হযরত ইউসুফ (আঃ) এর সৌন্দর্য
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন শরীফে হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর জীবন কাহিনী অতি সুন্দর, নিখুত ভাবে সবিস্তার বর্ণনা করার কারণ উল্লেখ করে তাফছীর কারকগণ বলেছেন যে, আরবের ইহুদী ধর্মাবলম্বীগণ মুসলমানদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে সর্বত্র বলে বেড়াত মুসলমানদের কোরআন তাওরাতের চেয়ে অধিক সম্মানী ও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না।
যেহেতু তাওরাত কিতাবে হযরত ইউসুফ (আঃ)- এর ঘটনাবলী কত সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যা পড়া মাত্র মানুষের মন আকৃষ্ট হয় এবং ভক্তিভরে তাঁর সকল আহকাম প্রতিপালনের দুর্বার আকাঙ্ক্ষা প্রাণে জাগে। এ ছাড়া পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দর মানুষ ছিলেন হযরত ইউসুফ (আঃ)। যার রূপ ছিল অপরিসীম। যার চরিত্র ছিল নির্মল। যার দানশীলতা ছিল ভুবন বিখ্যাত। নবী ছিলের তিনি ছিলেন প্রথম শ্রেনীভুক্ত। যার নির্মল চরিত্রের মাঝে সাম্য মৈত্রীর যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বিদ্যমান ছিল, তা তুলনা বিহীন।
হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর রূপের উজ্জ্বলতা ছিল চন্দ্র সাদৃশ্য। আল্লাহ তায়ালা নিজে হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর রূপের প্রশংসা করেছেন সকল ঐশী গ্রন্থে। সকল মানব, দানব, জীন পরী ও ফেরেস্তার চেয়ে অধিক রূপ দান করেছিলেন আল্লাহ তায়ালা হযরত ইউসুফ (আঃ)-কে। বিশেষ করে জোলেখার প্রেম নিবেদন এবং তাঁর ব্যকুল জীবনে মর্মস্পর্শী কাহিনী আরো অধিক আকর্ষণীয় করে তুলেছে তাওরাতের বর্ণনায়। অতএব তৌরাত কিতাবের সকল গ্রন্থের ঊর্ধ্বে।
এ বিষয়ে কোরআনে কিছুই উল্লেখ নেই। ইহুদীদের এ সমস্ত উক্তি মুসলমানদেরকে খুবই ব্যতিত করে তোলে। বিশেষ করে হযরত ওমর (রাঃ) ইহুদীদের মন্তব্যে যথেষ্ট মর্মাহত হন। এ ঘটনার পরক্ষণে আল্লাহ তায়ালা ওহী প্রেরণ করে জানিয়ে দিলেন “ হে নবী! আমি তোমাকে এমন এক কিচ্ছা শুনাব যা ইতোপূর্বের ও পরের বর্ণিত সকল কাহিনীর চেয়ে সুন্দর ও উত্তম। যদিও তুমি এ বিষয়ে অজ্ঞ ছিলে।”
এরপরে আল্লাহ তায়ালা ধারাবাহিকতাভাবে হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর জীবনের খুটিনাটি বিষয়সমূহ থেকে আরম্ভ করে পুংখানুপুংখ রূপে তাঁর জীবনের সকল বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। অন্য নবীর জীবন কাহিনী এভাবে আর বর্ণনা করেন নি। যে বর্ণনার খরস্রোতে ইহুদী সম্প্রদায়ের সকল বিদ্রূপ ও দাম্ভিকতা তৃণের ন্যায় ভেসে যায়।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী