হযরত আবু মুহাম্মদ জারীর (রঃ) – শেষ পর্ব
তাঁর বাণীসমূহ খুবই মূল্যবান। জগদ্বাসীর জন্য উহা অমূল্য সম্পদ। বাণীসমূহঃ
১. এমন এক যুগ ছিল, যখন মানুষ ধর্ম রক্ষার জন্য কাজ করত। কিন্তু এখন তা নেই। তার পরবর্তী যুগে বিবেক অনুযায়ী কাজ করা হত। এখন তাও নেই। তারও পরবর্তী যুগে লজ্জাবশতঃ কাজ হত। এখন তাও নেই। এখন অবস্থা এমন যে, শুধু ভয় আর দাপটের চোটে মানুষ কাজ করে।
২. হৃদয়ের আসল কাজ হল আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা আর তাঁর সৃষ্টি কৌশল অবলোকন করা।
৩. রিপুর নির্দেশে যে চলে সে রিপুর হাতে বন্দী। আল্লাহ তার জন্য সাফল্য হারাম করে দেন। সে কোন ভালো কথায় শান্তি পায় না। আল্লাহর দরবারে তার কোন ইচ্ছা পূর্ণ হয় না।
৪. আল্লাহর নৈকট্য হল আল্লাহকে দর্শন করা। আর তাঁর লীলা-মাহাত্ম্য উপলব্ধি করা।
৫. বিশ্বাস বৃক্ষের ফল হল বিশুদ্ধতা আর হিংসার পরিণতি হল রিয়া।
৬. কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রকৃত কথা হল, দাসের নিজেকে পুরোপুরি কৃতজ্ঞতা আদায় করতে অক্ষম মনে করা।
৭. সাধারণ লোকের জিহাদ হল রিপুর বঞ্চনার সঙ্গে। আল্লাহভীরু ধর্মনিষ্ঠার জিহাদ হল মন্দ ধারণার সঙ্গে। সংসার বিরোগীদের জিহাদ হল কামনা-বাসনার সঙ্গে। তওবাকারীদের জিহাদ হল পদস্খলনের সঙ্গে। আর সাধারণ দরবেশের জিহাদ হল আমিত্ব ও আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে।
৮. ঈমানের নিরাপত্তা, ধর্মকর্মের সুফল ও দৈহিক সুস্থতা তিনটি বস্তুর ওপর নির্ভর করে। যেমনঃ (১) নিজের কাছে যতটুকু যা আছে তা দিয়ে কাজ করা, (২) যাবতীয় নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা, (৩) পানাহারের ব্যাপার সতর্ক থাকা। কেননা, নিজের সম্বলের ওপর নির্ভরতা ও অন্যের ওপর অনির্ভরতা অন্তরের সংশোধনীস্বরূপ। নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা অন্তর আলোকিত হওয়ার কারণ সদৃশ। আর স্বপ্ন পানাহার কষ্ট সহিষ্ণতার সৃষ্টি করে।
(৯) আল্লাহর জ্যোতির মাধ্যমে যারা জীবিত, তাঁদের কখনও মৃত্যু ঘটে না।
(১০) তত্ত্ব জ্ঞানীরা প্রথম থেকেই আল্লাহর স্মরণে নিয়োজিত। কিন্তু সাধারণ মানুষ কেবল উপায়ান্তর না থাকার ক্ষেত্রে আল্লাহকে ডাকে।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত আবু মুহাম্মদ জারীর (রঃ) – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন