হযরত ইউনুস (আঃ) -এর শহর ত্যাগ – ৪র্থ পর্ব
হযরত ইউনুস (আঃ) -এর শহর ত্যাগ – ৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আল্লাহ তায়ালা হযরত ইউনুস (আঃ)-এর রোনাজারী ও দোয়া সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেছেন, যখন ইউনুস (আঃ) আল্লাহর দরবারে আকুল প্রার্থনা করে মুক্তি চাইল, তখন আল্লাহ তায়ালা তার আবেদনের জবাব দিলেন এবং তাকে বিপদ থেকে মুক্ত করলেন। এভাবেই আল্লাহ তায়ালা খাটি মোমেন বান্দাদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।
হযরত ইউনুস (আঃ)-কে আল্লাহ তায়ালা পুনরায় নিনোয়া এলাকায় যেতে আদেশ দেন। সেখানে গিয়ে নবী দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে মানুষকে হেদায়েতের দাওয়াত দিতে থাকেন। এবার কতক মানুষ নবীর দাওয়াত কবুল করে তার উপর ঈমান আনল এবং তাঁর নিকট থেকে শরীয়তের বিধি বিধান অবগত হয়ে তদানুসারে জীবন-যাপন করতে আরম্ভ করল।
আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে সাত জন নবীকে অতি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম হলেন হযরত নূহ (আঃ)। তিনি উম্মতের নিকট বর্ণনাতীত ভাবে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন। অনেক অপমান ও যাতনা সহ্য করেছেন। বিশেষ করে অনাহারে অর্ধাহারে তাকে অধিক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে।
দ্বিতীয় হলেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ)। তিনি নমরুদের ভীষণ অত্যাচার অসহ্য যাতনা ভোগ করেছেন। বিশেষ করে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপের পূর্বে তাকে হাজত বাস, শারীরিক অত্যাচার ও মানসিক যাতনা করা হয়েছিল। তাঁর জীবনের সর্বাপেক্ষা কঠিন সমস্যা তিনি আল্লাহর উপর নির্ভর করে ধৈর্যের মাধ্যমে সকল কিছুর মোকাবেলা করেন।
তৃতীয় হলেন হযরত ইউনুস (আঃ)। উম্মতের পক্ষ থেকে তাকে অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে জীবনের অধিকাংশ সময়। বিশেষ করে মাছের পেটে চল্লিশ দ্বীন যাবৎ অনাহারে, গরমে ও এক অবস্থায় থাকা যে কত কষ্টকর ছিল তা সাধারণভাবে অনুমান করা অত্যন্ত কঠিন। এ সময় তিনি ধৈর্যের সাথে একাধারে আল্লাহ তায়ালার তাছবীহ পাঠ করে কাটিয়েছেন। এক মুহুর্তের জন্য তিনি তাছবীহ পাঠ থেকে বিরত থাকেন নি। তাঁর এ অসাধারণ ধৈর্যের জন্য আল্লাহ তাকে পুরস্কৃত করেন।
চতুর্থ হলেন হযরত ইউসুফ (আঃ)। তিনি ও জীবনে অশেষ নির্যাতন ভোগ করেছেন। ভাইদের অত্যাচার, গোলামী জীবন-যাপন, বন্দী জীবন সর্বোপরি জোলেখার প্রলোভনের মুখে কঠিন সংযমের পরীক্ষায় তিনি সাফল্যজনকভাবে উত্তীর্ণ হয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন এবং পুরস্কৃত হন।
পঞ্চম হলেন হযরত আইউব (আঃ) আল্লাহ তাঁর সম্মুখ থেকে ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি সব কিছু ধ্বংস করে তাঁর উপর শারীরিক ব্যাধি চাপিয়ে দেন। দীর্ঘ আঠার বছর যাবৎ তিনি ধৈর্য ধারণ করে ব্যাধির কষ্ট সহ্য করেন এবং নিয়মিত এবাদত বন্দেগীতে লিপ্ত থাকেন এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন। ফলে আল্লাহ তায়ালা তাকে পুনরায় সম্মান জনকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং তাঁর হারনো সকল কিছু তাঁকে ফিরিয়ে দেন।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী
হযরত ইউনুস (আঃ) -এর শহর ত্যাগ – ৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন