ্ববাসীদের দিন। আমাকে শুধু দুনিয়াতে আপনার ধ্যানের তওফীকও পরকালে আপনার দীদার দান করুন। আমি পাপী বলে আপনার দরবারে প্রার্থনা কর থেকে বিরত থাকব কেন? পাপের কারণে আপনি তো আমাকে দয়া প্রদর্শনে বিরত নন। হে মাবুদ! আপনার ক্ষমাজনিত ও আমা দুর্বলতাজনিত কারণে পাপ ওঁ অপরাধে ঘটে। আমার দুর্বলতাঁর প্রতি লক্ষ্য করে বা আপনার ক্ষমা গুনের দিক থেকে- যেদিন দিয়েই হোক!
মাকে ক্ষমা করুন।
প্রভ! আমি আমার পাপের কারণে আপনাকে ভয় করি। সঙ্গে সঙ্গে আপনার অফুরন্ত রহমতের কারণে আপনার থেকে বঞ্চিত করবেন না।
হে প্রভু! আপনাকে ভয় করবই বা কেন? আপনি যে রাহমানুর রাহীম, গাফফার ও করীম।
আবার ভয় না করবই বা কেন? আপনি যে জব্বার ওঁ কাহহার।
হে মাবুদ! আমি আপনার দরবারে এক গরীব বান্দা আর আপনার ধ্যান আমার কাছে খুবই সহজ-সরল। তাই গরীব হিসাবে আমি সহজ-সরল বস্তুতে খুব ভালোভাবে মন দিয়েছি। কেননা, গরীব ঠিক এমন বস্তুকেই ভালোবাসে।
দয়াময়! আমার প্রতি আপনার মহোত্তম দান হল, আপনার খুশি ও সন্তুষ্টি। আর আমার মুখে আনন্দদায়ক বচন হল আপনার প্রশংসা ও গুণগান। আর জীবনের সর্বাধিক কাঙ্খিত সময় হল আপনার দীদার লাভের সময়।
হযরত ইয়াহইয়া (রঃ) খুবই দানশীল ছিলেন। আর এই দানের কারণে তিনি ঋণ-গ্রস্থ হয়ে পড়েন। একলক্ষ টাকার দেনা তাঁর ওপর চাপে। মহাজনেরা অবিরত তাগাদা দেন। আর তাতে তিনি ভীষণ অস্বস্তি ভোগ করতে থাকেন।
এক শুক্রবারের রাতে তিনি স্বপ্ন দেখেন, রাসূলে কারীম (সঃ) বলছেন, আপনি এত বিষণ্ণ কেন? আপনার বিষণ্ণতা আমাকে ব্যথিত করে। চিন্তার কোন কারণ নেই। আপনি খোরাসানে গিয়ে প্রকাশ্য জনসভায় ভাষণ দিন। আমি এক ব্যক্তিকে নির্দেশ দেব, তিনি আপনার সব দেনা শোধ করে দেবেন।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া