হযরত ইসহাক (আঃ) এর পরিচয়

হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর দ্বিতীয়া স্ত্রি হযরত হাজেরা (আঃ)-এর গর্ভে হযরত ইসমাইল (আঃ) জন্মগ্রহন করলেন। কিন্তু প্রথমা স্ত্রী হযরত সারা (আঃ)-এর বিবাহিত জীবনের এক দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেল কিন্তু তার গর্ভে কোন সন্তান জন্মলাভ করে নি। তিনি নিজেকে বন্ধ্যা মনে করেতেছিলেন।

 এমনই এক নৈরাজ্যজনক অবস্থায় আল্লাহ পাক হযরত সারার গর্ভে আসন্তত সন্তানের সুসংবাদ ফেরেস্তার মাধ্যমে প্রেরণ করলেন। ফেরেস্তাগণ মানুষের আকৃতিতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর কাছে উপস্থিত হলেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) খুব অতিথি পরায়ন ছিলেন। তাই তিনি অতিথিদের জন্য একটি গরুর বাচ্চা যবেহ করে গোস্ত ভুনা করে এনে রাখলেন। কিন্তু অতিথিগণ খাদ্য গ্রহণ করতেছেন না। অতিথিদের এ আচরণ দেখে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ভয় পেয়ে গেলেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) মনে করলেন যেন, হয়ত তারা কোন অশুভ উদ্দেশ্যে এখানে আগমন করেছেন।

ফেরেস্তাগন যখন দেখলেন, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তাদেরকে ভয় পাচ্ছেন, তাঁর মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে তখন তারা নিজেদের পরিচয় খুলে বললেন যে, তারা প্রকৃতপক্ষে মানুষ নয় আল্লাহ পাকের পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেস্তা তারা তাঁর পুত্র সন্তানের সুসংবাদ প্রেরণ করার জন্য আগমন করেছেন। অতিসত্বর হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর আরও একজন পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করবে। তাঁর নাম হবে ইসহাক। হযরত সারা (আঃ) পর্দার আড়ালে থেকে তাদের আলাপ আলোচনা শুনতেছিলেন। তিনি বুঝলেন তারা মানুষ নয় আল্লাহর ফেরেস্তা তাই হাসতে হাসতে তাদের সামনে চলে আসলেন এবং বললেন, আমি বৃদ্ধা। আর আমার স্বামিও বৃদ্ধ। তাই আমাদের সন্তান হবে কিভাবে।

ফেরেস্তাগণ বললেন, আল্লাহ পাকের পক্ষে সবই সম্ভব। তিনি সব কিছুর ক্ষমতা রাখেন। সুতরাং আল্লাহ পাক বৃদ্ধ বয়সে আপনাকে একটি সন্তান দান করবেন এটা আশ্চর্যের কি?

অতঃপর হযরত সারা (আঃ) গর্ভবতী হলেন, হযরত ইসহাক (আঃ) দুনিয়াতে আগমন করলেন। তখন হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর বয়স নিরানব্বই বছর। হযরত ইসমাইল (আ)-এর জন্ম্বের সময় তাঁর বয়স ছিল ছিয়াশি বছর। হযরত ইসহাক (আঃ) হযরত ইসমাইল (আঃ) হতে তের বছরের ছোট।

ইসহাক শব্দের প্রকৃত উচ্চারণ হল ইচহাক এটা ইবরানী ভাষার শব্দ. আরবী ভাষায় এর অনুবাদ হল ইযহাক বাংলা ভাষায় এটা হাসার অর্থে ব্যবহৃত হযরত ইব্রাহীম (আঃ) নিরানব্বই বছর বয়ষ্ক। আর হযরত সারা (আঃ) নব্বই বছর বয়স্কা। এ বৃদ্ধ বয়সে তাঁদের পুত্র সন্তান লাভের সংবাদ পাওয়ার পর হযরত সারা (আঃ) এর হাসি পেয়েছিল এবং তিনি হেসেও ছিলেন। তাই সন্তানের নাম এমন শব্দের দ্বারা রেখেছেন যা হাসার অর্থ বুঝায়। হযরত ইসহাক (আঃ) এর জন্মের অষ্টম দিনে তাঁর খাতনা করানো হয়েছিল।

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

হযরত ইসহাক (আঃ) এর বিবাহ সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।