হযরত ইসহাক (আঃ) -এর সন্তানাদি ও ইন্তেকাল

হযরত ইসহাক (আঃ)-এর সাথে রুফকার বিবাহ কার্য সম্পন্ন হল। রুফকার গর্ভে এক সাথে দু’পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করে। একজনের নাম ঈসু অপরজনের নাম ইয়াকুব। ঈসু বড় আর ইয়াকুব ছোট। যখন হযরত ইসহাক (আঃ) এর এ দু’পুত্র জন্মগ্রহন করেন তখন তার বয়স ষাট বছর। হযরত ইসহাক (আঃ) ঈসুকে অত্যন্ত ভালবাসতেন, আর রুফকা অথ্যাৎ মাতা ইয়াকুবকে অত্যন্ত ভালবাসতেন। ঈসু একজন ভাল শিকারী ছিলেন।

শিকার করে বৃদ্ধ পিতা মাতাকে গোশত খাওয়াতেন। ইয়াকুব তাবুতে থাকতেন। একদিন ঈসু খব ক্লান্ত হ্যে পড়েছেন। ইয়াকুবের নিকট এসে বললেন, আমি খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। শিকার করতে গিয়ে কোনও শিকার পায়নি। তোমার খাদ্য হতে আমাকে কিছু খেতে দাও। ইয়াকুব বললেন, ফিলিস্তিনের নিয়ম হল, যে বড় পুত্র সে পিতার উত্তরাধিকারী হয়। এ হিসাবে আপনি পিতার উত্তরাধিকারী হবেন। যদি আপনি আপনার এ অধিকার বর্জন করেন তাহলে আমি আপনাকে খেতে দিতে পারি। ঈসু বললেন, আমি মিরাছ সম্পর্কে কোন চিন্তা করি না। তা আমার প্রয়োজন নেই। তুমিই পিতার উত্তরাধিকারী হয়ে যাও। তখন ইয়াকুব ঈসুকে আহার করালেন।

বৃদ্ধ বয়সে হযরত ইসহাক (আঃ)-এর দৃষ্টি শক্তি খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। একদা হযরত ইসহাক (আঃ) আদরের পুত্র ঈসুকে দোয়া দেয়ার মনস্থ করলেন। তাই তাকে বললেন, হে ঈসু! যাও শিকার করে শিক্রাকৃত বকরী গোস্ত দ্বারা উত্তম আহার তৈরী করে আন। এর মাধ্যমে আমি তোমার জন্য দোয়া করব। আল্লাহ পাক তোমাকে নবুয়তের মর্যাদায় ভূষিত করবেন। ঈসু শিকার করতে গেল। রুফকা হযরত ইসহাক (আঃ)-এর প্রস্তাব শুনতে পেলেন।

তাঁর মনে বড়ই আকাঙ্খা হল যে, যদি ইয়াকুবকে এ বরকত দেয়া যেত তাহলে কতই না উত্তম হত। স্বীয় আকাঙ্খাকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য তিনি পরিকল্পনা করলেন। মাতা সাথে সাথে ইয়াকুবকে ডেকে বললেন, অতি তাড়াতাড়ি বকরীর গোশত দ্বারা উত্তম খাদ্য প্রস্তুত করে পিতার সামনে পেশ কর। আর পিতার কাছে বরকতের জন্য দোয়া চাও।

ইয়াকুব অতি দ্রুত খাদ্য প্রস্তুত করে পিতার সামনে রাখলেন। কিন্তু কে খাদ্য প্রস্তুত করে এনেছে তা পিতাকে অবগত করলেন না। আর হযরত ইসহাক (আঃ) এর কাছে বরকতের জন্য দোয়া চাইলেন। পিতা খাদ্য প্রদানকারীর জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করলেন। অতঃপর ঈসু শিকার করে এসে সমস্ত ঘটনা অবগত হয়ে খুবই দুঃখিত হলেন। আর এ কারণে ইয়াকুবের প্রতি ঈর্ষা পোষণ করতে লাগলেন। রুফকা দেখলেন যে, ব্যাপারটি নিয়ে উভয় ভ্রাতার মধ্যে মন কষাকষির সৃষ্টি হল। তাই রুফকা ইয়াকুবকে পরামর্শ দিলেন, তিনি যেন তার মামা লাবানের নিকল চলে যান। ইয়াকুব মায়ের পরামর্শ মোতাবেক মামার নিকট চলে গেলেন। তথায় কিছু দিন অবস্থান করলেন।

হযরত ইসহাক (আঃ) প্রায় একশত ষাট বছর জীবিত ছিলেন। হযরত ইসমাইল (আঃ)-এর ইন্তেকালের চল্লিশ বছর পর হযরত ইসহাক (আঃ) ইন্তেকাল করেন।

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

হযরত ইসহাক (আঃ) এর পরিচয় পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।