হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর মুযিযা

গোশতের কিমা আকাশে উড়ে

আল্লাহর নবী হযরত ইব্রাহীম (আঃ) যখন স্বীয় প্রভুর পুনর্জীবিত করার পদ্ধতি স্বচক্ষে দেখার জন্য প্রার্থনা করলেন তখন মহান বিধাতা তাঁকে সম্বোধন করে বললেন হে ইব্রাহীম (আঃ) তবে কি তুমি এর প্রতি বিশ্বস্ত নও? আমার সব ক্ষমতার প্রতি তুমি কি আস্থা স্থাপন করতে পারছ না? হযরত ইব্রাহীম (আঃ)অত্যন্ত মিনতির সাথে বললেন, হে আমার মহান প্রতিপালক! আপনার ক্ষমতার নিদর্শন আমাদের চোখের সামনে বিরাজমান। তবে স্বচক্ষে আপনার ঐশী ক্ষমতাবলে পুনর্জীবন দান করার পদ্ধতি দেখে আত্মাকে প্রশাস্ত করার জন্যে আপনার নিকট এ নিবেদন করছি। আল্লাহ্‌ পাক তাঁর প্রার্থনা কবূল করলেন এবং তাঁকে চারটি পাখি ধরে নিজের কাছে রেখে লালন পালন করতে বললেন। যাতে ঐ পাখীগুলো পরিপূর্ণ ভাবে তাঁর পোষ মেনে নেয় এবং ডাকা মাত্রই যেন তারা সকালে তাঁর নিকট চলে আসে।

অতঃপর তিনি নির্দেশমত চারটি পাখী নির্বাচন করলেন। যার মাঝে ছিল ময়ূর শকুন, কাক ও মোরগ। কোরআন বিশেষজ্ঞদের মতে এ পক্ষীগুলোর মাঝে অতিসুক্ষ ভাবে মানবীয় স্বভাব লুকায়িত রয়েছে বিধায় তিনি ওগুলোকে পোষার জন্যে গ্রহণ করেছেন। ময়ূর অহংকারী ও সৌন্দর্য প্রিয়, শকুনের মাঝে রয়েছে পানাহারের অতি লিপ্সা, আর কাক অতিশয় লোলুপ প্রাণী এবং মোরগ হল কামাতুর পক্ষী বিশেষ। আর এগুনসমুহ মানব জাতির মধ্যে পরিপূর্ণভাবে বিদ্যমান। অতঃপর তিনি এগুলোকে অত্যন্ত আদর সোহাগ দিয়ে প্রতিপালন করলেন। পক্ষীগুলো এমনভাবে তার বশ্যতা মেনে নিল যে, তিনি ওগুলোকে ডাকা মাত্রই তাঁর কাছে ছূটে আসত। তারপর আল্লাহ্‌ তা’য়ালা এক সময় তাঁকে ঐ প্রাণী গুলো জবেহ করে তার কাছে মুন্ডোগুলো রেখে অবশিষ্টাংশ দ্বারা এক সাথে কিমা বানাতে বললেন। সুতরাং তিনি পক্ষীগুলো জবেহ করে মাথা ব্যতীত ওগুলোর হাড্ডি, মাংস, ডানা ও পালকসহ সর্বাঙ্গ কিমাকৃত বস্তু চারভাগে ভাগ করে চারটি পর্বত চূড়ায় রেখে এলেন। তারপর তিনি আল্লাহ্‌ তা’য়ালার নির্দেশ মত ওগুলোর নাম ধরে আহ্বান করলেন, সাথে সাথে পক্ষীগুলোর মাংস, হাড্ডি, পালকসহ সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ উড়ে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর সামনে হাজির হয়ে তার সামনে রক্ষিত মাথার সাথে মিলিত হয়ে পূর্ণাঙ্গ পক্ষীতে রূপ নিল।

অতঃপর ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহ্‌ তা’য়ালার শুকরিয়া আদায় করলেন।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।